পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পাসপোর্ট কত বছর মেয়াদী হয়?(আপডেট)

শিশুদের পাসপোর্ট করা প্রায়ই বাবা-মা বা অভিভাবকদের জন্য চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে। বিশেষ করে যখন শিশুর বয়স ৫ বছরের কম হয়, তখন প্রশ্ন আসে—“পাসপোর্ট কতদিনের মেয়াদে দেওয়া হবে?”, “কোন ধরনের পাসপোর্ট বেছে নেব?”, এবং “কোন ডকুমেন্ট লাগবে?”

আরও পড়ুন-১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

২০২৫ সালে বাংলাদেশে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, ছোট বাচ্চাদের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ নির্ধারণ এবং আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং ডিজিটাল হয়েছে। এই পোস্টে আমরা ধাপে ধাপে দেখব—
✅ শিশুদের পাসপোর্টের বৈধতা
✅ আবেদন প্রক্রিয়া
✅ ফি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
✅ বাবা-মায়ের জন্য টিপস

শিশু পাসপোর্টের বৈধতা

বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ সাধারণত ৫ বছর।
পাসপোর্টের ধরন ও পৃষ্ঠার সংখ্যার ভিত্তিতে ফি এবং বৈধতার মেয়াদ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

সাধারণ নিয়ম:
  • ৫ বছরের কম শিশু: ৫ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট

  • ৫ বছর বা তার বেশি শিশু: সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ৫–১০ বছরের মেয়াদী পাসপোর্ট

💡 বিশেষ টিপস:

  • শিশুর বয়স দ্রুত পরিবর্তন হয়, তাই মেয়াদ স্বল্প হলেও নবায়ন সহজ।
  • অধিকাংশ বিদেশী দেশে শিশু পাসপোর্টের বৈধতা ২–৫ বছর পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য।

ধাপে ধাপে শিশুদের পাসপোর্ট আবেদন 

ধাপ ১: অনলাইন আবেদন

বাংলাদেশ ই-পাসপোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (https://www.epassport.gov.bd) গিয়ে “Apply for e-Passport” সেকশনটি খুলুন।

  • শিশুর নাম (বাংলা ও ইংরেজি)

  • জন্ম তারিখ

  • জাতীয় পরিচয়পত্র / জন্ম নিবন্ধন নম্বর (যদি থাকে)

  • পিতামাতার নাম এবং ঠিকানা

  • ফোন নম্বর এবং ইমেইল
    সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।

ধাপ ২: আবেদন ফি পরিশোধ

শিশুদের পাসপোর্টের জন্য ফি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে কম।

২০২৫ সালের ফি (বাংলাদেশ):

পাসপোর্ট ধরন পৃষ্ঠা সংখ্যা মেয়াদ ফি (টাকা)
শিশু (৫ বছরের কম) ৪৮ পৃষ্ঠা ৫ বছর ৪,০২৫ টাকা
শিশু (৫ বছরের কম) ৬৪ পৃষ্ঠা ৫ বছর ৬,৩২৫ টাকা

💳 ফি পরিশোধ করা যায় অনলাইনে বা ব্যাংক চেক / টেলিক্যাশিং এর মাধ্যমে।

ধাপ ৩: অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং

ফি জমা দেওয়ার পর আপয়েন্টমেন্ট বুক করুন।
নির্দিষ্ট তারিখে পাসপোর্ট অফিসে শিশুকে নিয়ে যান বায়োমেট্রিক এবং ছবি তোলার জন্য।

শিশুদের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ করা হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া সাধারণত বাধ্যতামূলক নয়, শুধুমাত্র ছবি এবং স্বাক্ষর প্রয়োজন (যদি সক্ষম হয়)।

ধাপ ৪: প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

শিশুর পাসপোর্টের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন হবে—

📄 জন্ম নিবন্ধন সনদ (মূল বা সত্যায়িত কপি)।
📄 পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
📄 পাসপোর্ট আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি।
📄 ফি পরিশোধ রসিদ।

💡 টিপস:

  • জন্ম তারিখ এবং শিশুর তথ্য ঠিকভাবে পূরণ করুন, কারণ ভুল হলে নবায়ন প্রক্রিয়ায় সমস্যা হতে পারে।

  • শিশু একমাত্র পাসপোর্ট নিতে হলে পিতামাতার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

ধাপ ৫: পাসপোর্ট প্রসেসিং ও ডেলিভারি

সাধারণভাবে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের পাসপোর্টের প্রসেসিং সময় ৭–২১ কর্মদিবস।

  • Regular: ~২১ দিন

  • Express: ~৭–১০ দিন

  • Super Express: ~২–৩ দিন

প্রসেস শেষে, SMS বা ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হবে পাসপোর্ট ডেলিভারি প্রস্তুত।
পাসপোর্ট অফিস থেকে নিজের হাতে সংগ্রহ করুন অথবা নির্ধারিত ঠিকানায় ডেলিভারি করুন।

৫ বছরের কম শিশুদের জন্য বিশেষ টিপস

  • ছবির মান
    শিশুদের জন্য ছবি অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে, মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যাবে এমন হতে হবে।
  • নিয়মিত যাচাই
    জন্ম তারিখ, নাম, ঠিকানা সব জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিলিয়ে দিন।
  • নতুন নিয়ম জানুন
    ২০২৫ সালের নতুন নিয়মে পুলিশ ভেরিফিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজিটাল হয়েছে, ফলে বাড়িতে যাচাই প্রয়োজন নেই।
  • মেয়াদ সম্পর্কে সচেতন থাকুন
    শিশুদের দ্রুত বয়স বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নবায়নের পরিকল্পনা করুন।

উপসংহার

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর পাসপোর্ট ৫ বছরের মেয়াদী হয় এবং এটি বাংলাদেশে সহজভাবে অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।২০২৫ সালের নতুন ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে পুলিশ ভেরিফিকেশন এখন স্বয়ংক্রিয় এবং ঝামেলামুক্ত।
শিশুর পাসপোর্ট করার সময় সঠিক ডকুমেন্ট, ছবি, এবং জন্ম তারিখ যাচাই নিশ্চিত করা আবশ্যক।

✅ বাবা-মা ও অভিভাবকরা সহজেই ঘরে বসেই শিশুদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে পারেন এবং দ্রুত ডেলিভারি পেতে পারেন।
এই পদক্ষেপ ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে, যেখানে নাগরিক সেবা দ্রুত, সহজ ও নিরাপদ।

আরও পড়ুন- অনলাইনে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।