কম্পিউটার নেটওয়ার্ক –যখন দুইবার তত ঠিক কম্পিউটার কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্বারা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকে তখন তাকে বলা হয় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনেকগুলো কম্পিউটার পরস্পর যুক্ত থাকায় কোন একটি খারাপ হয়ে গেলেও সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যায় না। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দূরত্বে অবস্থিত একাধিক কম্পিউটার আন্তঃসংযোগ এর মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে।
এসব মাধ্যমের দ্বারা তথ্যসমূহ এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে সঞ্চালিত হয়।মূলত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা তাদের ফাইল প্রিন্টার ও অন্যান্য ডকুমেন্ট ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারেন এবং একে অন্যের কাছে বিভিন্ন বার্তা আদান-প্রদান করতে পারেন। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারী এক কম্পিউটারে বসে অন্য কম্পিউটারের প্রোগ্রাম চালাতে পারবেন।
বন্ধুরা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি এবং এটি কত প্রকার এবং এর প্রকারভেদ গুলো কি এসব প্রশ্ন নিয়ে যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট সার্চ করেন যুক্তিসঙ্গত তথ্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের জন্য আমাদের আজকের আর্টিকেলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরব। আশা করছি আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ে আমাদের সাথে থাকবেন।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি?
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হচ্ছে দুইবার তত দিয়ে কম্পিউটার যখন তাদের মধ্যে আন্ত-সংযোগ বজায় রাখে তখন তাকে বলা হয় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক। ১৯৬৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ সর্বপ্রথম এই নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাটি চালু করেন। তৎকালীন সময় থেকেই কম্পিউটার নেটওয়ার্কের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের বহুল ব্যবহারে যোগাযোগ তথ্যের আদান প্রদান, ই-কমার্স, ইমেইল, ই লাইব্রেরি, টেলিককনফারেন্স, বুলেটিং বোর্ড ইত্যাদি প্রচলন ও প্রসার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মূলত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হচ্ছে যেই বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে মডেম ক্যাবল বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এক কম্পিউটারের সাথে অন্য এক বা একাধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয় এবং তাদের মধ্য তথ্য আদান-প্রদান করা হয় তাকেই কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলা হয়।এই কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে একটি কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য একাধিক ব্যবহারকারীরা সহ কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের উপাদান
একটি নেটওয়ার্কের সাধারণত তিনটি উপাদান থাকে। যথা:
১) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার।
২) নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার।
৩) নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার।
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার বলতে কতগুলি ইন্টারফেস প্রোগ্রামের সমষ্টিকে বোঝায় যেগুলোর মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত থেকে নেটওয়ার্কে বিদ্যমান বিভিন্ন ডকুমেন্ট ভাগাভাগি করতে পারেন। এগুলো ক্লায়েন্ট সার্ভার কিংবা পিয়ার টু প্রিয়ার প্রকৃতির হতে পারে।
নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার
নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার বলতে কতগুলো প্রোগ্রামের সমষ্টিকে বোঝায় যেখানে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের নিয়ম বা প্রটোকল স্থাপিত হয় এবং যার ভিত্তিতে একটি কম্পিউটার আরেকটি কম্পিউটারের সাথে আন্ত সম্পর্ক স্থাপন করে তথ্য আদান-প্রদান করে।ফরমেট কৃত নির্দেশনা বলি তথা প্যাকেট সমূহ আদান প্রদান করে এই প্রটোকল গুলি রক্ষা করা হয় এবং এই প্রটোকল গুলি দুই বা ততোধিক কম্পিউটারের নেটওয়ার্ক এপ্লিকেশন গুলির মধ্য যৌক্তিক সংযোগ সৃষ্টি করে, ভৌত নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে প্যাকেট পরিচালন করে এবং একই সময় পাঠানো প্যাকেটের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা করে।
নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার
নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার হচ্ছে যে সমস্ত ভৌত যন্ত্রাংশ বা উপাদান একাধিক কম্পিউটারকে যুক্ত রাখে তাদেরকে একত্রে বলা হয় নেটওয়ার্ক।নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ারের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো কম্পিউটার সিগন্যাল বহনকারী ট্রান্সমিশন মাধ্যম এবং নেটওয়ার্ক এডাপ্টার। সাধারণত ট্রান্সমিশন মাধ্যম তার বা অপটিক্যাল ফাইবারের তৈরি হয়। আর নেটওয়ার্ক অ্যাডপ্টার এর কাজ ট্রান্সমিশন মাধ্যম ও নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার এর মত যোগসূত্র স্থাপন করা।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার ও কি কি?
কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে সাধারণত ৪ ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন:
১) LAN (Local Area Network)
২) MAN (Metropolitan Area Network)
৩) WAN (Wide Area Network)
৪) PAN (Personal Area Network)
LAN (Local Area Network)
একই বিল্ডিং বা প্রতিষ্ঠানের মধ্য কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে গঠিত নেটওয়ার্ক এ বলা হয় LAN (Local Area Network)। এই নেটওয়ার্কের গঠন সমূহ খুবই সহজ এবং ব্যবহৃত ডিভাইস সমূহের দাম খুবই অল্প।LAN (Local Area Network) এই নেটওয়ার্কের ব্যবহৃত ডিভাইস সমূহ হলো হাব, সুইচ, রিপিটার। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের জন্য LAN (Local Area Network)।
ছোট বা মাঝারি অফিস আদালত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এই নেটওয়ার্ক টি ব্যবহার করা হয়। এই নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ডিভাইস সমূহের মধ্য পরস্পর তথ্য এবং রিসোর্সগুলো শেয়ার করা ছোট মাঝারি অফিস বা প্রতিষ্ঠানে LAN তৈরি করে প্রিন্টার, মডেম, স্ক্যানার ইত্যাদি ডিভাইসের জন্য সাশ্রয়ী হতে পারে।
MAN (Metropolitan Area Network)
MAN (Metropolitan Area Network) বা মেট্রোপলিটন এরিয়ার নেটওয়ার্কবলতে বোঝানো হয় একই শহরের মধ্য অবস্থিত কয়েকটি লেনের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারফেসকে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক অথবাMAN (Metropolitan Area Network)। এই নেটওয়ার্কটি ৫০ থেকে ৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে এবং এই নেটওয়ার্কের ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ডে।এই নেটওয়ার্কের ব্যবহৃত ডিভাইস গুলোর মধ্য রয়েছে রাউটার, সুইচ, মাইক্রোওয়েভ, এন্টেনা ইত্যাদি।
WAN (Wide Area Network)
WAN (Wide Area Network) মূল বৈশিষ্ট্য হলো দূরবর্তী ল্যান্ড সমূহকে নিয়ে গড়ে ওঠে এই নেটওয়ার্কটি।দুটি ভিন্ন ভিন্ন দেশের মধ্য এই নেটওয়ার্কটি গড়ে ওঠে এই নেটওয়ার্কের ডাটা ট্রান্সফার স্পিড ৫৬ কেবিপিএস থেকে ১.৫৪৪ এমবিপিএস। এই নেটওয়ার্কের গঠন বেশ জটিল এবং এটি সাধারণত বিশাল ভৌগলিক এলাকা নিয়ে বিস্তৃত থাকে। এই নেটওয়ার্কের ব্যবহৃত ডিভাইস গুলোর মধ্যে রাউটার, মডেম, ওয়েন, সুইচ ইত্যাদি রয়েছে।
PAN (Personal Area Network)
PAN (Personal Area Network) এই নেটওয়ার্ক থেকে বলা হয় ব্যক্তিগত পর্যায়ের নেটওয়ার্ক।অর্থাৎ পার্সোনাল এরিয়ার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সাধারণত দুটি কম্পিউটারের মধ্য পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। এই যোগাযোগ স্থাপিত হয় ব্লুটুথ কেবল অথবা তারের মাধ্যমে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরির উদ্দেশ্য
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক মূলত বহুবিধ উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি করা হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরির মূল উদ্দেশ্য গুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো:
*হার্ডওয়ার রিসোর্স শেয়ার করার জন্য।
*ফাইল ট্রান্সফারের উদ্দেশ্যে।
*সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ার করা।
*তথ্য বা ইনফরমেশন সংরক্ষণ করা।
*তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করা।
*মেসেজ অথবা ইমেইল আদান প্রদান করা।
*ই-কমার্স ব্যবহার করা।
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে
ইন্টারনেট হচ্ছে সেই কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ইন্টারনেট কাজ করার জন্য গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সাথে ওয়্যার বা বেতার যেকোনো একটির মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে থাকতে হয়। এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্কেজড়িত থাকা বিভিন্ন কম্পিউটারের সাথে আমাদের কম্পিউটার রাউটার এবং সার্ভার এর মাধ্যমে সংযোগ হয়ে বিভিন্ন ডেটা এবং ইনফরমেশন সংগ্রহ করে নেয় এভাবেই ইন্টারনেট কাজ করে।
ইন্টারনেটের কাজ করার উপাদান কয়টি
ইন্টারনেট তিনটি উপাদানের মাধ্যমে কাজ করে। অর্থাৎ ইন্টারনেটের কাজ করার জন্য তিনটি উপাদানের প্রয়োজন। যথা:
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
১) একটি ডিভাইস যেখান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করা বা চালু করা যাবে।
২) ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার যেখান থেকে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করা হয়।
৩) একটি ওয়েব ব্রাউজার বা অ্যাপ্লিকেশন।
সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি?
যখন দুইবা ততোধিক কম্পিউটারকে কোন উপায় বা মাধ্যমে ব্যবহার করে একসঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয় তখন তাকে বলা হয় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদান করা হয়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার?
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ৪ প্রকার। যথা:
১) LAN (Local Area Network)
২) MAN (Metropolitan Area Network)
৩) WAN (Wide Area Network)
৪) PAN (Personal Area Network)
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের কয়টি উপাদান থাকে?
কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাধারণত তিনটি উপাদান থাকে। যেমন:
১) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার।
২) নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার।
৩) নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার।
শেষ কথা-
সম্মানিত পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা ইতোমধ্যেই আমরা আলোচনা করেছি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি এবং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে। আশা করছি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে পুরো বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনারা অবগত হতে পেরেছেন। যদি কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ সকলকে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
আরও পড়ুন-
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলর (বিসিসি) প্রতিষ্ঠার ইতিহাস কম্পিউটারের হার্ডওয়ার পরিচিতি কম্পিউটার কিবোর্ড পরিচিতি- কোন বাটনের কি কাজ কম্পিউটারের বেসিক নলেজ গুলো জেনে নিন কম্পিউটার অনুচ্ছেদ বাংলা ১০ম শ্রেণি
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।