তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?

তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বিভিন্ন ইবাদত করে থাকেন। সংযমের এ মাসে তারাবির নামাজ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি হলো সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে তারাবির নামাজ আদায় করেছেন এবং সাহাবীদেরও তা আদায়ের জন্য বলেছেন।

তারাবির নামাজের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে বিশ্বনবী বলেন, যিনি মানের সঙ্গে পুণ্য লাভের আশায় রমজানে তারাবির নামাজ শেষ করে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়।

এই মাসে পবিত্র কোরআন মাজিদ নাজিল করা হয়। আর রমজান মাসের ফজিলত অনেক, এই মাসে বান্দার সকল ইবাদত আল্লাহ রব্বুল আলামিন 70 থেকে 700 গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে থাকেন। তাই আমরা এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করে থাকি।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন 

এখন কথা হলো আমরা অনেকেই তারাবির নামাজ পড়ি কিন্তু এই নামাজের সুরা, দোয়া ও মোনাজাত জানিনা। আজ আপনাদের  তারাবির নামাজের সুরা, তারাবির নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে কি না,  তারাবির নামাজের দোয়া, তারাবির নামাজের কি ভাবে পড়তে হবে,  তারাবির নামাজ কত রাকাত, কত রাকাত পর পর দোয়া পরতে হয় বিস্তারিত সব জানাবো।

তারাবির নামাজের সুরা

তারাবির নামাজের জন্য  আলাদা কোন সুরা নাই। সুরা ফাতেহা সাথে অন্য  যে কোন ছোট  সুরা পড়ে নামাজ  পড়তে  পারবেন।  ছোট সুরা সমূহ হলো

সুরা ইখলাস, সুরা নাস, সুরা ফালাক, সুরা ফীল,  সুরা কাওসার ইত্যাদি।

আমাদের দেশে দুই ধরণের তারাবি প্রচলিত। যথা-

১।একটি হলো সুরা তারাবি

এবং

২।অন্যটি হলো খতম তারাবি।

-সুরা তারাবি হলো পবিত্র  কোরআনের যে কোন সুরা দিয়ে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা।

-খতম তারাবি হলো রমজান মাসে সম্পূর্ণ কোরআন সহকারে তারাবি আদায় করা। উভয় পদ্বতিই ইসলাম অনুমোদন করে। তবে খতমে তারাবিতে সওয়াব বেশি। সুরা তারাবির মাধ্যমে নামাজ আদায় করলেও নামাজ আদায় হবে।

রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। আর এ নামজকেই ‘তারাবির নামাজ’ বলা হয়।

আরবি এবং বাংলা উভয়ভাবে নিয়ত করা যাবে। আরবি নিয়ত হচ্ছে, নাওয়াাইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা, রকাআতাই সালাতিত তারাবিহ, সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআলা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।

বাংলায় নিয়ত হচ্ছে, আমি কেবলামুখি হয়ে দুই রাকাআত তারাবির সুন্নতে মুয়াাক্কাদাহ নামাজের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার। (জামাআত হলে যোগ করতে হবে এ ইমামের পেছনে পড়ছি)।

দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা। আবার দুই রাকাত নামাজ পড়া। এভাবে ৪ রাকাত আদায় করার পর একটু বিশ্রাম নেয়া।

বিশ্রামের সময় তাসবিহ তাহলিল পড়া, দোয়া-দরূদ ও জিকির আজকার করা। তারপর আবার দুই দুই রাকাত করে আলাদা আলাদা নিয়তে তারাবি আদায় করা।

জামাতে তারাবির নামাজ

ফরজ নামাজ ব্যতিত অন্য সকল নামাজ একাকী আদায় করা উত্তম। কিন্তু তারাবি নামাজ ব্যতিক্রম। তারাবির নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা শরীয়ত সম্মত। বরং তারাবি একাকী আদায় করার চেয়ে জামাতবদ্ধভাবে আদায় করা উত্তম।

কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করেছেন এবং জামাতে আদায়ের ব্যাপারে তাকিদ দিয়েছেন।

পবিত্র রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়া নারী পুরুষের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত।

তারাবির নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?

পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতগুলোর অন্যতম এ সালাত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজানে তারাবির নামাজ আদায় করেন, তার অতীতের গুনাহগুলো আল্লাহপাক ক্ষমা করে দেবেন। (বুখারি শরিফ)।

মূলত মাহে রমজানে এশার ফরজ ও সুন্নত নামাজের পর বিতরের আগে তারাবির নামাজ আদায় করতে হয়। সাধারণ নফল ও সুন্নতের চেয়ে অধিকতর মর্যাদাবান, গুরুত্বের দিক থেকে তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি।

তারাবি আরবি শব্দ, যা তারবিহাতুন শব্দের বহুবচন; যার অর্থ হলো আরাম, প্রশান্তি অর্জন, বিরতি দেওয়া, বিশ্রাম নেওয়া ইত্যাদি। যেহেতু ২০ রাকাত তারাবির নামাজ প্রতি চার রাকাত অন্তর চার রাকাত নামাজের সমপরিমাণ সময় বিরতি দিয়ে আরামের সঙ্গে আদায় করা হয়, সেজন্য এ নামাজকে তারাবির নামাজ বলা হয়।

এ নামাজ আদায় না করলে অবশ্যই গুনাহগার হতে হবে। তারাবির নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। কারণ, মাহে রমজান যেসব বৈশিষ্ট্যের জন্য মহিমান্বিত, তার মধ্যে অন্যতম হলো তারাবির নামাজ। রাসূলে কারিম (সা.) তারাবির সালাত অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আদায় করতেন বলে সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

তারাবির নামাজ কি ৪ রাকাত করে পড়া যায়?

রমজানের রাতের নামাজকে তারাবিহ বলে। আর আরবিতে তারাবিহ (تَرَاوِيْح) শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বিশ্রাম করা’। লম্বা কেরাতে প্রতি ৪ রাকাআত নামাজ পড়ার পর পর একটু বিশ্রাম গ্রহণ করার মাধ্যমে রাত জেগে যে নামাজ পড়া হয় মূলত তা হচ্ছে তারাবিহ নামাজ।

রাতের এ নামাজের রয়েছে অনেক ফজিলত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রাতের (তারাবিহ) নামাজ ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের নিয়তে পড়বে, তার জীবনের আগের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়।’ সুবহানাল্লাহ!

হজরত সাঈর ইবনে ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের রাতের (তারাবিহতে) নামাজে শত শত (শ’-এর ওপর) আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাঁড়ানোর কারণে আমরা লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম। (মুয়াত্তা মুহাম্মদ)

তারাবিহ নামাজের নিয়ত

নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আরবি কিংবা বাংলায় নিয়ত করলে তা হয়ে যাবে।

তারাবিহ’র দুই রাকাআত নামাজ ক্বেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য (এ ইমামের পেছনে) পড়ছি- (اَللهُ اَكْبَر) আল্লাহু আকবার।

২ রাকাআত করে আলাদা নিয়তে ৪ রাকাআত নামাজ পড়া। ৪ রাকাআত পড়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া। সেসময় তাসবিহ-তাহলিল, তাওবা-ইসতেগফার পড়া। গোনাহ মাফে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা।

খানিক বিশ্রামের পর আবার ২/২ রাকাআত করে ৪ রাকাআত নামাজ আদায় করা। আবার কিছু বিশ্রাম করে আবার নামাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা।

প্রত্যেক ৪ রাকাআত নামাজ পড়ার পর বিশ্রামের সময় অনেকেই আল্লাহর কাছে দোয়া করে থাকেন। অনেকে মুনাজাতও করে থাকেন। প্রতি ৪ রাকাতে মুনাজাত না করে একেবারে শেষে করলেও কোনো সমস্যা নেই।

তারাবিহ নামাজের দোয়া

তারাবিহ নামাজের পর মুনাজাতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে গোনাহমুক্ত জীবন লাভে তাওবা-ইসতেগফারের বিকল্প নেই।

তবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে, যা তারাবিহ নামাজে পড়া হয়। আর এ দোয়াটি ব্যাপকভাবে পড়ার কারণে অনেক মানুষই তা মুখস্ত জানে। চাইলে এ দোয়াটিও প্রতি ৪ রাকাআত পর পর পড়া যেতে পারে। আর তাহলো-

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

তারাবিহ নামাজের ৪ রাকাআত পর পর শুধু এ দোয়াটিই পড়তে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যে কোনো দোয়া-ই পড়া যেতে পারে। এতে তারাবিহ নামাজেরও কোনো অসুবিধা হবে না।

তারাবিহ শেষে মুনাজাত

আবার তারাবিহ নামাজ শেষ হলেও সবাই সমবেতভাবে মুনাজাত করে। আবার অনেকে একাকি মুনাজাত করে। এ মুনাজাত সমবেত হোক আর একাকি হোক যে কোনো দোয়া দিয়ে তা করা যেতে পারে।মনের একান্ত কথাগুলো যেভাবে ইচ্ছা আল্লাহর কাছে তুলে ধরায় কোনো অসুবিধা নেই। তবে তারাবিহ নামাজের দোয়ার মতো মুনাজাতেরও একটি ব্যাপক প্রচলিত দোয়া রয়েছে। ইচ্ছা করলে এ দোয়াটিও পড়া যায়। আর তাহলো-

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

– অনেকে রমজানজুড়ে এ দোয়াও বেশি বেশি পড়ে থাকেন-

اَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ اﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আ’ন্নি।

– তাছাড়া তারাবিহ নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইসতেগফারও পড়া যেতে পারে-

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।

মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহাঅনুগ্রহের মাস রমজান। এ মাসের মর্যাদা অন্য মাসের তুলনায় অনেক বেশি।

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল?

তারাবির নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা। (সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়ে যেতেও পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে। – আল্লামা জুরজানী রাহ)

তারাবির নামাজ কত রাকাত?

তারাবির সালাত দুই দুই রাকআত করে যেকোনো সংখ্যক রাকআত পড়া হয়।  তারাবির নামাজের রাকআত নির্দিষ্ট করা হয়নি। হানাফি, শাফিয়ি ও হাম্বলি ফিকহের অনুসারীগণ ২০ রাকআত, মালিকি ফিকহের অনুসারীগণ ৩৬ রাকআত এবং আহলে হাদীসরা ৮ রাকআত তারাবির পড়েন।

তারাবির নামাজ  দুই  রাকাতের পর দোয়া

তারাবির নামাজের পর নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে গোনাহমুক্ত জীবন লাভে তাওবা-ইসতেগফারের বিকল্প নেই।

“তবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত একটি দোয়া রয়েছে, যা তারাবির নামাজের পর পড়া হয়। আর এ দোয়াটি ব্যাপকভাবে পড়ার কারণে অনেক মানুষই তা মুখস্ত জানে। চাইলে এ দোয়াটিও প্রতি ৪ রাকাআত পর পর পড়া যেতে পারে“। আর তাহলো —

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

বাংলা উচ্চারণ: “সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।ʼʼ

বাংলা অর্থ : আল্লাহ পবিত্রময় সাম্রাজ্য ও মহত্ত্বের মালিক। তিনি পবিত্রময় সম্মান মহত্ত্ব ও প্রতিপত্তিশালী সত্তা। ক্ষমতাবান, গৌরবময় ও প্রতাপশালী তিনি পবিত্রময় ও রাজাধিরাজ যিনি চিরঞ্জীব, কখনো ঘুমায় না এবং চির মৃত্যুহীন সত্তা। তিনি পবিত্রময় ও বরকতময় আমাদের প্রতিপালক, ফেরেশতাকুল এবং জিবরাইল (আ.) এর প্রতিপালক।

তারাবির নামাজ নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

১। প্রশ্ন:তারাবিহ শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ তারাবিহ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বিশ্রাম করা’।

২। প্রশ্ন:তারাবির নামাজ  কি?

প্রতি চার রাকাআত নামাজ শেষ করে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করা যায় তাই একে তারাবির নামাজ বলা হয়।

৩।প্রশ্ন: তারাবির নামাজ কত রাকাত?

উত্তরঃ  হানাফি, শাফিয়ি ও হাম্বলি ফিকহের অনুসারীগণ ২০ রাকআত, মালিকি ফিকহের অনুসারীগণ ৩৬ রাকআত এবং আহলে হাদীসরা ৮ রাকআত তারাবির পড়েন।

৪।প্রশ্ন: তারাবির নামাজ কি সুন্নত না নফল?

উত্তর: তারাবির নামায নারী-পুরুষ সকলের জন্য সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

৫।প্রশ্ন: খতম তারাবীহ এবং সূরা তারাবীহ কি?

উত্তর: বাংলাদেশে তারাবীহর নামাজের দুটি পদ্ধতি প্রচলিত। একটি খতম তারাবীহ আর অন্যটি সূরা তারাবীহ। খতম তারাবীহর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কুরআন পাঠ করা হয়। খতম তারাবীহর জন্য কুরআনের হাফিযগণ ইমামতি করেন। সূরা তারাবীহর জন্য যেকোন সূরা বা আয়াত পাঠের মাধ্যমে সূরা তারাবীহ আদায় করা হয়।

৬।প্রশ্ন:তারাবির নামাজ কেন পড়ব?ফযিলত কি?

উত্তর;রাসূল(সাঃ) বলেছেন,”যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব পাওয়ার আশায় রমজানের রাতে তারাবি নামাজ আদায় করে ,তার অতিতকৃত পাপগুলো ক্ষমা করা হয়।(বুখারি ও মুসলিম)

হাদিস দ্বারা তারাবির নামাজের অশেষ সওয়াবের কথা প্রমানিত।

৭।প্রশ্ন:তারাবি নামাজ না পড়লে গুনাহ হবে?

উত্তর:অবশ্যই গুনাহ হবে।কারন তারাবির নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদ্দাহ(নামাজে যেসব সুন্নত পালন না করলে নামাজ মাকরুহ হয়) ।বিনা ওজরে তারাবির নামাজ ছেড়ে দিলে কবিরা গুনাহ হবে।

৮।প্রশ্ন:তারাবির নামাজ না পড়লে কি রোজা হবে?

উত্তর:রোজা হবে।কারন রোজা ফরয ইবাদত এর সাথে তারাবির সংযোগ আছে কিন্তু তুলনা করাটা বোকামো।বিনা ওজরে তারাবি ছেড়ে দিলে রোজা মাকরুহ হবে।

৯।প্রশ্ন :  তারাবির সালাতে বা তাহাজ্জুদের সালাতে সুরা ফাতিহার পরে একাধিক ছোট সুরা পড়লে নামাজ শুদ্ধ হবে কি না?

উত্তর : না, এতে কোনো অসুবিধা নেই। আপনি একাধিক সুরা একসঙ্গে মিলিয়ে পড়তে পারেন বা এক সুরা আপনি বারবার পড়তে পারেন অথবা আপনি কোরআনের মুসহাব থেকে তিলাওয়াত করতে পারবেন। এটা আপনার জন্য জায়েজ রয়েছে। তবে উত্তম হচ্ছে, যদি মুখস্থ থাকে, তাহলে বড় সুরা পড়া।

১০।প্রশ্নঃ আমাদের দেশে কত ধরণের তারাবি প্রচলিত আছে?

উত্তরঃআমাদের দেশে দুই ধরণের তারাবি প্রচলিত আছে। যথা-

১।একটি হলো সুরা তারাবি

এবং

২।অন্যটি হলো খতম তারাবি।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

ঈদের নামাজের নিয়ম ও মাসলা সম্পর্কে জানুন
দুই অক্ষরের ছেলেদের অর্থসহ ইসলামিক নামের তালিকা 
ক দিয়ে ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
ল দিয়ে মেয়েদের সুন্দর অর্থসহ ইসলামিক নাম

↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇

  • ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন
  • ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন
  • বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন

↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment