বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা–বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সকলের নিকট পরিচিত যা পূর্বে ছিল না। টাকা লেনদেন করতে হলে আগে ব্যাংকে গিয়ে সশরীরে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তোলা অথবা টাকা লেনদেন করতে হতো। ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কিত নীতিমালা জারি করে। এই নীতিমালায় কিছু নির্দিষ্ট বিষয়কে তুলে ধরা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালা আইনের মধ্য বলা হয় মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো নিজস্ব ব্যাংকিং ব্যবসা করতে পারবেনা এবং গ্রাহকের স্বার্থ অন্যকারী এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা প্রদান করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে।
মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক হলেও বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনেকেরই নেই। তাই আজকে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পারবেন বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এ বাংলাদেশের অবস্থান কেমন।
মোবাইল ব্যাংকিং কি
মোবাইল ব্যাংকিং হলো মোবাইল বা স্মার্টফোন দ্বারা বা ট্যাবলেটের মাধ্যমে গ্রাহক যে সকল আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করে তাকে বোঝায়। ধরন আপনি ঘরে বসে ব্যালেন্স চেক করতে চান বিল পেমেন্ট করতে চান কিংবা টাকা ট্রান্সফার করতে চান এই কাজগুলো আপনি ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন।ঘরে বসে নিজের মোবাইল থেকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টাকা লেনদেন করার মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং।
অর্থাৎ কোন মোবাইল অথবা ট্যাবলেট থেকে যখন কোন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারকারী গ্রাহক ইন্টারনেটের সাহায্যে অর্থের লেনদেন করবে তখন সেই মাধ্যমকেই বলা হয় মোবাইল ব্যাংকিং।মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা হচ্ছে এমন একটি পরিষেবা যা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত গ্রাহকদের স্মার্টফোন অথবা ফিচার ফোন বা ট্যাবলেট এর মত মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে দুর নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করে।অর্থাৎ একজন গ্রাহক মোবাইল এর মাধ্যমে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে।
মোবাইল ব্যাংকিং আর্থিক লেনদেনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে ব্যাংকিং এর বিভিন্ন রকম কাজ করার জন্য এক গ্রাহককে ব্যাংকে যেতে হয় না তিনি ঘরে বসে তার স্মার্টফোনের মাধ্যমে তা করতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা বেশি থাকায় দিন দিন এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মোবাইল ব্যাংকিং এ নতুন নতুন কার্যক্রম যোগ হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ২৪ ঘন্টা যাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা কি
মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা বলতে এমন কতগুলো নির্দিষ্ট বিষয়কে বোঝানো হয় যা মোবাইল ব্যাংকিং এর আওতাভুক্ত। অর্থাৎ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কোন কোন কাজগুলো করা যাবে কোন কোন কাজগুলো করা যাবে না তাই মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা। একজন ব্যবসায়ী মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা করার ক্ষেত্রে এই সব নীতিমালা গুলো মেনে চলতে হয় যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হয়ে থাকে। মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা কেউ অমান্য করলে তার যথাযথ শাস্তি হবে আইন অনুযায়ী।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাংকিং যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে। ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করে। তাদের এই সেবার নাম বর্তমানে রকেট নামে পরিচিত।পরে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু করে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে নগদ নামে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে সরকারের ডাক বিভাগ।
বাংলাদেশ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) রেগুলেশন ২০১৮ শীর্ষক নীতিমালা ২০১২ সালে জারি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালায় বলা হয়েছে মানি লন্ডারিং সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও হুন্ডি প্রতিরোধে প্রচলিত মানি লন্ডারিং আইন সকলকে মেনে চলতে হবে।সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ এমএফএস এর লাইসেন্স দেবে। যদি গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুন্ন করার মতো কোনো কাজ করা হয় বা কোন অপরাধ করা হয় তাহলে উক্ত লাইসেন্স বাতিল করতে অধিকার রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এরপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালার পরিবর্তন করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে বিকাশ নগদ রকেট এমক্যাশহ বাংলাদেশের ১৫ টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা গ্রাহককে প্রদান করছে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নয় দশমিক ৯০ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরো একটি তথ্য মতে টাকা জমা দেওয়া টাকা উত্তোলন করা টাকা স্থানান্তর করা বিল পরিশোধ করা মোট ৮৯ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট গ্রাহক সংখ্যা ১১ কোটি ৮ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ছয় কোটি ৪১ লক্ষ ৭৬ হাজার এবং মহিলা রয়েছে ৪ কোটি ৬৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ২৪৮ জন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট এজেন্টের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৫২ জন।
কেন্দ্রীয় সরকারের মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা জারি
বাংলাদেশ মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এম এফ এস রেগুলেশন্স ২০১৮ শীর্ষক আইন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালায় বলা হয়েছে ব্যাংকের কমপক্ষে ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকতে হবে মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে।মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কোনভাবেই কোন ঋণ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
তবে যদি কোন ব্যাংকের অনুমোদন কৃত ঋণ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিতরণ এবং কিস্তি আদায় করা হয় তাহলে সেটা বৈধ হবে।কোন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা এবং টাকা উত্তোলন ছাড়া অন্য কোন ধরনের লেনদেন করতে পারবেনা। সুনির্দিষ্ট প্রসেসিং এর মাধ্যমে (এম এফ এস) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের লাইসেন্স দিবে।তবে যদি কেউ গ্রাহকের স্বার্থহীনও কর কোন কাজ বা গুরুতর অপরাধ করে তাহলে সেই লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে cross border লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ কিন্তু ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স সংগ্রহ করে দেশে বিতরণ করা যাবে। মানি লন্ডারিং সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও হুন্ডি প্রতিরোধে প্রচলিত মানি লন্ডারিং আইন সকলকেই মেনে চলতে হবে এম এফ এস গুলোকে। তবে এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর একাউন্টে গ্রাহকরা টাকা জমাতে পারবেন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক অবস্থান করতে পেরেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের সংখ্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বাধিক।বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী ইতিবাচক ব্র্যান্ডিংয়ে বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং এর গুরুত্ব অপরিসীম।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং এ দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ 700 কোটি টাকার ও উর্ধ্বে যা বছরে ২ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা ভোগ করে।বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ নির্ণয়ের মানুষগুলো বেশি উপকৃত হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে। যারা ছোট ছোট ব্যবসা করে লাভবান হতে চায় তাদের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাটি খুবই উপকৃত একটি ব্যবস্থা।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার সূত্রপাত
মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা চালু হওয়ার পূর্বে টাকা লেনদেন টাকা ক্যাশ করতে অফিশিয়ালি ব্যাংকে যেতে হতো গ্রাহককে যাতে সময়ের অপচয় এবং শারীরিক অস্বস্তি হতো। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ৯০ দশকের পর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এর যাত্রা শুরু। অল্প সময়ের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রাহকের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।
মোবাইল ব্যাংকিং যাত্রা শুরু করে খুব বেশিদিন হয়নি। স্মার্টফোন আসার পরে মোবাইল ব্যাংকিং এর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯০ সালে স্মার্টফোন আবিষ্কার হয় এবং স্মার্টফোনের প্রচলন হয় এবং 1999 সালের পর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা তাদের যাত্রা শুরু করে। তবে ১৯৯৯ সালে এসএমএসের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা চালু ছিল কিন্তু তা বিস্তার লাভ করেনি সেটি এসএমএস ব্যাংকিং নামে পরিচিত ছিল। এরপর ২০১০ সালে স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট বিস্তার লাভ করলে মোবাইল ব্যাংকিং এর প্রচলন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
২০০২ সালে ভারতের সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয় যা ট্রানজাকশন এসএমএস এর মাধ্যমে করা হতো।
ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংক লিমিটেডের(বর্তমানের রকেট নামে পরিচিত) মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মোবাইল ব্যাংকিং এর যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ ।২০১১ সালে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে সিটি সেল ও বাংলা লিংক অপারেটর ব্যবহারকারীরা এই সেবা পায়।
রাজধানীর একটি হোটেল হোটেল পূর্বানীতে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবার উদ্বোধন হয়। এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড আতিউর রহমান।
তৎকালীন সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং আত্মপ্রকাশ করার পর মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা জমা দান, টাকা উত্তোলন, কেনাকাটা বিল পরিশোধ, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, বেতন ভাতা উত্তোলন, রেমিটেন্স বিতরণ, সরকারি অনুদান প্রাপ্তি, তহবিল স্থানান্তর, মোবাইল তাৎক্ষণিক ব্যালেন্স রিচার্জ করা ইত্যাদি সেবা দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এ আরো অনেক ধরনের পরিষেবা যোগ হয়েছে।
বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি
বাংলাদেশে বর্তমানে অনেক নতুন নতুন মোবাইল ব্যাংকিং আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশের বর্তমানে ২২ টির মতো মোবাইল ব্যাংকিং রয়েছে যার মাধ্যমে মানুষ লেনদেন করে। এর মধ্য কিছু কিছু মোবাইল ব্যাংকিং অধিক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সমূহ কি কি
বাংলাদেশে বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এর পরিমাণ অনেক। বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলকভাবে সুযোগ-সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং গুলো হল;
১) বিকাশ- ব্রাক ব্যাংক।
২) নগদ- ডাক বিভাগ।
৩) রকেট- ডাচ বাংলা ব্যাংক।
৪) শিওর ক্যাশ- রুপালী ব্যাংক।
৫) রেডি ক্যাশ- জনতা ব্যাংক।
৬) ইউ ক্যাশ (উপায়)-ইউসিবি ব্যাংক।
৭) এম ক্যাশ- ইসলামী ব্যাংক।
৮) মাই ক্যাশ- মার্কেন্টাইল ব্যাংক।
৯) ওকে ওয়ালেট- ওয়ান ব্যাংক।
১০) ট্যাপ- ট্রাস্ট ব্যাংক।
১১) এজেন্ট ব্যাংকিং- ব্যাংক এশিয়া।
১২) পল্লী লেনদেন- পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক।
১৩) ট্যাপ এন পে- মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড।
১৪) টেলিক্যাশ- সাউথইস্ট ব্যাংক।
১৫) ইসলামিক ওয়ালেট- আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক।
১৬) আই ব্যাংকিং- এবি ব্যাংক।
১৭) সিটি টার্চ- সিটি ব্যাংক।
১৮) আমার অ্যাকাউন্ট- আই এফ আইসি ব্যাংক।
১৯) জাস্ট পে- যমুনা ব্যাংক।
২০) স্কাই ব্যাংকিং- ইয়েস্টার্ন ব্যাংক।
২১) ডিবিএল গো- ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড।
২২) পি মানি- প্রিমিয়ার ব্যাংক।
বিশ্বে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা চালু হয় কোন দেশ
এক কথায় বলতে গেলে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করে বিশ্বের যে দেশটি সেটি হল কেনিয়া।২০০৭ সালে ভোডাফোন এবং সাফারি কম এম পেসা চালু হওয়ার পর ক্যানিয়ায়বিশ্বের মধ্যে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করে। যা অল্প সময়ের মধ্যেও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। কারণ এই মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবাটির যোগ্যতার সাথে এবং গ্রাহককে সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করার মাধ্যমে বিশ্বে জায়গা তৈরি করে।
এটি চালু হওয়ার পর গ্রাহকরা ব্যাংকের শাখা কিংবা এটিএম এ না গিয়ে সহজেই আর্থিক পরিষেবা এক্সেস করতে পারে। এম পেশা তৎকালীন সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে সফলতম মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম হয়ে উঠে। কেনিয়াতে ১৫ মিলিয়ন এর বেশি গ্রাহক এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে। প্রযুক্তি এবং ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিকশিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে এই মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা।
বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত
বিকাশ
2011 সালের ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃক বিকাশের যাত্রা শুরু হয়। যেকোনো অপারেটর থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিকাশে লেনদেন করা হয়। বিকাশের লেনদেনের কোড হচ্ছে *২৪৭#।এই কোডটি ডায়াল করে যে কোন মোবাইল থেকে গ্রাহকরা সহজেই বিকাশের সকল ধরনের সেবা পেতে পারেন। এছাড়াও রয়েছে বিকাশ অ্যাপ যা থেকে বিকাশের সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। সেন্ড মানি, অ্যাড মানি, মোবাইল রিচার্জ, বিল পে, ক্যাশ আউট, পেমেন্ট, ব্যালেন্স চেকিং, ব্যাংকের টাকা উত্তোলন সহ যাবতীয় সেবা বিকাশের মাধ্যমে গ্রাহকরা পেয়ে যায়।
নগদ
গুগল ট্রেন্ডের মাধ্যমে জানা যায় বর্তমান সময়ে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় নগদের জনপ্রিয়তা বেশি। ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর ডাক বিভাগ কর্তৃক নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর সূচনা ঘটে। নগদের মাধ্যমে ও যেকোনো মোবাইল ফোন বা অপারেটর থেকে গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পায়। দেশের যেকোনো স্থান থেকে টাকা পাঠানো, টাকা উত্তোলন, টাকা যোগ করা, মোবাইল রিচার্জ, পেমেন্ট, ক্যাশ আউট, বিল পে ইত্যাদি সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা নগদে রয়েছে।
রকেট
অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর থেকে রকেটের ফ্যাসিলিটি একটু ভিন্ন কারণ রকেটের শুধুমাত্র ক্যাশ ইন বাশ আউটি করা যায় না। এর সাথে মার্চেন্ট পেমেন্ট, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, বেতন বিতরণ, বৈদেশিক রেমিটেন্স গ্রহণ, সরকারি ভাতা বিতরণ, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ইত্যাদি সেবা পাওয়া যায়। ডান্স বাংলা মোবাইল ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বর্তমানে গ্রাহকের কাছে অধিক পরিচিতি লাভ করেছে।
ইউ ক্যাশ
UCB ২০১৩ সালে ইউ ক্যাশ নামে এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটির যাত্রা শুরু করে ইউসিবি মোবাইল ব্যাংকিং এর শাখা হিসেবে ইউ ক্যাশ চালু হয়। ইউসিবি ব্যাংকের সকল ধরনের সেবা ইউ ক্যাশের মাধ্যমে গ্রাহকরা পেয়ে থাকে।
শিওর ক্যাশ
রুপালী ব্যাংক লিমিটেডের শাখা হচ্ছে শিওর ক্যাশ যা ২০১৪ সালে তার যাত্রা শুরু করে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য শিওর ক্যাশ একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে ক্যাশ ইন, ক্যাশ আউট, বেতন বিতরণ, সরকারি ভাতা বিতরণ, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ইত্যাদি সকল ধরনের সেবা পাওয়া যায়।
টি ক্যাশ
টি ক্যাশ মূলত ট্রাস্ট ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। এটি ২০১৮ সালে তার কার্যক্রম শুরু করে। টিক্যাশের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গুলো হলো একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন, নগদ টাকা উত্তোলন, টাকা জমা দেওয়া, ফান্ড ট্রান্সফার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিউশন ও অন্য ফি জমা দেওয়া সেনা নৌ এবং বিমান বাহিনীতে নিয়োগ ফি দেওয়া। এর পাশাপাশি এই মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফি, ফরেন রেমিটেন্স ও বেতন বিতরণ অনলাইন মার্চেন্ট পেমেন্ট করা যায়।
রেডি ক্যাশ
জনতা ব্যাংক লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং হচ্ছে রেডি ক্যাশ। রেডি ক্যাশ বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গুলোর মধ্যে অন্যতম। রেডি ক্যাশ এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার যাবতীয় সুবিধাগুলো পাওয়া যায়।
ওকে ওয়ালেট
ওকে ওয়ালেট ওয়ান ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। ওকে ওয়ালেট ের মোবাইল ফোন দিয়ে টাকা লেনদেন করার জন্য একটি উত্তম মোবাইল ব্যাংকিং। ওকে ওয়ালেটের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সকল ধরনের সেবা পাওয়া যায়।
সোনালী ই ওয়ালেট
সোনালী এই ওয়ালেট একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। মোবাইলের মাধ্যমে যে কোন অপারেটর থেকে সোনালী ই ওয়ালেট এর সেবা পাওয়া যাবে। সোনালী ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান আছে সোনালী ই ওয়ালেট।
মাই ক্যাশ
মাই ক্যাশ মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম। মাই ক্যাশের মাধ্যমে গ্রাহক সহজেই যেকোনো স্থান থেকে টাকা উত্তোলন লেনদেন করতে পারবে তার হাতে থাকা ফোনটির মাধ্যমে।
টেলিক্যাশ
টেলিকাস্ট হচ্ছে সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম। এটিও একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী।
এম ক্যাশ
এম ক্যাশ ইসলামী ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যাকে বলা হয় এম ক্যাশ।
উপায়
Finteach limited দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম হচ্ছে উপায়।
বাংলা পে
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম হচ্ছে বাংলা পে। যা একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান।
ব্যাংক এশিয়া
এশিয়া ব্যাংকের দ্বারা পরিচালিত হলো ব্যাংক এশিয়া মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটি। মোবাইলের মাধ্যমে এশিয়া ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত এই ব্যাংক এশিয়া গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে।
বাংলাদেশ মোবাইল ব্যাংকিং কি কি সুবিধা প্রদান করে
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যাংকিং সেবা হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং। মোবাইল ব্যাংকিং বিভিন্ন ধরনের সুবিধা গ্রাহককে দিয়ে থাকে। গ্রাহকের টাকা লেনদেন ের সুবিধার্থে মোবাইল ব্যাংকিং নতুন নতুন সিস্টেম চালু করছে। গ্রাহক ঘরে বসেই তার ব্যাংকিং প্রয়োজনীয় কাজগুলো মোবাইল ব্যাংকিং এর সাহায্যে করতে পারছে সহজে। এজন্য তাকে ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে না।
মোবাইল ব্যাংকিং কি কি সুবিধা প্রদান করে এই সম্পর্কে আপনারা জানতে পারলে আপনাদের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করা সহজ হবে।
মোবাইল ব্যাংকিং বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রাহককে দিয়ে থাকে যেমন আর্থিক লেনদেন সুবিধা, অনলাইন এর মাধ্যমে বিভিন্ন রকম পেমেন্ট সুবিধা, আর্ধিক লেনদেন আয় ব্যয় এবং কত টাকা খরচ হলো তার হিসাব, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, বিভিন্ন বিল পরিশোধের সুবিধা, টিকিট বুকিং সুবিধা ইত্যাদি।
বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং প্রচুর সুবিধা দিয়ে আসছে যার কারণে মোবাইল ব্যাংকিং এর গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে দিনদিন। মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা সমূহ হল-
১) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবিধা হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক যেখানেই থাকুক না কেন তার স্মার্টফোনের সাহায্যে তিনি সব জায়গায় ব্যাংকিং এর সার্ভিস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন ২৪ ঘন্টা।
২) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহক তার একাউন্টে থাকা ব্যালেন্স বা লেনদেনের পরিমাণ মোবাইলের মাধ্যমে বা মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে চেক করতে পারবেন।
৩) মোবাইল ব্যাংকিংয়ে খুব সহজে ঘরে বসে কাউকে টাকা পাঠাতে চাইলে মোবাইল এর মাধ্যমে সেন্ট মানি করতে পারবেন বিনামূল্যে। তবে যাকে টাকা পাঠাতে চান তাকে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট ব্যবহারকারী হতে হবে।
৪) পূর্বে দেখা যেত যে কোন বিল পরিশোধের জন্য অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে হতো যাতে সময়ের অপচয় এবং অর্থের অপচয় বেশি হতো। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা এই ব্যবস্থাকে সহজ করে দিয়েছে। ঘরে বসে এখন যে কোন বিল পেমেন্ট করা যাবে যেমন; পানি গ্যাস ইলেকট্রিক ইন্টারনেট বিল পে করতে পারবে।
৫) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এখন ঘরে বসে শপিংয়ের কোন ঝামেলা নেই। যেসব শপিংমলগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিল পে করা যায় সেসব শপিংমল গুলোতে আপনি ঘরে বসে স্মার্টফোনের মাধ্যমে শপিং করে বিল পে করতে পারবেন।
৬) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট প্লেনের টিকিট মোবাইল রিচার্জ সহ আরো অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গুলো গ্রাহক পাচ্ছে।
৭) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দিনরাত 24 ঘন্টা অর্থ লেনদেন করা যায়।
৮) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে ঘরে বসে অর্থ লেনদেন করা যায় খুব সহজেই।
৯) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আয় কর রিটার্ন দাখিল করা যায়।
১০) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অল্প পরিমাণের অর্থ অর্থাৎ ৫০ টাকা হলেও দেশের যে কোন প্রান্তে পাঠানো সম্ভব।
১১) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ডিপোজিট পেনশন স্কিম ডিপিএস একাউন্ট খোলা যায়।
১২) মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে স্কুল কলেজ ইউনিভারসিটি তে ভর্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়া যায়।
১৩) লোন সুবিধা ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাওয়া যায়।
১৪) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকের সাথে জড়িত অনেক সেবা একজন গ্রাহক ঘরে বসে সরাসরি পেতে পারে।
১৫)অনেক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহক ব্যাংক স্টেটমেন্ট গুলো নিজের মোবাইলে ডাউনলোড করে নিতে পারে।
বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং
বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং এর মধ্য অনেকগুলো মোবাইল ব্যাংকিং সেবাই রয়েছে। গুগল ট্রেন্ড ব্যবহার করে জানা যায় বর্তমানে নগদের জনপ্রিয়তা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর তুলনায় সর্বাধিক। এবং এরপর বিকাশ এবং রকেট এর জনপ্রিয় তাও রয়েছে অধিক পরিমাণে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবহারে লেনদেন
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমাণে লেনদেন হয়ে থাকে। সহজে টাকা তুলতে অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং কে উত্তম মাধ্যম হিসেবে মনে করে।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কারণ মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের দিন দিন নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অর্থাৎ গ্রামীণ অর্থনীতিতে মোবাইল ব্যাংকিং অনন্য গতির সঞ্চার করেছে। তাই মোবাইল ব্যাংকিং এর গুরুত্ব অপরিসীম। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দৈনিক সাতশ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হচ্ছে। যা বছরে 2 লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস
মোবাইল ব্যাংকিংকরার ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা প্রদান করে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস গুলো বা ওয়েবসাইট। প্লে স্টোর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস গুলো ডাউনলোড করে সহজেই মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলো গ্রাহকরা ভোগ করতে পারে। অর্থাৎ যে যেই মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট ব্যবহারকারী সে সেই মোবাইল ব্যাংকিং এর অ্যাপস ডাউনলোড করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস এর মাধ্যমে সেন্ড মানি, ক্যাশ আউট, পে বিল, মোবাইল রিচার্জ, ট্রাফিক ফাইন, টিকিট বুকিং ইত্যাদি সেবা গুলো পাওয়া যায়।
মোবাইল ব্যাংকিং নানা সময় নানাভাবে অপরাধী চক্রের হাতে পড়ে প্রতারিত হয়েছে। এটি জানার পর সবাইকে সতর্ক করার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা জারি করে দিয়েছে।এতে বলা হয়েছে এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করে এজেন্টদের সকল তথ্য নাম ঠিকানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করতে হবে।যারা মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্ট বা ডিস্ট্রিবিউটর তাদের প্রতিষ্ঠানে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। স্থায়ী দোকান কিনা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিনা সেটি যাচাই করতে হবে।
যদি স্থায়ী কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না হয় তাহলে এজেন্ট নিয়োগ করা যাবে না। ক্যাশ আউট করার ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেন্টার থেকে ক্যাশ আউট কারীদের ছবি নাম ঠিকানা জাতীয় পরিচয় পত্র ফোন নম্বর সংগ্রহ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য রেজিস্টরের সংরক্ষণের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
আধুনিক সময়ে বিশ্বে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সকলের নিকট পরিচিত এবং জনপ্রিয়। বিশ্বজোড়ে সর্বত্র মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ব্যবহারকারী গ্রাহক রয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশে শহর থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র অর্থ লেনদেন সুবিধা সহজলভ্যতার কারণে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অনন্য পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষের মোবাইল ব্যাংকিং এর ওপর দিন দিন নির্ভরতা বেড়ে চলেছে যা বাংলাদেশের মোবাইল ব্যাংকিং জগতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।ব্যাংকিং সেবার দৃষ্টিকোণ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকদের নগদ টাকা উত্তোলন এবং তাদের টাকা আমানত লেনদেনের জন্য ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দিয়ে ঘরে বসে সহজেই লেনদেন করার সুযোগ সুবিধা প্রদান করে।
মোবাইল ব্যাংকিং শুধুমাত্র নগদ অর্থের সাথে জড়িত লেনদেন পরিচালনা করে না। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে খুব সহজেই টাকা উত্তোলন করা যায় কম খরচে এবং কম সময়ে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই ২৪ ঘন্টায় মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চলতে থাকে।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং শীর্ষক নীতিমালা জারি করে কত সালে?
উত্তর: ২০১৮ শীর্ষক বাংলাদেশ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এমএফএস রেগুলেশন মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা আইনটি জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রশ্ন: বিশ্বের সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয় কোন দেশে
উত্তর: ১৯৯৯ সালে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলি সর্বপ্রথম গ্রাহকদের মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে। কিন্তু ২০০৭ সালে কেনিয়ায় সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা আত্মপ্রকাশ করে।
প্রশ্ন: কত সালে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা যাত্রা শুরু করে?
উত্তর: ২০১১ সালের ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা যাত্রা শুরু করে।
প্রশ্ন: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামে কিভাবে টাকা উঠানো যায়?
উত্তর:গ্রাম গঞ্জে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা তুলতে নিকটবর্তী এজেন্ট বা এটিএম বুথ থেকে টাকা উঠানো যায়।
প্রশ্ন:বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা কতটি?
উত্তর: বর্তমানে বাংলাদেশে বাইশটিও অধিক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে। যা মোবাইলের মাধ্যমে গ্রাহকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।
প্রশ্ন: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক লেনদেন কত?
উত্তর: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ 700 কোটি টাকার উপরে।
প্রশ্ন: মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বছরে লেনদেন কত?
উত্তর: মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বছরে প্রায় লেনদেন হয় ২ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার উপরে।
প্রশ্ন: মোবাইল ব্যাংকিং এ সেবা প্রদান করার সময় কখন?
উত্তর:গ্রাহকের প্রয়োজন মত মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদান করার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। সপ্তাহের সাত দিন দিনে ২৪ ঘন্টায় মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে।
শেষ কথা-
বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যারা শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে সামান্য ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটির কথা শেয়ার করতে ভুলবেন না।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
আপনার জন্য-
মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি মোবাইল ব্যাংকিং বলতে কি বুঝ ও মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা উপায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কি সুবিধা পাবেন? উপায় মোবাইল ব্যাংকিং কোড কত উপায় অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ পদ্ধতি নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম উপায় ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি খরচ কতআমাদের আরো সেবা সমূহ :-
- ইংলিশে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ব্লগিং,ইউটিউবিং,ফেসবুকিং থেকে ইনকাম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত সকল তথ্য পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত সকল ভিডিও পেতে –এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকিং – ইউটিউবিং এবং ব্লগিং সম্পর্কিত পোস্ট পেতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত পোস্ট পেতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।