আমাদের Telegram চ্যানেলে যুক্ত হোন

বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন এখন পুরোপুরি ডিজিটাল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজেশন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। দেশের সামগ্রিক ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের অংশ হিসেবে বিয়ের কাবিননামা হোক বা তালাকের প্রয়োজনীয় নথি — সবকিছুই এখন ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে অনলাইন বা ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের আওতায়।

হাইকোর্ট নির্দেশে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং নিবন্ধনকারীদের (কাজী অফিস, সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ইত্যাদি) সকলকে ডিজিটাল সিস্টেম অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই—
👉 বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনকে স্বচ্ছ, নিরাপদ, দ্রুত ও নাগরিকবান্ধব করা।

আগে যেখানে জনগণকে কাজী অফিস বা স্থানীয় কার্যালয়ে বারবার যেতে হতো, এখন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে। এতে সময়, অর্থ ও হয়রানি নাটকীয়ভাবে কমে আসবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই নতুন ব্যবস্থাটি কেবল প্রযুক্তিগত উন্নয়নই নয়; বরং পরিবারের আইনি নিরাপত্তা, উত্তরাধিকার, নারীর অধিকার রক্ষা এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এক বড় অগ্রগতি।

আরও পড়ুন- প্রবাসীদের ডাকযোগে ভোটের সুযোগ ২০২৬ -কিভাবে নিবন্ধন করবেন?

বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন কেন ডিজিটাল করা হচ্ছে?

ডিজিটালাইজেশনের মূল লক্ষ্যগুলো হলো:

✅ ১. স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন হলে তথ্য পরিবর্তন, জালিয়াতি, নকল নথি তৈরির মতো অপরাধ কমে যাবে।

✅ ২. নাগরিক সেবা সহজ করা

মানুষ মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। লাইনে দাঁড়ানো বা কাজীর অফিসে দৌড়ঝাঁপ কমে যাবে।

✅ ৩. ডাটাবেজে স্থায়ী সংরক্ষণ

বিয়ে ও তালাকের তথ্য জাতীয় ডেটাবেজে সংরক্ষিত থাকবে, যা ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে সহজেই পাওয়া যাবে।

✅ ৪. নারীর অধিকার সুরক্ষা

ডিজিটাল রেকর্ডের কারনে তালাক সংক্রান্ত তথ্য গোপন বা বিলম্ব করার সুযোগ কমে যাবে — এতে নারীরা দ্রুত ও সঠিক নথির অধিকার পাবেন।

ডিজিটাল বিয়ে নিবন্ধনে কী সুবিধা পাবেন?

✔ অনলাইনে কাবিননামা রেজিস্ট্রেশন।

✔ ডিজিটাল সনদ ডাউনলোড।

✔ জাতীয় ডাটাবেজে স্থায়ী রেকর্ড।

✔ যাচাইযোগ্য QR কোড সনদ।

✔ কাজীর অফিসে ধাপ কমে যাওয়া।

✔ বিদেশে ভিসা/ইমিগ্রেশনে সনদ যাচাই সহজ।

ডিজিটাল তালাক নিবন্ধনে কী সুবিধা?

✔ অনলাইনে তালাক নোটিশ জমা।

✔ ডিজিটাল সার্টিফিকেট সংগ্রহ।

✔ তথ্য দ্রুত পৌরসভা/উপজেলায় পৌঁছানো।

✔ আইনগত সমস্যা কমে যাওয়া।

✔ স্বামী–স্ত্রী উভয়ের জন্য নোটিফিকেশন সিস্টেম।

✔ সন্তানের অভিভাবকত্ব বা সম্পদ বিষয়ক অধিকার সহজে প্রমাণ করা সম্ভব।

কিভাবে ডিজিটাল বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন করা হবে?

হাইকোর্ট নির্দেশ অনুযায়ী সরকার বিস্তারিত নীতি তৈরি করবে। সম্ভাব্য ধাপ হতে পারে—

১. অনলাইন পোর্টালে প্রবেশ

সরকার একটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অ্যাপ চালু করবে।

২. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) যাচাই

উভয় পক্ষের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই হবে।

৩. বিয়ে/তালাকের তথ্য পূরণ

  • স্বামী/স্ত্রীর তথ্য।

  • অভিভাবক তথ্য।

  • সাক্ষীর তথ্য।

  • কাজীর তথ্য (বিয়ের ক্ষেত্রে)

4. ডিজিটাল সিগনেচার বা OTP ভেরিফিকেশন

স্থানীয় কাজী/প্রশাসনের মাধ্যমে অনুমোদন।

৫. ডিজিটাল সনদ পাওয়া

পিডিএফ বা QR-কোডসহ সনদ পাওয়া যাবে।

এই সিদ্ধান্তে কী পরিবর্তন আসবে?

⭐ কাজী অফিসের ভূমিকা আধুনিক হবে।

⭐ গ্রামের মানুষও অনলাইনে সেবা পাবে।

⭐ বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও বিয়ে/তালাক রেজিস্টার করতে পারবে।

⭐ ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে।

⭐ জাল কাবিননামা বা ভুয়া তালাক নোটিশ প্রায় বন্ধ হবে।

প্রশ্নোত্তর

১. বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন কি এখনই পুরোপুরি ডিজিটাল হয়েছে?

না, হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে — এখন সরকার বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে।

২. অনলাইনে কি সম্পূর্ণ বিয়ে সম্পন্ন করা যাবে?

বিয়ে সম্পন্ন হবে অফলাইনে, কিন্তু নিবন্ধন হবে ডিজিটাল।

৩. ডিজিটাল কাবিননামা কি বিদেশে গ্রহণযোগ্য?

QR-কোড যাচাইযোগ্য হলে অধিকাংশ দেশে গ্রহণযোগ্য হবে।

৪. তালাক নিবন্ধন কি অনলাইনে করা যাবে?

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এটি ডিজিটাল হবে এবং অনলাইন প্রক্রিয়া যোগ হবে।

৫. নাগরিকদের জন্য এটি কখন থেকে কার্যকর হবে?

সরকারি পোর্টাল তৈরির পরই ধাপে ধাপে চালু হবে।

উপসংহার

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ডিজিটালাইজেশন বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের এক বড় পদক্ষেপ। এর ফলে নাগরিকদের সেবা পাওয়া সহজ হবে, প্রতারণা কমবে এবং আইনি সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে। বিশেষ করে নারীর অধিকার রক্ষায় এটি বিশাল অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পারিবারিক নথি ব্যবস্থাকেও আধুনিক করার এই সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই দেশের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

আরও পড়ুন-বোয়েসেল বিদেশি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!

আরও পড়ুন-কোন দেশের ভিসা সহজ, জীবনযাপন আরামদায়ক এবং বেতন সর্বোচ্চ

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।