বাংলাদেশে প্রতিদিন অসংখ্য স্মার্টফোন বাজারে আসে—কেউ কেনেন দেশি শোরুম থেকে, আবার কেউ কেনেন বিদেশ থেকে আনা ফোন। ফলে অনেক ফোনই দেশে আনঅফিশিয়াল হিসেবে গণ্য হয়। আনঅফিশিয়াল হলে অনেক সময় নেটওয়ার্ক সমস্যা, ওয়ারেন্টি সুবিধা না পাওয়া, VoLTE কাজ না করা বা ভবিষ্যতে SIM রেজিস্ট্রেশন ইস্যু দেখা দিতে পারে। তাই ফোনটি অফিশিয়াল স্ট্যাটাসে রূপান্তর করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এই পোস্টে আপডেটেড তথ্যসহ সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হলো—কীভাবে আনঅফিশিয়াল মোবাইল অফিসিয়াল করবেন, কী কী তথ্য লাগবে, কত টাকা খরচ হতে পারে এবং কোন ভুলগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুন-বিদেশ থেকে আনা মোবাইল কীভাবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন?
আনঅফিশিয়াল ও অফিসিয়াল মোবাইল—সংক্ষেপে পার্থক্য
অফিশিয়াল মোবাইল:
-
বাংলাদেশে অনুমোদিত চ্যানেলে আমদানি।
-
নেটওয়ার্ক, VoLTE, ফার্মওয়্যার সব ঠিকভাবে কাজ করে।
-
১ বছরের ওয়ারেন্টি।
-
NID–SIM রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত।
আনঅফিশিয়াল মোবাইল:
-
ব্যক্তিগতভাবে আনা বা অনুমোদনবিহীনভাবে আমদানি।
-
অনেক সময় VoLTE/5G কাজ করে না।
-
ওয়ারেন্টি থাকে না।
-
ভবিষ্যতে SIM ব্লক হওয়ার ঝুঁকি।
আনঅফিশিয়াল মোবাইল অফিসিয়াল করার উপায়
বাংলাদেশে বর্তমানে বিটিআরসি (BTRC) মোবাইল আমদানি ও সার্ভিস রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম পরিচালনা করে। আনঅফিশিয়াল ফোন অফিসিয়াল করতে হলে ফোনের IMEI রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়।
নীচে ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া দেওয়া হলো—
🔶 ধাপ–১: আপনার মোবাইল আনঅফিশিয়াল কিনা যাচাই করুন
অফিসিয়াল নাকি আনঅফিশিয়াল তা যাচাই করতে—
✔ পদ্ধতি–১: BTRC IMEI চেক
-
*#06# ডায়াল করে IMEI নিন
-
ভিজিট করুন: neir.btrc.gov.bd
-
“Check IMEI” অপশনে IMEI দিন
-
স্ট্যাটাস দেখুন: Valid / Invalid / Imported
✔ পদ্ধতি–২: SMS–এ চেক
IMEI লিখে 16002 নম্বরে পাঠান
ফিরতি মেসেজে স্ট্যাটাস পাবেন।
🔶 ধাপ–২: NEIR পোর্টালে IMEI রেজিস্ট্রেশন করুন
-
যান: neir.btrc.gov.bd
-
“Register Device” অপশনে ক্লিক করুন
-
প্রয়োজনীয় তথ্য দিন:
-
ফোনের IMEI
-
মোবাইল মডেল
-
কেনার রিসিট/Invoice (যদি থাকে)
-
পাসপোর্ট কপি (যদি বিদেশ থেকে আনা হয়)
-
NID & SIM নম্বর
-
🔶 ধাপ–৩: ফি পরিশোধ করুন (যদি প্রযোজ্য)
ফোনের ক্যাটাগরি ও মূল্য অনুযায়ী BTRC ফি পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত—
-
২০,০০০ টাকার নিচে ফোন: কম ফি
-
মধ্যম মানের ফোন: মাঝারি ফি
-
ফ্ল্যাগশিপ ফোন: উচ্চ ফি
(নোট: BTRC সময় অনুযায়ী ফি আপডেট করে থাকে। Official ওয়েবসাইটে সর্বশেষ ফি দেখুন।)
🔶 ধাপ–৪: ভেরিফিকেশন ও অ্যাপ্রুভাল
রেজিস্ট্রেশন সাবমিট করার পর আপনার তথ্য BTRC টিম যাচাই করবে।
সাধারণত ২৪–৭২ ঘণ্টার মধ্যে স্ট্যাটাস আপডেট হয়—
-
✔ Approved = আপনার মোবাইল অফিসিয়াল হয়ে গেছে
-
❌ Rejected = ভুল তথ্য বা invalid IMEI
🔶 ধাপ–৫: মোবাইল নেটওয়ার্কে নতুন স্ট্যাটাস আপডেট হবে
অপ্রুভ হওয়ার পরে—
-
VoLTE / VoWiFi সক্রিয় হতে পারে
-
নেটওয়ার্ক স্থিতিশীলতা বাড়ে
-
ভবিষ্যতে SIM ব্লক হবে না
কোন পরিস্থিতিতে আনঅফিশিয়ালকে অফিসিয়াল করা বাধ্যতামূলক?
-
বিদেশ থেকে আনা ফোন
-
গিফট হিসেবে পাওয়া ফোন
-
রিফার্বিশড / রিপ্যাক ফোন
-
আমদানি কাগজপত্র না থাকা ফোন
-
ডুয়াল সিম—একটি IMEI Valid, অন্যটি Invalid
যে ভুলগুলো কখনোই করবেন না
❌ নকল IMEI ব্যবহার
❌ IMEI পরিবর্তন করার সফটওয়্যার ব্যবহার (আইনগত অপরাধ)
❌ ভুল ইনভয়েস আপলোড
❌ সিম রেজিস্ট্রেশন নাম মিল না থাকা
এসব করলে রেজিস্ট্রেশন বাতিল হতে পারে।
অফিসিয়াল করলে যে সুবিধাগুলো পাবেন
-
✔ অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি সুবিধা
-
✔ নেটওয়ার্কে সব ব্যান্ড সাপোর্ট
-
✔ VoLTE / VoWiFi কাজ করবে
-
✔ সরকারিভাবে হোয়াইটলিস্টেড থাকবে
-
✔ ভবিষ্যতে বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে
উপসংহার
আনঅফিশিয়াল মোবাইল ব্যবহার করা এখন ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ ভবিষ্যতে নেটওয়ার্ক সমস্যা বা সিম ব্লক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ফোন কেনার পরপরই IMEI চেক করে অফিসিয়াল রেজিস্ট্রেশন করানো উচিত। BTRC-এর NEIR সিস্টেমের মাধ্যমে এখন খুব সহজেই ঘরে বসে ফোনকে অফিসিয়াল করা যায়।
আপডেটেড নিয়ম অনুযায়ী উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি নিশ্চিন্তে ফোনটি অফিসিয়াল স্ট্যাটাসে রূপান্তর করতে পারবেন।
আরও পড়ুন-বন্ধ হচ্ছে অবৈধ মোবাইল সেট ! আপনারটা বৈধ কিনা চেক করুন
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


