বাংলাদেশে পাসপোর্টের ক্যাটাগরি অনুযায়ী রিনিউ চার্জ কত?

বাংলাদেশে এখন পাসপোর্ট করা এবং নবায়ন (রিনিউ) প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল হয়েছে। আগে যেভাবে হাতে ফর্ম পূরণ, দালালের মাধ্যমে জমা দেওয়া এবং অফিস ঘুরে বেড়াতে হতো, এখন সেই ঝামেলা নেই।
বর্তমানে অনলাইনে আবেদন করে, নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়েই সহজে পাসপোর্ট নবায়ন করা যায়।

তবে অনেকেই জানেন না — পাসপোর্টের ক্যাটাগরি বা ধরন অনুযায়ী রিনিউ চার্জ আলাদা, এবং সেই চার্জ নির্ভর করে পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ, ও ডেলিভারি গতির উপর (Regular, Express, Super Express)।

চলুন দেখে নিই — ২০২৬ সালের সর্বশেষ সরকারি হার অনুযায়ী বাংলাদেশে পাসপোর্ট নবায়নের ফি ও নিয়মাবলি।

আরও পড়ুন-১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

পাসপোর্টের ধরন (Categories of Passport in Bangladesh)

বাংলাদেশে বর্তমানে তিন ধরনের পাসপোর্ট প্রচলিত:

1️⃣ Machine Readable Passport (MRP) — পুরনো ধাঁচের, তবে এখন ধীরে ধীরে বন্ধ করা হচ্ছে।
2️⃣ e-Passport (Electronic Passport) — বর্তমানে কার্যকর এবং নতুন আবেদন বা নবায়ন উভয়ের জন্য ব্যবহৃত।
3️⃣ Diplomatic/Official Passport — কেবল সরকারি ও কূটনৈতিক কাজে ব্যবহৃত।

সাধারণ নাগরিকদের জন্য এখন মূলত e-Passport ই-সেবা চালু রয়েছে, এবং রিনিউ চার্জও এই ক্যাটাগরির ভিত্তিতেই নির্ধারিত।

e-Passport নবায়ন চার্জ

ই-পাসপোর্টের ফি তিনটি ধরণের ওপর নির্ভর করে:
📘 পৃষ্ঠা সংখ্যা (৪৮ বা ৬৪)
📆 মেয়াদ (৫ বছর বা ১০ বছর)
⚡ ডেলিভারি টাইপ (Regular, Express, Super Express)

নিচে বিস্তারিত চার্টটি দেখুন 👇

🧾 ৫ বছরের মেয়াদী ই-পাসপোর্ট নবায়ন ফি

---

🧾 ১০ বছরের মেয়াদী ই-পাসপোর্ট নবায়ন ফি

---

রিনিউ প্রক্রিয়া (Passport Renewal Process Step by Step)

ধাপ ১: অনলাইন আবেদন

👉 অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: https://www.epassport.gov.bd
👉 “Apply for ePassport” সেকশনে ক্লিক করুন
👉 আপনার পুরনো পাসপোর্ট নম্বর, NID, ও ব্যক্তিগত তথ্য দিন

ধাপ ২: রিনিউ টাইপ নির্বাচন

এখানে Renewal অপশন বেছে নিন (New Application নয়)।

ধাপ ৩: ফি প্রদান

অনলাইন পেমেন্ট (Bkash, Nagad, Rocket, Card বা Bank Challan) এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করুন।
ফি জমার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং অপশন সক্রিয় হবে।

ধাপ ৪: অ্যাপয়েন্টমেন্ট ও বায়োমেট্রিক

নির্ধারিত তারিখে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যান ছবি ও বায়োমেট্রিকের জন্য।
পুরনো পাসপোর্টের মূল কপি ও রিসিট সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।

ধাপ ৫: পাসপোর্ট প্রসেস ও ডেলিভারি

Regular সেবায় প্রায় ২১ দিন, Express এ ১০ দিন এবং Super Express এ ২–৩ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে রিনিউ প্রয়োজন হয়?

👉 পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে
👉 তথ্য পরিবর্তন (নাম, ঠিকানা, ছবি ইত্যাদি)
👉 পাসপোর্ট হারানো বা নষ্ট হলে
👉 অতিরিক্ত পৃষ্ঠা লাগলে

💡 বিশেষ টিপস:
যদি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হতে ৬ মাসের কম সময় থাকে, তাহলে আগেই নবায়ন করে ফেলুন।
কারণ অনেক বিদেশি দূতাবাসে ভিসা দিতে ৬ মাসের বেশি মেয়াদ থাকা বাধ্যতামূলক।

পাসপোর্ট নবায়নের সুবিধা

• সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক প্রক্রিয়া

• দ্রুত সার্ভিস (Super Express)

• ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও বায়োমেট্রিক আগের তথ্য থেকেই ব্যবহার করা যায়

• কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগে না (রিনিউ ক্ষেত্রে)

• স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুরনো পাসপোর্টের তথ্য সংযুক্ত হয়

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

১️⃣ পাসপোর্ট নবায়নে নতুন ছবি লাগবে কি?
হ্যাঁ, নতুন ছবি তোলা হয় অফিসে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ার সময়।

২️⃣ রিনিউ করতে কি NID দরকার?
হ্যাঁ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর আবশ্যক।

৩️⃣ পুরনো MRP পাসপোর্ট থাকলে কি ই-পাসপোর্টে রিনিউ করা যায়?
হ্যাঁ, বর্তমানে MRP থেকে e-Passport রিনিউ করা যায় সহজেই।

৪️⃣ রিনিউ পাসপোর্টে কি পুরনো নম্বর থাকে?
না, নতুন নম্বর ইস্যু হয় কিন্তু পূর্বের তথ্য সংরক্ষিত থাকে।

উপসংহার

বাংলাদেশে ২০২৫ সালে পাসপোর্ট নবায়নের ফি নির্ধারিত হয়েছে পরিষ্কার ক্যাটাগরি অনুযায়ী — ৫ বা ১০ বছরের মেয়াদ, ৪৮ বা ৬৪ পৃষ্ঠা, এবং Regular, Express, বা Super Express ডেলিভারি টাইপে।
এখন আর দালাল বা অতিরিক্ত ঝামেলা নেই — ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করে পাসপোর্ট নবায়ন করা সম্ভব।

✅ যদি আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষের পথে থাকে, এখনই নবায়ন করে ফেলুন।
ডিজিটাল বাংলাদেশের নতুন সেবা আপনার হাতের মুঠোয়!

আরও পড়ুন-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?সর্বশেষ ফি কত?

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!

ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!

👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥