প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম সহজ হয়েছে। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়মে বেশ কিছু আপডেট এনেছে, যা যাত্রীদের জন্য আরও সুবিধাজনক। এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো কিভাবে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে পারবেন, কী কী পদ্ধতি রয়েছে, ডিসকাউন্ট ও রিফান্ড পলিসি এবং টিকেট বুকিং সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ টিপস।
আরও পড়ুন-টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস অনলাইন টিকেট বুকিং করার নিয়ম
২০২৫ সালে ট্রেনের টিকেট সংক্রান্ত নতুন নিয়ম
১. ডিজিটাল টিকেট বাধ্যতামূলক: এখন থেকে ফিজিক্যাল টিকেটের পরিবর্তে মোবাইল বা প্রিন্টেড কপি গ্রহণযোগ্য।
আরও পড়ুন
২. ডিসকাউন্ট সুবিধা:
-
শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০% ডিসকাউন্ট (স্টুডেন্ট আইডি প্রয়োজন)।
-
সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০% ছাড়।
৩. রিফান্ড পলিসি:
-
যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে ক্যানসেল করলে ৮০% টাকা ফেরত।
-
১২ ঘণ্টা আগে ক্যানসেলে ৫০% ফেরত।
ট্রেনের টিকেট কাটার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন
✅ ভেরিফাইড ওয়েবসাইট/অ্যাপ ব্যবহার করুন – স্ক্যাম সাইট এড়িয়ে চলুন।
✅ জরুরি যোগাযোগ নম্বর সংরক্ষণ করুন – রেলওয়ে হেল্পলাইন: ০৯৬০৯-৯৯৯৯৯৯।
✅ টিকেট কনফার্মেশন SMS বা ইমেইল চেক করুন – বুকিং সম্পন্ন হলে কনফার্মেশন আসবে।
✅ যাত্রার দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছান – বায়োমেট্রিক চেকিং থাকতে পারে।
অনলাইনে ট্রেন টিকেট কাটতে যা প্রয়োজন হয়
২০২৫ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকেট বুকিং সিস্টেমে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও শর্ত যুক্ত হয়েছে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
✅ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন সনদ – প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক।
✅ মোবাইল নম্বর – OTP ভেরিফিকেশন ও টিকেট কনফার্মেশনের জন্য প্রয়োজন।
✅ ইমেইল আইডি (ঐচ্ছিক) – ই-টিকেট ও রিসেপ্ট পাঠানোর জন্য।
✅ ছবি (কিছু ক্ষেত্রে) – কিছু প্রিমিয়াম ট্রেনে বায়োমেট্রিক চেকিংয়ের জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
📌 নোট:
শিশুদের (৫ বছরের কম) টিকেট কাটতে জন্ম সনদের প্রয়োজন নেই, তবে বয়স প্রমাণের জন্য রাখতে পারেন।
বিদেশি পর্যটকদের পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে টিকেট বুক করতে হবে।
অনলাইনে ট্রেন টিকেট কাটতে নিচের যেকোনো পেমেন্ট সিস্টেম প্রয়োজন:
-
মোবাইল ফাইন্যান্স: বিকাশ, নগদ, রকেট (চার্জ প্রযোজ্য)।
-
ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড: ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস।
-
ইন্টারনেট ব্যাংকিং: সকল ব্যাংকের অনলাইন পেমেন্ট অপশন।
-
প্রিপেইড কার্ড: কিছু ট্রাভেল এজেন্সি থেকে প্রিপেইড ভাউচার কিনে টিকেট বুক করা যায়।
⚠️ সতর্কতা:
শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (railway.gov.bd) বা ট্রাস্টেড অ্যাপ (IRIS, RailSheba) ব্যবহার করুন। স্ক্যাম সাইটে কার্ড তথ্য দেবেন না।
ইন্টারনেট ও ডিভাইস
-
স্মার্টফোন/কম্পিউটার – ওয়েবসাইট বা অ্যাপ এক্সেসের জন্য।
-
স্টেবল ইন্টারনেট – টিকেট বুকিংয়ের সময় কানেকশন বিচ্ছিন্ন হলে সমস্যা হতে পারে।
-
প্রিন্টার/স্মার্টফোন স্টোরেজ – ই-টিকেট ডাউনলোড বা স্ক্রিনশট রাখার জন্য।
বিশেষ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
-
শিক্ষার্থী ডিসকাউন্ট (৫০%) → ভ্যালিড স্টুডেন্ট আইডি/ইনস্টিটিউটের লেটার।
-
সিনিয়র সিটিজেন (২০% ছাড়) → সিনিয়র সিটিজেন কার্ড বা NID (বয়স ৬৫+)।
-
প্রেগন্যান্ট মহিলা/অসুস্থ যাত্রী → মেডিকেল সার্টিফিকেট (লোয়ার বার্থ সিটের জন্য)।
টিকেট কনফার্মেশন ও ভ্রমণের দিন যা লাগবে
-
ই-টিকেট (প্রিন্টেড কপি বা মোবাইল স্ক্রিন) – কনডাক্টর চেক করবেন।
-
ফটো আইডি (NID/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স) – আইডি ভেরিফিকেশনের জন্য।
-
পেমেন্ট রিসেপ্ট (ঐচ্ছিক) – সমস্যা হলে সাহায্য নেওয়ার জন্য।
অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম
বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ের জন্য দুটি প্রধান মাধ্যম রয়েছে: ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপ। ওয়েবসাইটে, আপনি বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেটিং ওয়েবসাইট এবং ই-সেবা ওয়েবসাইটে গিয়ে টিকিট কাটতে পারবেন। এছাড়াও, রেলসেবা অ্যাপ ডাউনলোড করে মোবাইল থেকেও টিকিট কেনা যায়।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম
আপনার জানা কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ থেকে ট্রেনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার কথা ভাবছেন নিচের এই ধাপ গুলি অনুসরণ করুন 👇
ধাপ-১ ঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
প্রথমে আপনি আপনার কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপে গুগোল এ গিয়ে সার্চ করুন অথবা এই লিংক- https://eticket.railway.gov.bd/ থেকে সরাসরি বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ-২ ঃ একাউন্ট তৈরি করুন
একদম নতুন হয়ে থাকলে মেনু অপশন থেকে *রেজিস্টার অপশন* এ গিয়ে। আপনার মোবাইল নাম্বার, এন আইডি নাম্বার, আপনার ডেট অফ বার্থ। এগুলি সকল তথ্য দিয়ে।
I am Not a Robot *এই ক্যাপচা অপশনে টিক মার্ক দিয়ে নিচে থেকে *Verify* বাটনে ক্লিক করে আপনার অ্যাকাউন্টটি সম্পূর্ণভাবে রেজিস্টার করে নিন।
মনে রাখবেন, অবশ্যই আপনার রেজিস্টার কৃত মোবাইল নাম্বারে ৬ সংখ্যা একটি ওটিপি কোড যাবে সে ওটিপি কোড ব্যবহার করে একাউন্ট ভেরিফাই করে নিতে হবে।
ধাপ-৩ঃলগইন করা
এই ধাপে পুনরায় আপনি লগইন অপশনে গিয়ে আপনি আপনার রেজিস্ট্রেশন মোবাইল নাম্বার এবং একাউন্ট তৈরি করার সময় যে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন সে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন অপশনের উপরে ক্লিক করে সম্পন্নভাবে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ ৪: ট্রেন ও সিট বাছাই
এইভাবে আপনি আপনার ট্রেন এবং সিট এবং যাত্রার সময় থেকে শুরু করে কোথায় থেকে কোথায় যাবেন সবকিছু নির্বাচন করতে পারবেন। নিচের ছবি অনুসরণ করুন তাহলে আরো সহজ ভাবে বিষয়টি বুঝতে পারবেন 👇সকল প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি দেয়া হয়ে গেলে আপনি নিচে থেকে *সার্চ ট্রেন * এই অপশনের উপরে ক্লিক করুন।
ধাপ ৫:ট্রেনের সিডিউল নির্বাচন
এ ধাপে আপনি যে ডেট নির্বাচন করেছিলেন সেই ডেটে যতগুলি ট্রেন আছে সেগুলির নাম এবং সিটের ক্যাটাগরি দাম সহ সব কিছু ডিটেলস আপনার সামনে চলে আসবে। এখান থেকে আপনি আপনার পছন্দের ট্রেন, ট্রেনের সিডিউল সময়, আপনার সিট এবং দাম সহ বিস্তারিত দেখে Book Now সিল্কেট করুন।
এছাড়াও ডান পাশ করতে থাকা *ট্রেন ডিটেলস* এই ফিচারে ক্লিক করে ট্রেনটি কখন কোন সময় কোন স্টেশনে কোথায় দাঁড়াবে সকল ডিটেলস গুলি দেখতে পাবেন।
ধাপ ৬:কোচ-সিট কোয়ান্টিটি এবং বোর্ডিং স্টেশন নির্বাচন
এই ধাপটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য নিয়ে রয়েছে। আপনি এই ফিচারে আসার পর এখানে সম্পূর্ণ কোচের সিট প্ল্যানটি দেখতে পাবেন।
এখানে চার ধরনের সিট কালার থাকে।
১.খালি সিটের কালার হোয়াইট(Available)
২. নেভি কালার সিটের অর্থ হচ্ছে কেউ এই সেটটি সিলেক্ট করে রেখেছে।
৩. গ্রীন কালার সিট এর অর্থ হচ্ছে এই সিটটি ইন প্রসেসেস এ আছে।
৪.ইয়েলো কালার সিট অর্থ এটা অলরেডি বুকিং করে ফেলেছে।
এছাড়াও এখানে লক্ষ্য নিয়ে বিষয় সর্বোচ্চ একজন একটি সময়ে চারটি সিট বুকিং করতে পারবে।
উপরের সকল বিষয় লক্ষ্য করে আপনি আপনার পছন্দের সিটির উপরে ক্লিক করে নির্বাচন করে আপনার বোডিং ষ্টেশন নির্বাচন করে কন্টিনিউ পার্সেস এর উপরে ক্লিক করুন।
বলে রাখা ভালো এই ধাপে আপনাকে আপনার রেজিস্টার কৃত ফোন নাম্বারে আবারো ওটিপি চার সংখ্যার ভেরিফাই করার প্রয়োজন হবে।
ধাপ ৭: যাত্রীর তথ্য প্রদান
আপনি যতটি সিটের জন্য বুকিং করেছেন, সেই অনুযায়ী প্রতিটি যাত্রীর নাম এবং তাদের বয়স অনুযায়ী ক্যাটাগরি (বড়, শিশু বা বয়স্ক) নির্বাচন করতে হবে।
যদি কোনও যাত্রীর বয়স ৩ থেকে ১২ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে অবশ্যই Passenger Type: Child নির্বাচন করুন। এই ক্যাটাগরি নির্বাচন করলে শিশুর ভাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ্রাস পাবে।
ধাপ ৮: টিকিটের মূল্য পরিশোধ
এই ধাপে টিকিটের মোট ভাড়া, ভ্যাট, ব্যাংক চার্জসহ সব খরচের বিস্তারিত আপনাকে দেখানো হবে।
আপনি মোবাইল ব্যাংকিং (যেমন বিকাশ) অথবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে পারবেন।
সব তথ্য নিশ্চিত করে Confirm Purchase বাটনে ক্লিক করলে পেমেন্ট সম্পন্ন হবে।
ধাপ ৯: টিকিট ডাউনলোড ও প্রিন্ট
সফলভাবে পেমেন্ট সম্পন্ন হলে, Bangladesh Railway E-Ticket System স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার টিকিট ইস্যু করবে।
এই টিকিট আপনি তাৎক্ষণিকভাবে ব্রাউজার থেকেই ডাউনলোড করতে পারবেন। চাইলে পরবর্তীতে আপনার প্রোফাইলের Purchase History থেকেও ডাউনলোড করা যাবে।
এছাড়া, একটি কপি আপনার ই-মেইলে পাঠানো হবে। ইনবক্সে না পেলে অবশ্যই স্প্যাম ফোল্ডার চেক করুন।
টিকিটটি A4 সাইজে প্রিন্ট করে নিতে হবে, যা স্টেশন বা ট্রেনে যাচাইয়ের সময় প্রয়োজন হবে।
আশা করছি উপরের দেখানো নিয়ম অনুসরণ করে খুব সহজে আপনারা আপনাদের কম্পিউটারের সাহায্যে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট কাটতে পারবেন। এবং আমি উপরে যেই মাধ্যম যত সহজ ভাবে এবং সবচাইতে লেটেস্ট শেষ আপডেট অনুযায়ী দেখিয়েছি এর থেকে আপডেট সহজ নিয়ম আর কেউ কোথাও দেখাতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আশা করছি আপনি আমার এই কনটেন্ট গুলি সম্পূর্ণভাবে যদি পড়েন তাহলে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট করা সম্পর্কিত সকল বিষয় বাংলা ভাষায় জানতে পারবেন।
টিকিট বুকিং-এর জন্য, আপনি ১৩১ নম্বরে কল করেও সহায়তা নিতে পারেন
রেল সেবা” (Rail Sheba) অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
Rail Sheba এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটা আরো সহজ।
১.প্রথমে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করে নিন।
২.এরপর অ্যাপটি ওপেন করে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নতুন হয়ে থাকলে রেজিস্টার করে নিন উপরে দেখানোর নিয়ম অনুসরণ করে অথবা সরাসরি লগইন কর।
৩.লগইন করা হয়ে গেলে আপনি ট্রেন নির্বাচন করুন এবং কোথায় থেকে কোথায় যাবেন কত তারিখে যাবেন এই সকল ইনফরমেশন দিয়ে সার্চ টেনে ক্লিক করুন।
৪.এই ধাপে আপনি আপনার পছন্দের ট্রেন এবং যাত্রা সময় নির্বাচন করুন। সব ইনফরমেশন দেখে পছন্দ হয়ে গেলে নিচে থেকে টিকেটের মূল্য দেখে *বুক নাও* অপশনে ক্লিক করুন।
৫.এরপর আপনার সামনে সিট প্ল্যান চলে আসবে এখানে প্রথমে কোচ নির্বাচন করবেন তারপর সিট সিলেক্ট করবেন।
এরপর নিচে থেকে *কন্টিনিউ পার্সেস* অপশন এ ক্লিক করবেন।এরপর আপনার ফোনে ৪ সংখ্যার ওটিপি ভেরিফাই করে নিবেন।
৬.পরবর্তী ধাপে প্যাসেঞ্জারের সকল ইনফরমেশন নির্বাচন করে কোয়ান্টিটি নির্বাচন করে প্যাসেঞ্জারের বয়স নির্বাচন করে পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন।
৭.এখন আপনার সামনে মূল্য পরিশোধ করার অর্থাৎ আপনার অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করার সকল মাধ্যমগুলি চলে আসবে এখান থেকে পছন্দের মাধ্যম নির্বাচন করে পেমেন্ট সম্পূর্ণ করুন।
৮.এই শেষ ধাপে আপনি আপনার টিকেট ডাউনলোড করুন এবং প্রয়োজনে আপনি টিকিটটি প্রিন্ট আউট করে যাত্রার সময় সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন।
ব্যাস উপরে দেখানো এই নিয়ম অনুসরণ করে হাতে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রেল সেবা এপ্লিকেশনের সাহায্য নিয়ে খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট করতে পারবেন।
উপরে আমি আপনারা কম্পিউটার থেকে এবং মোবাইল থেকে অনলাইন এর মাধ্যমে কিভাবে ট্রেনের টিকেট করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি উপরের দুটি নিয়মে যে কোন একটিকে ব্যবহার করে খুব সহজে আপনারা অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট করতে পারবেন।
বিকাশে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম
বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে বিকাশ (bKash) পার্টনারশিপের মাধ্যমে এখন খুব সহজেই ট্রেনের টিকেট কাটা যায়। নিচে বিকাশে ট্রেনের টিকেট বুকিংয়ের সম্পূর্ণ ধাপগুলো দেওয়া হলো:
১. বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপে অর্ডার করুন
-
ওয়েবসাইট: https://www.railway.gov.bd
-
অ্যাপ: IRIS বা RailSheba (গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন)
২. টিকেট সিলেক্ট করে “বিকাশ” পেমেন্ট অপশন চয়েজ করুন
-
যাত্রার তারিখ, রুট ও সিট নির্বাচন করুন।
-
চেকআউট পেজে bKash পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করুন।
৩. বিকাশে লগইন করে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন
-
বিকাশ মেনু ➝ পেমেন্ট ➝ Merchant Payment
-
Merchant Number:
Railway-এর দেওয়া মার্চেন্ট নাম্বার
(সাধারণত অটো শো হবে) -
Amount: টিকেটের মূল্য + সার্ভিস চার্জ
-
Reference:
Railway-এর দেওয়া রেফারেন্স নম্বর
-
Counter Number:
1
(ডিফল্ট)
৪. পেমেন্ট কনফার্মেশন ও ই-টিকেট ডাউনলোড
-
পেমেন্ট সফল হলে কনফার্মেশন SMS আসবে।
-
ই-টিকেট ডাউনলোড করুন বা স্ক্রিনশট রাখুন।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সময়
ট্রেনের টিকিট অনলাইনে কাটার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই। আপনি চাইলে দিনে বা রাতে, ২৪ ঘণ্টার যেকোনো সময় টিকিট কিনতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, আজকের দিনসহ আগামী ৪ দিন পর্যন্ত আগাম ট্রেনের টিকিট অনলাইনে সংগ্রহ করা যাবে।
ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করার নিয়ম
বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ক্রয়কৃত ট্রেনের টিকিট রিফান্ড পেতে হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিকটস্থ রেলস্টেশনের বুকিং কাউন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। ট্রেন ছাড়ার পূর্বে নির্দিষ্ট সময়ে টিকিট জমা দিলে রিফান্ড পাওয়া যায়। তবে রিফান্ডের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাটছাঁট (চার্জ) প্রযোজ্য এবং ট্রেন ছাড়ার পর কোনো অবস্থাতেই রিফান্ড প্রদান করা হয় না।
ট্রেনের টিকেট মূল্য
শ্রেণি | ঢাকা-চট্টগ্রাম | ঢাকা-খুলনা | ঢাকা-রাজশাহী | ঢাকা-সিলেট |
---|---|---|---|---|
শোভন চেয়ার | ৫৫০-৬৫০ টাকা | ৫০০-৬০০ টাকা | ৪৫০-৫৫০ টাকা | ৫০০-৬০০ টাকা |
স্নিগ্ধা (এসি) | ১,২০০-১,৫০০ টাকা | ১,১০০-১,৪০০ টাকা | ১,০০০-১,৩০০ টাকা | ১,১০০-১,৪০০ টাকা |
প্রথম শ্রেণি বার্থ | ১,৮০০-২,২০০ টাকা | ১,৬০০-২,০০০ টাকা | ১,৫০০-১,৯০০ টাকা | ১,৭০০-২,১০০ টাকা |
📌 টিকেট কাটার আগে সর্বশেষ মূল্য চেক করে নিন!
অনলাইনে ট্রেনের টিকেট সংক্রান্ত সর্বশেষ নিয়মাবলী
বর্তমানে ট্রেনে ভ্রমণ করতে হলে অনলাইন বা অফলাইনে টিকিট কাটাই বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ রেলওয়ের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী:
-
একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কাটতে পারবেন।
-
যাদের নামে টিকিট কাটা হয়েছে, তাদের অবশ্যই নিজে ভ্রমণ করতে হবে।
-
যদি টিকিটধারী ব্যক্তি ভ্রমণে অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে সব টিকিট বাতিল বলে গণ্য হবে।
এছাড়াও ট্রেনে ভ্রমণের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক, এবং এটি অফলাইন টিকিটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
১. অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে কি কোনো চার্জ লাগে?
হ্যাঁ, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ১০-২০ টাকা সার্ভিস চার্জ লাগে।
২. টিকেট বুকিংয়ের পর পরিবর্তন করা যাবে?
হ্যাঁ, যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সিট বা তারিখ পরিবর্তন করা যায়।
৩. টিকেট বুক করতে কি ন্যাশনাল আইডি কার্ড প্রয়োজন?
হ্যাঁ, যাত্রীর NID বা জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন।
উপসংহার
২০২৫ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম আরও উন্নত হয়েছে। সরকারি ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ বা ট্রাস্টেড থার্ড-পার্টি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই ট্রেনের টিকেট বুক করতে পারবেন। এই গাইডে দেওয়া ধাপগুলো অনুসরণ করে ঝামেলামুক্তভাবে টিকেট কাটুন এবং নিরাপদ যাত্রা করুন।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন