বাংলাদেশে ট্রেন ভ্রমণ সবসময়ই জনপ্রিয় একটি পরিবহন মাধ্যম। তবে এখন থেকে যারা ট্রেনে যাতায়াত করবেন, তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ট্রেনে ভ্রমণের সময় এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি দেশের নিরাপত্তা ও যাত্রীদের সঠিক তথ্য যাচাই নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার সহজ নিয়ম
এনআইডি ছাড়া টিকিট কেনা বা ভ্রমণ নয়
রেল মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে যে, যাত্রীরা এখন থেকে অনলাইন ও কাউন্টার উভয় মাধ্যমেই টিকিট ক্রয়ের সময় এনআইডি নম্বর প্রদান করতে হবে।
👉 অর্থাৎ, আপনি যদি অনলাইন (eticket.railway.gov.bd) থেকে টিকিট কাটেন, তাহলে NID নম্বর ছাড়া টিকিট কেনা সম্ভব হবে না।
এছাড়া ট্রেনে ওঠার সময় চেকিং অফিসাররা এনআইডি কার্ড দেখতে চাইলে দেখাতে হবে, নতুবা যাত্রা বাতিল করা হতে পারে।
কেন এনআইডি বাধ্যতামূলক করা হলো?
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো—
-
ভুয়া টিকিট বিক্রি রোধ করা,
-
যাত্রীদের সঠিক তথ্য সংরক্ষণ করা,
-
নিরাপত্তা জোরদার করা,
-
অপরাধমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধ করা।
পূর্বে অনেক যাত্রী ভুয়া নাম বা অন্যের পরিচয়ে টিকিট সংগ্রহ করতেন। এখন এনআইডি বাধ্যতামূলক হওয়ায় প্রতিটি টিকিট যাত্রীর পরিচয়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, যা রেলওয়ের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে।
অনলাইনে টিকিট কেনার সময় কীভাবে এনআইডি দিতে হবে?
যদি আপনি বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা রেল অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটেন, তাহলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—
-
eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইটে লগইন করুন।
-
নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে এনআইডি নম্বর ও জন্মতারিখ দিতে হবে।
-
টিকিট বুকিং করার সময় যাত্রীর নাম ও NID স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকবে।
-
টিকিট ক্রয়ের পর ভ্রমণের দিন এনআইডি কার্ড সাথে নিতে হবে।
১৮ বছরের নিচের যাত্রীদের জন্য কী লাগবে?
১৮ বছরের নিচে যাদের NID নেই, তাদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
রেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিশু ও কিশোরদের তথ্যও পিতা-মাতার এনআইডি নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, যাতে যাত্রীর সঠিক তথ্য সহজে যাচাই করা যায়।
টিকিট চেকের সময় এনআইডি না থাকলে কী হবে?
যদি আপনি ট্রেনে ভ্রমণকালে এনআইডি কার্ড সঙ্গে না রাখেন বা তথ্য মিল না খায়, তাহলে—
-
কর্তৃপক্ষ আপনাকে জরিমানা বা টিকিট বাতিলের নোটিশ দিতে পারে,
-
প্রয়োজনে নেমে যেতে বলা হতে পারে,
-
এবং গুরুতর ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তাই ভ্রমণের আগে অবশ্যই মূল এনআইডি বা এর ডিজিটাল কপি (Smart ID / NID Wallet App) সঙ্গে রাখুন।
কবে থেকে কার্যকর হলো এই নিয়ম?
রেল মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, এই নিয়মটি ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে ধাপে ধাপে কার্যকর হচ্ছে।
প্রথমে এটি দূরপাল্লার ট্রেন সার্ভিসে প্রয়োগ করা হবে, পরে লোকাল ট্রেনগুলোতেও চালু করা হবে।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
অনেক যাত্রী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে,
“এনআইডি বাধ্যতামূলক করলে টিকিট কালোবাজারি ও ভুয়া যাত্রী সমস্যার অবসান ঘটবে।”
অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন,
“যাদের NID হারিয়ে গেছে বা এখনও তৈরি হয়নি, তাদের জন্য কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।”
তবে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাদের NID প্রক্রিয়াধীন, তারা জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্ট নম্বর ব্যবহার করে সাময়িকভাবে টিকিট নিতে পারবেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে রেলওয়ে
এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে একধাপ এগিয়ে গেল ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের পথে।
প্রতিটি যাত্রীর তথ্য কেন্দ্রীভূতভাবে সংরক্ষণ করার ফলে ভবিষ্যতে টিকিট জালিয়াতি, অননুমোদিত যাত্রা এবং সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
উপসংহার
রেল ভ্রমণ এখন আরও নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও আধুনিক হচ্ছে। তাই পরবর্তীবার ট্রেনে চড়ার আগে আপনার NID বা জন্মনিবন্ধন কার্ডটি সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। এই ছোট সচেতনতাই হতে পারে বড় অসুবিধা থেকে রক্ষার উপায়।
আরও পড়ুন-পিজি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর নিয়ম
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


