প্রতি বছরই লাখো মানুষ যুক্তরাষ্ট্রের ডাইভারসিটি ভিসা লটারি (Diversity Visa Lottery) বা সংক্ষেপে ডিভি লটারি (DV Lottery)-এর জন্য অপেক্ষা করে থাকে। এটি এমন একটি প্রোগ্রাম যেখানে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বের নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে মানুষকে বৈধভাবে স্থায়ীভাবে বসবাসের (Green Card) সুযোগ দেয়।
কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর (U.S. Department of State) ঘোষণা করেছে যে, বাংলাদেশসহ মোট ১৯টি দেশকে এবারের ডিভি লটারি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-বোয়েসেল বিদেশি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
❗ কেন বাদ পড়লো বাংলাদেশ?
ডিভি লটারির মূল উদ্দেশ্য হলো — যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন (immigration) সংখ্যা খুব কম, সেই দেশগুলোর মানুষকে আমেরিকায় সুযোগ দেওয়া।
কিন্তু বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে নিয়মিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বেশি সংখ্যক অভিবাসী পাঠিয়েছে, অর্থাৎ “high immigration country” হিসেবে গণ্য হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী,
“যে দেশ থেকে গত পাঁচ বছরে ৫০,০০০ বা তার বেশি ইমিগ্রান্ট যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছে, সে দেশ ডিভি লটারি প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারবে না।”
এই মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই সেই সীমা অতিক্রম করেছে। ফলে ২০২৬ অর্থবছরের ডিভি প্রোগ্রাম (DV-2026)-এর জন্য বাংলাদেশ অযোগ্য (ineligible) দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে।
📅 কখন থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়েছে?
বাংলাদেশ প্রথমবার ডিভি লটারি থেকে বাদ পড়ে ২০১৩ সালের পর থেকে। কারণ, ওই সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে যায়।
তবে কিছু বছর মানুষ আশা করেছিল যে হয়তো আবার অন্তর্ভুক্ত হবে, কিন্তু ২০২5-26 সালের ঘোষণায়ও বাংলাদেশ আবার বাদ রয়ে গেছে।
🌐 বাদ পড়া দেশগুলোর তালিকা (২০২6 অর্থবছর অনুযায়ী)
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট অনুযায়ী নিম্নলিখিত ১৯টি দেশ ডিভি লটারির জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে —
-
Bangladesh
-
Brazil
-
Canada
-
China (including Hong Kong SAR)
-
Colombia
-
Dominican Republic
-
El Salvador
-
Haiti
-
Honduras
-
India
-
Jamaica
-
Mexico
-
Nigeria
-
Pakistan
-
Philippines
-
South Korea
-
Venezuela
-
Vietnam
-
United Kingdom (except Northern Ireland)
বাংলাদেশিদের জন্য বিকল্প কী?
যদিও বাংলাদেশ ডিভি লটারি থেকে বাদ পড়েছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য কিছু বিকল্প পথ রয়েছে —
১️⃣ কর্মভিত্তিক ভিসা (Work Visa)
যেমন — H-1B, L-1, বা EB-3 ক্যাটাগরির মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিরা চাকরির সুযোগ পেতে পারেন।
২️⃣ শিক্ষার্থী ভিসা (Student Visa – F-1)
উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করলে ভবিষ্যতে “Optional Practical Training (OPT)” বা “Green Card through Employment”-এর সুযোগ তৈরি হতে পারে।
৩️⃣ পরিবারভিত্তিক ইমিগ্রেশন (Family-Based Immigration)
যদি আপনার আত্মীয় বা পরিবারের কেউ যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক (U.S. Citizen) বা গ্রিনকার্ডধারী হন, তাহলে তাদের মাধ্যমে স্পন্সর হয়ে যাওয়া সম্ভব।
৪️⃣ ইনভেস্টর ভিসা (EB-5)
যারা যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন (কমপক্ষে $800,000), তারা বিনিয়োগভিত্তিক গ্রিনকার্ডের আবেদন করতে পারেন।
⚠️ ভুয়া DV ওয়েবসাইট থেকে সাবধান!
বাংলাদেশ বাদ পড়ার পরও কিছু ভুয়া ওয়েবসাইট ও পেজ মানুষকে বিভ্রান্ত করে “DV লটারি আবেদন চালু” বলে প্রতারণা করছে। মনে রাখবেন —
ডিভি লটারির অফিসিয়াল সাইট কেবল একটিই: https://dvprogram.state.gov
এই সাইট ছাড়া অন্য কোথাও আবেদন বা ফি প্রদান করা সম্পূর্ণ প্রতারণা।
শেষ কথা
ডিভি লটারিতে অংশগ্রহণের স্বপ্ন অনেক বাংলাদেশির দীর্ঘদিনের। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশ বাদ পড়েছে, তবে এর মানে এই নয় যে ভবিষ্যতেও সুযোগ আসবে না।
যদি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন হার কমে, তাহলে আবারও eligible country হিসেবে ফিরে আসতে পারে।
ততদিন পর্যন্ত পড়াশোনা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও বৈধ উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার বিকল্প পথগুলো অনুসরণ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
আরও পড়ুন-কোন দেশের ভিসা সহজ, জীবনযাপন আরামদায়ক এবং বেতন সর্বোচ্চ
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔