রমজান মাস হলো মুসলিমদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র সময়। পুরো মাসব্যাপী, মুসলিমরা দিনের বেলা রোজা রাখেন, এবং সূর্যাস্তের পর ইফতার করে তাদের উপবাস ভঙ্গ করেন। ইফতার থেকে আগে কিছু বিশেষ সূরা বা দোয়া পাঠ করা হয়ে থাকে, যেগুলি রোজাদারদের জন্য একে অপরকে সহায়ক করে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা হয়।
এখন আমরা আলোচনা করব যে, রোজা রাখার সময় বিশেষ করে ইফতারি খাওয়ার আগে কোন সূরা পড়তে হয়, এবং এর মধ্যে কি উপকারিতা রয়েছে।
ইফতারির সময় সুরা আল-ইনশিরাহ (সূরা 94)
ইফতারের সময় সুরা আল-ইনশিরাহ পড়ার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণত্ব রয়েছে। সুরা আল-ইনশিরাহ মুমিনদের জন্য মনোবল বাড়ানোর এক অমূল্য পাঠ। এটি পীড়িত মনের শান্তি প্রদান করে এবং রোজার শেষে ইফতার করার সময় তার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সুরা আল-ইনশিরাহ এমন একটি সূরা যা রোজাদারদের প্রেরণা দেয় এবং আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার আশ্বাস দেয়।
সুরা আল-ফাতিহা (সূরা 1)
সুরা আল-ফাতিহা কোরআনের প্রথম সূরা এবং এটি রোজা ভঙ্গ করার সময় পাঠ করা হয়। এটি একটি বিস্ময়কর সূরা, যার মধ্যে ধৈর্য এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা থাকার গুরুত্ব বর্ণিত। এটি আসমানী এবং পৃথিবীজগতের প্রভুর কাছে আবেদন জানায়, এবং একজন রোজাদারের জন্য এক রকম আধ্যাত্মিক শক্তি প্রদান করে।
সুরা আল-বাকারাহ (সূরা 2)
সুরা আল-বাকারাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে দীর্ঘ সূরা কোরআনে। এটি দৈনন্দিন জীবনে মানুষের জন্য একটি সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থার নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। ইফতারের পূর্বে এটি পড়া রোজাদারদের জন্য এক অনন্য ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ এটি তাদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং আত্মবিশ্বাস স্থাপনে সাহায্য করে।
সুরা আল-ইখলাস (সূরা 112)
ইফতারির সময় সুরা আল-ইখলাস পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সূরাটি বিশ্বাসের শক্তি এবং একত্বের ধারণা প্রকাশ করে। এটি আল্লাহর একত্ব এবং মায়ার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে সাহায্য করে। যখন রোজা রেখে মানুষ ইফতার করে, তখন আল্লাহর প্রতি আস্থা এবং ধৈর্য বজায় রাখার জন্য এই সূরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুরা আল-ফিল (সূরা 105)
ইফতারি করার সময় সুরা আল-ফিল পড়া একটি বিশেষ সত্ত্বা সৃষ্টি করে। এটি আল্লাহর মহিমা এবং শক্তির প্রশংসা জানায়। এই সূরাটির মধ্যে বিশেষ করে যখন মুসলিমরা রোজা ভঙ্গ করার জন্য প্রস্তুত হয়, তখন তারা একে একে আল্লাহর প্রতি ধৈর্য এবং বিশ্বাস স্থাপন করতে সাহায্য পায়।
সুরা আল-করসী (সূরা 2:255)
এটি কোরআনের সবচেয়ে পবিত্র এবং শক্তিশালী আয়াতগুলির মধ্যে একটি। সুরা আল-করসী বিশ্বাস এবং আস্থা স্থাপনের জন্য এক অপরিহার্য সূরা। ইফতারি সময় এটি পড়া আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে এবং আল্লাহর রহমত ও সুরক্ষা লাভের পথ খুলে দেয়।
দোয়া ও আযকার
ইফতারের সময় শুধু সূরা নয়, দোয়া এবং আযকারও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেকোনো সময় আল্লাহর কাছে তার সহায়তা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। বিশেষ করে, রোজা ভঙ্গের সময় নিম্নলিখিত দোয়া বলা যেতে পারে:
- اللهم إني لك صمت وبك آمنت وعليك توكلت وبك أسلمت
উপসংহার
ইফতার সময় মুসলিমদের জন্য একটি পবিত্র মুহূর্ত, এবং এই সময়ে বিশেষ কিছু সূরা বা দোয়া পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রোজা ভঙ্গের সময় নয়, এটি রোজাদারদের জন্য মনোবল এবং আধ্যাত্মিক শক্তি যোগানোর একটি উপায়। কোরআন শরীফের বিভিন্ন সূরা, বিশেষ করে সুরা আল-ইনশিরাহ, আল-ফাতিহা, আল-ইখলাস, এবং অন্যান্য সূরা পড়া রোজার অভিজ্ঞতাকে আরও স্মরণীয় করে তোলে।
আপনি যদি একে অপরের সাথে শেয়ার করেন, তবে আপনি আল্লাহর রহমত এবং সাহায্য লাভ করতে পারেন।
প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন ১: ইফতারির সময় কোন সূরা পড়লে ভালো হয়?
উত্তর: ইফতারির সময় সুরা আল-ইনশিরাহ, আল-ফাতিহা, আল-ইখলাস, আল-বাকারাহ, এবং আল-ফিল বিশেষভাবে পড়া উচিৎ।
প্রশ্ন ২: কি দোয়া পড়লে রোজার ফল পাওয়া যাবে?
উত্তর: আপনি ইফতারির সময় এই দোয়া পড়তে পারেন: اللهم إني لك صمت وبك آمنت وعليك توكلت وبك أسلمت।
প্রশ্ন ৩: সুরা আল-ফিল কী বিষয়ে আলোচনা করে?
উত্তর: সুরা আল-ফিল আল্লাহর শক্তি এবং একত্বের কথা বর্ণনা করে এবং পবিত্র মক্কার আল্লাহর সুরক্ষার কথা বলে।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔