বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (TCB) দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে টিসিবি সরাসরি ডিলারদের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে থাকে। ফলে অনেক ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তার মনে প্রশ্ন আসে—
👉 টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা?
👉 ডিলাররা প্রতি কেজি বা প্রতি লিটার পণ্যে কত লাভ পান?
👉 এই কমিশন কি লাভজনক?
এই লেখায় টিসিবি ডিলার কমিশন সংক্রান্ত সব তথ্য সহজভাবে তুলে ধরা হলো।
আরও পড়ুন-টিসিবি ৩৬ জেলায় নতুন ডিলার নিয়োগ আবেদন শুরু যোগ্যতা শর্ত ও অনলাইন আবেদন
টিসিবি ডিলার কী?
টিসিবি ডিলার হলো সেই অনুমোদিত ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান, যারা সরকার নির্ধারিত দামে সাধারণ জনগণের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রি করে।
ডিলাররা মূলত—
-
ট্রাক সেল।
-
ওয়ার্ডভিত্তিক বিক্রয়।
-
ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে পণ্য বিতরণ।
এই তিনটি পদ্ধতিতে পণ্য সরবরাহ করে থাকেন।
টিসিবি ডিলার কমিশন কত টাকা?
বর্তমানে টিসিবি ডিলারদের কমিশন পণ্যভেদে নির্ধারিত হয়। সাধারণভাবে কমিশনের হার নিচের মতো—
পণ্যভিত্তিক কমিশন (প্রায় হিসাব)
| পণ্যের নাম | ডিলার কমিশন |
|---|---|
| সয়াবিন তেল | প্রতি লিটারে ২–৩ টাকা |
| চিনি | প্রতি কেজিতে ১.৫০–২ টাকা |
| মসুর ডাল | প্রতি কেজিতে ২ টাকা |
| ছোলা | প্রতি কেজিতে ১.৫০–২ টাকা |
| চাল (যদি থাকে) | প্রতি কেজিতে ১–১.৫০ টাকা |
| পেঁয়াজ (বিশেষ সময়) | প্রতি কেজিতে ১ টাকা |
👉 গড়ে একজন ডিলার প্রতিদিন ২,৫০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন আয় করতে পারেন, বিক্রির পরিমাণ ও পণ্যের ওপর নির্ভর করে।
টিসিবি ডিলার কমিশন কীভাবে দেওয়া হয়?
টিসিবি ডিলার কমিশন দেয়—
✔ পণ্যের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে যুক্ত করে।
✔ পণ্য উত্তোলনের সময় হিসাব নির্ধারণ করা হয়।
✔ নির্ধারিত কমিশন বাদ দিয়েই ডিলার পণ্যের মূল্য পরিশোধ করেন।
অর্থাৎ আলাদা করে পরে কমিশন দেওয়া হয় না—কমিশন মূল দামের মধ্যেই সমন্বয় করা থাকে।
একজন ডিলার মাসে কত টাকা আয় করতে পারেন?
গড় হিসাব অনুযায়ী—
-
দৈনিক কমিশন: ৩,০০০ – ৫,০০০ টাকা।
-
মাসে (২০–২৫ দিন): ৬০,০০০ – ১,২০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
⚠ তবে মনে রাখতে হবে—
-
এটি স্থায়ী ব্যবসা নয়।
-
পণ্য বিক্রি সব মাসে হয় না।
-
রমজান বা বিশেষ সময়ে আয় বেশি হয়।
টিসিবি ডিলার হতে কী কী খরচ আছে?
যদিও কমিশন রয়েছে, তবে ডিলারদের কিছু খরচও বহন করতে হয়—
-
শ্রমিক খরচ।
-
পরিবহন ও লোড-আনলোড।
-
ট্রাক ভাড়া (কখনো নিজ দায়িত্বে)।
-
সময় ও প্রশাসনিক ঝামেলা।
এই খরচ বাদ দিয়েই প্রকৃত লাভ হিসাব করতে হয়।
টিসিবি ডিলার কমিশন কি পরিবর্তন হয়?
হ্যাঁ।
ডিলার কমিশন—
✔ পণ্যের ধরন।
✔ বাজার পরিস্থিতি।
✔ সরকারের সিদ্ধান্ত।
এই তিনটির ওপর ভিত্তি করে সময় সময় বাড়ানো বা কমানো হয়। রমজান বা দুর্যোগকালে কমিশন কিছুটা সমন্বয় করা হয়।
টিসিবি ডিলারদের জন্য কমিশনের গুরুত্ব
✔ ডিলারদের আগ্রহ ধরে রাখা।
✔ নিয়মিত ও সুশৃঙ্খল বিক্রয় নিশ্চিত করা।
✔ ভোক্তার কাছে পণ্য পৌঁছানো সহজ করা।
✔ বাজারে কৃত্রিম সংকট কমানো।
ডিলার কমিশন না থাকলে এই বিশাল বিতরণ ব্যবস্থা কার্যকর রাখা সম্ভব হতো না।
টিসিবি ডিলার কমিশন নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন
১) টিসিবি ডিলার কমিশন কি নগদ দেওয়া হয়?
না, কমিশন পণ্যের মূল দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়।
২) কমিশন কি সব জেলায় এক রকম?
হ্যাঁ, সাধারণত সারাদেশে কমিশনের হার একই থাকে।
৩) কমিশন কি নিয়মিত বাড়ে?
না, প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার নির্ধারণ করে।
৪) কমিশন ছাড়া কি অতিরিক্ত লাভ করা যায়?
না। নির্ধারিত মূল্যের বেশি নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
উপসংহার
টিসিবি ডিলার কমিশন খুব বেশি না হলেও এটি একটি নিরাপদ, স্বল্পঝুঁকির ও সম্মানজনক আয়ের উৎস। বিশেষ করে রমজান ও সংকটকালীন সময়ে ডিলাররা তুলনামূলক ভালো কমিশন পেয়ে থাকেন।
যারা সামাজিক দায়িত্বের পাশাপাশি সীমিত লাভে আগ্রহী—তাদের জন্য টিসিবি ডিলার হওয়া একটি বাস্তবসম্মত সুযোগ।
আরও পড়ুন- টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড অনলাইন আবেদন করার নিয়ম
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


