কিভাবে ব্লুটুথের মাধ্যমে অন্য ফোনে ইন্টারনেট শেয়ার করবেন?

বর্তমান যুগে, ইন্টারনেট আমাদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলে অনেক কাজ সম্পন্ন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবে আপনি কি জানেন যে, আপনি ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করতে পারেন? এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি, বিশেষ করে যদি আপনার ওয়াইফাই হটস্পট বা ইউএসবি টেথারিং ব্যবহার করা সম্ভব না হয়। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে আপনি ব্লুটুথের মাধ্যমে সহজে ইন্টারনেট শেয়ার করতে পারেন।

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং: কী এবং কেন?

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং বলতে এমন একটি প্রক্রিয়া বোঝায়, যার মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ শেয়ার করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে অনেক সময় ব্লুটুথ টেথারিংও বলা হয়।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করার সুবিধা হলো, এটি খুব কম ডেটা ব্যবহার করে এবং ব্যাটারি খরচ কমিয়ে আনে। এছাড়াও, আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট স্থানে থাকেন যেখানে ওয়াইফাই বা মোবাইল ডেটা সেবা নেই, তখন ব্লুটুথ টেথারিং বেশ কার্যকর হতে পারে।

কেন ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ার করবেন?

ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করার মূল কারণগুলো হলো:

  1. ওয়াইফাই ব্যবহার সম্ভব না হলে – যদি আপনার ডিভাইস বা আশেপাশে কোনো ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক না থাকে, তবে ব্লুটুথ একটি সহজ সমাধান।
  2. ব্যাটারি সেভ করতে – ব্লুটুথ টেথারিং হটস্পটের তুলনায় কম ব্যাটারি খরচ করে।
  3. কম ডেটা ব্যবহার – ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং ধীরগতি ইন্টারনেট স্পিড দেয়, তবে এটি কম ডেটা ব্যবহার করে।

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং কিভাবে কাজ করে?

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং করতে গেলে, দুটি ডিভাইসের মধ্যে একটি ডিভাইস ইন্টারনেট সরবরাহ করে এবং অন্যটি সেই সংযোগ ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়াটি মূলত টেথারিং নামে পরিচিত। ব্লুটুথ টেথারিং এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল ডিভাইসটি একটি ওয়্যারলেস মডেমের মত কাজ করবে।

কিভাবে ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করবেন – ধাপে ধাপে নির্দেশিকা

এখানে আমরা দেখাব কিভাবে Android এবং iOS উভয় ডিভাইসের ক্ষেত্রে ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করতে হয়।

Android ফোনের ক্ষেত্রে

১. প্রথম ধাপ:
আপনার Android ডিভাইসে ব্লুটুথ চালু করতে হবে। এজন্য আপনার ফোনের “Settings” মেনুতে যান এবং “Bluetooth” অপশনটি খুঁজে বের করুন। এটি চালু করে দিন।

২. দ্বিতীয় ধাপ:
এরপর, “Settings” এ গিয়ে “Connections” বা “Network & Internet” অপশনে যান। তারপর “Hotspot & tethering” অপশনে ক্লিক করুন।

৩. তৃতীয় ধাপ:
সেখানে আপনি “Bluetooth tethering” নামক একটি অপশন দেখতে পাবেন। এটিকে অন করে দিন। এটি আপনার ডিভাইসকে ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করার জন্য প্রস্তুত করবে।

৪. চতুর্থ ধাপ:
এবার, আপনি যে ডিভাইসে ইন্টারনেট শেয়ার করতে চান, সেখানে ব্লুটুথ চালু করুন এবং প্রথম ডিভাইসটির সাথে পেয়ার করুন। দুই ডিভাইসের ব্লুটুথ কানেকশন তৈরি হয়ে গেলে, দ্বিতীয় ডিভাইসটি প্রথম ডিভাইস থেকে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পাবে।

৫. পঞ্চম ধাপ:
অন্য ডিভাইসে ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং সক্রিয় হওয়ার পর, আপনি সহজেই ব্রাউজ করতে পারবেন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

iOS ডিভাইসের ক্ষেত্রে

১. প্রথম ধাপ:
আপনার iPhone বা iPad ডিভাইসে ব্লুটুথ চালু করুন। এজন্য “Settings” থেকে “Bluetooth” অপশনে গিয়ে এটি অন করুন।

২. দ্বিতীয় ধাপ:
এরপর, “Settings” এ গিয়ে “Personal Hotspot” অপশনে ক্লিক করুন এবং “Allow Others to Join” অপশনটি চালু করুন।

৩. তৃতীয় ধাপ:
অন্য ডিভাইসটিকে আপনার iPhone বা iPad এর সাথে ব্লুটুথের মাধ্যমে পেয়ার করুন। পেয়ার করার পর, দ্বিতীয় ডিভাইসটি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতে পারবে।

৪. চতুর্থ ধাপ:
ব্লুটুথ টেথারিং সফলভাবে সক্রিয় হওয়ার পর, আপনি অন্য ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ার করার সুবিধা ও অসুবিধা

ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিংয়ের সুবিধা এবং কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিচে আমরা সেগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছি:

সুবিধা:

  • ব্যাটারি সাশ্রয়ী: ব্লুটুথ টেথারিং ওয়াইফাই হটস্পটের তুলনায় অনেক কম ব্যাটারি খরচ করে।
  • সহজ পদ্ধতি: খুব সহজেই ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করা যায়।
  • কম ডেটা খরচ: ব্লুটুথের মাধ্যমে ডেটা খরচ তুলনামূলক কম হয়।
  • কেবল ছাড়া সংযোগ: এটি একটি ওয়্যারলেস সংযোগ প্রদান করে, ফলে কোনো কেবলের ঝামেলা নেই।

অসুবিধা:

  • ধীরগতি ইন্টারনেট: ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট স্পিড কিছুটা ধীর হতে পারে। উচ্চ গতির ইন্টারনেটের জন্য এটি উপযুক্ত নয়।
  • সীমিত রেঞ্জ: ব্লুটুথ সংযোগের কার্যকারিতা মাত্র কয়েক মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
  • একাধিক ডিভাইস সংযোগের সীমাবদ্ধতা: একাধিক ডিভাইস একসাথে ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ার করা কঠিন।

কিভাবে ইন্টারনেট শেয়ারিংয়ের সময় ব্যাটারি সাশ্রয় করবেন?

ইন্টারনেট শেয়ারিং করলে ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হতে পারে। তাই আপনাকে ব্যাটারি সাশ্রয় করার কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে:

  1. লো ব্যাটারি মোড চালু করুন: যখন ব্লুটুথ টেথারিং করছেন, আপনার ফোনের লো ব্যাটারি মোড চালু করুন।
  2. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করুন: ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো বন্ধ করে দিন।
  3. স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমান: ফোনের স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে রাখুন, এতে ব্যাটারি সাশ্রয় হবে।

কিছু সাধারণ সমস্যা ও সমাধান

১. ব্লুটুথ পেয়ারিং ব্যর্থ হলে কী করবেন?

  • প্রথমে নিশ্চিত করুন যে দুই ডিভাইসের ব্লুটুথ চালু আছে এবং দুটি ডিভাইস কাছাকাছি রয়েছে।
  • ফোনের ব্লুটুথ সেটিংস থেকে পেয়ার করা ডিভাইসগুলো রিফ্রেশ করুন এবং আবার চেষ্টা করুন।

২. ইন্টারনেট ধীরগতি পেলে কী করবেন?

  • ব্লুটুথ ইন্টারনেট শেয়ারিং সাধারণত ধীরগতি ইন্টারনেট প্রদান করে। আপনি যদি উচ্চ গতির ইন্টারনেট চান, তাহলে ওয়াইফাই হটস্পট ব্যবহার করতে পারেন।

উপসংহার

ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করা একটি সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি, বিশেষ করে যখন ওয়াইফাই বা অন্যান্য পদ্ধতি সহজলভ্য নয়। এটি ব্যাটারি সাশ্রয়ী এবং সহজেই ব্যবহারযোগ্য একটি প্রযুক্তি। আশা করি, এই ব্লগটি আপনাকে ব্লুটুথের মাধ্যমে ইন্টারনেট শেয়ার করার সম্পূর্ণ ধারণা দিয়েছে।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

অটোমেশন কি? অটোমেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ
কম্পিউটার সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর
কম্পিউটারে বাংলা লেখার নিয়ম

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️IMO চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।