আমাদের Telegram চ্যানেলে যুক্ত হোন

বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট চালু হচ্ছে! ৯০ দিনের মধ্যে প্রস্তুতি শেষের লক্ষ্য

বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থায় এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংক (Starlink) খুব শিগগিরই বাংলাদেশে তাদের স্যাটেলাইট-ভিত্তিক উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা চালু করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই এই সেবা চালুর জন্য সরকারিভাবে কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং ৯০ দিনের মধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল, উপকূলীয় এলাকা এবং দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলেও নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি, ফ্রিল্যান্সিং, স্টার্টআপ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন-বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের ৮০ অ্যান্টেনার ইন্টারনেট ট্রানজিট হাব

বাংলাদেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু: সর্বশেষ আপডেট

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সম্প্রতি নিশ্চিত করেছেন যে—

  • বর্তমানে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে রয়েছে।

  • বাংলাদেশের একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

  • গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপন, ভূমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আলোচনা চলছে।

এই কার্যক্রমের মাধ্যমে স্টারলিংক বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো তৈরি করতে যাচ্ছে।

কোথায় স্থাপন হবে স্টারলিংকের গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন?

স্টারলিংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্থান পরিদর্শন করেছে। এর মধ্যে—

  • কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পত্তিতে।

  • এবং কিছু ক্ষেত্রে হাইটেক পার্কের জমিতে।

গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। বর্তমানে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও স্থান নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলমান রয়েছে।

স্টারলিংক কী ধরনের ইন্টারনেট সেবা দেবে?

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান—

“স্টারলিংক বাংলাদেশের শহর, প্রত্যন্ত অঞ্চল, উত্তরাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় লোডশেডিং কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবমুক্ত রিলায়েবল ও হাই-স্পিড ইন্টারনেট নিশ্চিত করবে।”

স্টারলিংকের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—

✅ স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট।

✅ অত্যন্ত দ্রুতগতির ডাউনলোড ও আপলোড স্পিড।

✅ লোডশেডিং ও দুর্যোগে কম প্রভাবিত।

✅ পাহাড়, দ্বীপ ও দুর্গম এলাকায় সহজ সংযোগ।

✅ নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চমানের সার্ভিস।

বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলে স্টারলিংকের গুরুত্ব

বর্তমানে বাংলাদেশে—

  • টেলিকম গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্ক এখনও সারা দেশে পুরোপুরি বিস্তৃত নয়।

  • অনেক অঞ্চলে এখনও নিয়মিত লোডশেডিং সমস্যা রয়েছে।

  • দুর্গম এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রায় অনুপস্থিত।

এই প্রেক্ষাপটে স্টারলিংক হতে পারে একটি গেম চেঞ্জার প্রযুক্তি।

বিশেষ করে উপকার পাবেন—

👨‍💻 ফ্রিল্যান্সাররা।

🏢 এসএমই ব্যবসায়ীরা।

🏥 এনজিও ও স্বাস্থ্যখাত।

🎓 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

🚀 স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা।

ডিজিটাল ইকোনমি, রিমোট ওয়ার্ক, ই-লার্নিং ও ই-কমার্স খাতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে স্টারলিংক।

৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংক চালুর লক্ষ্য

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আশ্বাস দিয়েছেন—

আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই স্টারলিংকের সঙ্গে একটি বাস্তবসম্মত ও কার্যকর মডেল বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এই সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি, নীতিমালা, অবকাঠামো এবং অপারেশনাল পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

তিনি মাস্ককে জানান—

  • বাংলাদেশে এক বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে।

  • যারা এই প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী হবে।

  • তরুণদের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন ইলন মাস্ক।

৯০ কার্যদিবসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ

প্রধান উপদেষ্টা তার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন—

  • স্পেসএক্স টিমের সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় করতে হবে।

  • আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংক চালুর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।

এটি সরকারের পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন।

প্রধানমন্ত্রী ও ইলন মাস্কের টেলিফোন আলোচনা

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, প্রধান উপদেষ্টা ও ইলন মাস্কের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ টেলিফোন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে—

  • ভবিষ্যৎ সহযোগিতার দিকগুলো নিয়ে কথা হয়।

  • বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এই আলোচনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, স্টারলিংক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে।

স্টারলিংক চালু হলে বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হবে?

স্টারলিংক চালু হলে বাংলাদেশের জন্য যে সুফলগুলো আসবে—

✅ গ্রাম ও শহরের ডিজিটাল বৈষম্য কমবে।

✅ দুর্যোগকালীন জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে।

✅ ফ্রিল্যান্সিং ও রিমোট জব আরও বাড়বে।

✅ শিক্ষা ও টেলিমেডিসিন সুবিধা সহজ হবে।

✅ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথ আরও মজবুত হবে।

উপসংহার

বাংলাদেশে স্টারলিংকের আগমন শুধুমাত্র একটি নতুন ইন্টারনেট সেবার সংযোজন নয়, বরং এটি একটি ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা। সরকার, আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং দেশীয় অংশীদারদের সমন্বয়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই এই সেবা বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে।

স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে, যা দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!

আরও পড়ুন-বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট চালু: দাম, স্পিড, সুবিধা

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।