বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের উদ্যোগে পরিচালিত ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য স্বস্তির পরশ বয়ে আনে। ২০২৫–২০২৬ অর্থবছরেও টিসিবি সারা দেশে ভর্তুকি মূল্যে তেল, চিনি, ডালসহ কয়েকটি জরুরি পণ্য সরবরাহ করছে।
এই পোস্টে থাকছে— সর্বশেষ টিসিবি পণ্যের তালিকা, দাম, বিতরণ পদ্ধতি এবং টিসিবির সুবিধা পাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
আরও পড়ুন- টিসিবি ফ্যামিলি কার্ডের জন্য আবেদন ফি কত?
টিসিবি কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ
টিসিবি হলো সরকারের অধীনে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, যার মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ জনগণের জন্য ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা। বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে টিসিবি তার মজুত পণ্য সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করে বাজার স্থিতিশীল রাখে।
বিশেষ করে “স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারগুলো” প্রতি মাসে নির্দিষ্ট কোটায় টিসিবি পণ্য কিনতে পারেন। এছাড়াও বিশেষ সময়ে মোবাইল ট্রাক সেল বা ট্রাকভিত্তিক বিক্রয় কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ জনগণও পণ্য ক্রয় করতে পারেন।
টিসিবি পণ্যের তালিকা ও দাম ২০২৫–২০২৬
| পণ্যের নাম | পরিমাণ | বিক্রয় মূল্য (টাকা) | মন্তব্য |
|---|---|---|---|
| সয়াবিন তেল | প্রতি লিটার | ১০০ টাকা | সর্বোচ্চ ২ লিটার পর্যন্ত |
| চিনি | প্রতি কেজি | ৭০ টাকা | সর্বোচ্চ ২ কেজি পর্যন্ত |
| মসুর ডাল | প্রতি কেজি | ৬০ টাকা | সর্বোচ্চ ২ কেজি পর্যন্ত |
| পেঁয়াজ | প্রতি কেজি | ৫০ টাকা | মৌসুমি প্রাপ্যতার উপর নির্ভরশীল |
| ছোলা (রমজান প্যাকেজে) | প্রতি কেজি | ৭৫ টাকা | নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রয় |
| খেজুর (রমজান প্যাকেজে) | প্রতি কেজি | ১২০ টাকা | সীমিত পরিমাণে বিতরণ |
| চাল (বিশেষ উদ্যোগে) | প্রতি কেজি | ৪৫ টাকা | জেলা অনুযায়ী পার্থক্য হতে পারে |
🟩 দ্রষ্টব্য:
-
উপরোক্ত দামগুলো সরকার নির্ধারিত গড় দাম, যা ট্রাক সেল বা স্থানীয় পয়েন্ট অনুযায়ী সামান্য ভিন্ন হতে পারে।
-
কার্ডধারী গ্রাহকদের জন্য দাম আরও কিছুটা কম হতে পারে।
-
সাধারণ ভোক্তারাও ট্রাক সেল পয়েন্ট থেকে নির্ধারিত সীমার মধ্যে পণ্য কিনতে পারেন।
টিসিবির বিতরণ ব্যবস্থা ও কেনার নিয়ম
২০২৫–২৬ অর্থবছরে টিসিবি দুইভাবে পণ্য বিক্রি করছে—
স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে বিক্রয়:
-
-
প্রতিটি পরিবার মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য কিনতে পারে।
-
কার্ডে নাম, ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয় নম্বর যুক্ত থাকে।
-
উপজেলা বা সিটি কর্পোরেশন অফিসের মাধ্যমে কার্ড সংগ্রহ করা যায়।
-
মোবাইল ট্রাক সেলের মাধ্যমে বিক্রয়:
-
-
টিসিবি ট্রাক সেল এখন সারাদেশে পরিচালিত হচ্ছে।
-
প্রতিদিন নির্দিষ্ট স্থানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ট্রাক বিক্রয় হয়।
-
প্রতি গ্রাহককে সীমিত পরিমাণে তেল, চিনি ও ডাল দেওয়া হয়।
-
📍 উদাহরণ:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিটি জেলায় টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
টিসিবি ওয়েবসাইট ও জেলা প্রশাসনের নোটিশ বোর্ডে প্রতিদিনের বিক্রয় পয়েন্টের তালিকা দেওয়া থাকে।
টিসিবি পণ্য কেন উপকারী?
✅ বাজারদরের তুলনায় ৩০–৪০% কম দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়।
✅ নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
✅ রমজান, ঈদ ও উৎসবকালীন সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
✅ কৃষি ও খাদ্যপণ্য বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
কিছু সীমাবদ্ধতা ও সতর্কতা
-
সব অঞ্চলে পণ্য সরবরাহ সমান নয়; অনেক এলাকায় ট্রাক সেল সীমিত।
-
কিছু সময় পণ্য সংকট দেখা দিতে পারে, ফলে নির্ধারিত সীমা কমে যেতে পারে।
-
এক ব্যক্তি বা পরিবার মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি পণ্য কিনতে পারে না।
-
পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের পরিবর্তনের কারণে মাঝে মাঝে সামান্য বাড়তে পারে।
উপসংহার
২০২৫–২০২৬ অর্থবছরে টিসিবি বাংলাদেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে কার্যকর একটি সরকারি উদ্যোগ হিসেবে কাজ করছে।
যেখানে বাজারে তেলের লিটারপ্রতি দাম প্রায় ১৭০–১৮০ টাকা, সেখানে টিসিবি মাত্র ১০০ টাকায় সরবরাহ করছে— যা মানুষের জীবনে বাস্তব স্বস্তি এনে দিয়েছে।
সরকারের এই সামাজিক উদ্যোগ শুধু দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেই নয়, বরং জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুন- টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


