সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে—“সিটি ব্যাংক ৩ বছরে কৃষকদের ৫ হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল ঋণ দিয়েছে”।কিন্তু বাস্তবে এই তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক নয়।
👉 এই ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ কোনো নির্দিষ্ট কৃষি ঋণ কর্মসূচি নয়।
👉 এটি ছিল বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়া সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ন্যানো লোন।
আরও পড়ুন-সহজে বিকাশ সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
এই ডিজিটাল লোনটি কী?
এই লোনটি হচ্ছে—
-
সিটি ব্যাংক পরিচালিত একটি ডিজিটাল ঋণ পণ্য।
-
বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে নেওয়া যায়।
-
কোনো জামানত বা কাগজপত্র লাগে না।
-
ব্যাংক শাখায় যেতে হয় না।
-
সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমোদিত।
একে সাধারণভাবে বলা হয় ডিজিটাল ন্যানো লোন, যা মূলত অল্প অঙ্কের কিন্তু দ্রুত প্রয়োজনীয় ঋণের সমাধান।
৫ হাজার কোটি টাকার হিসাবটি কীভাবে এসেছে?
গত প্রায় ৩ বছরের মধ্যে—
-
বিকাশ অ্যাপে থাকা এই ডিজিটাল লোন ফিচারের মাধ্যমে।
-
সিটি ব্যাংক মোট ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ বিতরণ করেছে।
-
এই ঋণ নেওয়া হয়েছে লাখো গ্রাহকের মাধ্যমে।
-
একজন গ্রাহক একাধিকবার এই লোন নিতে পেরেছেন।
অর্থাৎ এটি একটি ধারাবাহিক ডিজিটাল ঋণ কার্যক্রম, একবারে দেওয়া কোনো তহবিল নয়।
কারা এই লোন পেয়েছেন?
এই লোনটি শুধুমাত্র কৃষকদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল না।
বরং এটি পেয়েছেন—
-
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী
-
দোকানদার
-
ফ্রিল্যান্সার
-
দিনমজুর
-
চাকরিজীবী
-
গ্রামীণ ও শহুরে সাধারণ বিকাশ ব্যবহারকারী
👉 ফলে কৃষকরাও এর আওতায় পড়েছেন, কিন্তু এটি কৃষি ঋণ হিসেবে চালু করা হয়নি।
কীভাবে বিকাশ অ্যাপে এই লোন কাজ করে?
এই ডিজিটাল লোন ব্যবস্থাটি মূলত ডেটা-নির্ভর।
ব্যবস্থাটি যেভাবে কাজ করে—
1️⃣ বিকাশ অ্যাপের লেনদেন ইতিহাস বিশ্লেষণ।
2️⃣ গ্রাহকের অর্থনৈতিক আচরণ মূল্যায়ন।
3️⃣ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঋণের যোগ্যতা নির্ধারণ।
4️⃣ নির্ধারিত লোন লিমিট দেখানো।
5️⃣ সম্মতি দিলে সঙ্গে সঙ্গে টাকা বিকাশ ব্যালান্সে জমা।
সবকিছু হয় কয়েক মিনিটের মধ্যেই।
লোনের পরিমাণ কত?
সাধারণত এই ডিজিটাল লোনে—
-
সর্বনিম্ন অঙ্ক: ৫০০ টাকা
-
সর্বোচ্চ অঙ্ক: ৫০,০০০ টাকা (যোগ্যতা অনুযায়ী)
গ্রাহকের ব্যবহার ও পরিশোধের ইতিহাস ভালো হলে
👉 ভবিষ্যতে লোন লিমিট বাড়তেও পারে।
এই লোনের মূল সুবিধাগুলো
✅ ১. জামানত ছাড়াই ঋণ
কোনো জমি, দলিল বা গ্যারান্টর লাগে না।
✅ ২. ব্যাংকে যেতে হয় না
সব কাজ মোবাইল অ্যাপেই সম্পন্ন।
✅ ৩. দ্রুত টাকা পাওয়া
জরুরি প্রয়োজনে সঙ্গে সঙ্গে অর্থ সহায়তা।
✅ ৪. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি
যারা আগে কখনো ব্যাংক ঋণ পায়নি, তারাও সুযোগ পাচ্ছে।
এই ঋণ কী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে?
গ্রাহকেরা এই লোন ব্যবহার করছেন—
-
ব্যবসার মূলধন হিসেবে।
-
চিকিৎসা খরচে।
-
শিক্ষার ব্যয়ে।
-
জরুরি পারিবারিক প্রয়োজনে।
-
ছোটখাটো বিনিয়োগে।
এটি মূলত দৈনন্দিন আর্থিক চাপ সামলানোর একটি কার্যকর সমাধান।
ভুল ধারণা কেন তৈরি হলো?
অনেক নিউজ ও সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে—
-
“কৃষকদের ডিজিটাল লোন”।
-
“কৃষি ঋণ কর্মসূচি”।
এই ধরনের শব্দ ব্যবহারের কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
👉 বাস্তবে এটি বিকাশ–সিটি ব্যাংকের যৌথ ডিজিটাল ন্যানো লোন,
👉 যা সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত।
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে বড় অগ্রগতি
এই উদ্যোগ প্রমাণ করে—
-
ব্যাংকিং এখন আর শুধু শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
-
মোবাইল ফোনই এখন ক্ষুদ্র ঋণের সবচেয়ে বড় মাধ্যম।
-
ডিজিটাল আর্থিক সেবা দেশের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করছে।
সিটি ব্যাংক ও বিকাশের এই যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশের ডিজিটাল ফাইন্যান্স ইকোসিস্টেমে একটি রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
উপসংহার
৫ হাজার কোটি টাকার এই ঋণ কোনো আলাদা কৃষি প্রকল্প নয়।এটি ছিল বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে সিটি ব্যাংকের দেওয়া ডিজিটাল ন্যানো লোন,যা লাখো সাধারণ মানুষকে সহজ ও দ্রুত আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
আরও পড়ুন-অনলাইনে পূবালী ব্যাংকের হোম লোন পেতে চান?
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


