বর্তমানে হঠাৎ আর্থিক প্রয়োজনে অনেকে দ্রুত লোন নিতে চান, তবে এককালীন পরিশোধ কঠিন হওয়ায় কিস্তিতে লোন অনেকেই বেছে নিচ্ছেন। ২০২৫ সালে বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক, এনজিও ও ডিজিটাল ফিন্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম “সহজ কিস্তিতে লোন” দেওয়ার সুযোগ করছে। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে সহজে আপনি এই সুবিধা পেতে পারেন।
সহজ কিস্তিতে লোন বলতে কী বোঝায়?
সহজ কিস্তিতে লোন বলতে বোঝায় এমন একটি ঋণ ব্যবস্থা যেখানে ধার করা অর্থকে নির্দিষ্ট সময়ে ছোট ছোট কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়। সাধারণত মাসিক কিস্তি নির্ধারিত হয় এবং এর সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রযোজ্য হয়।
কোন কোন প্রতিষ্ঠান ২০২৫ সালে সহজ কিস্তিতে লোন দিচ্ছে?
১. বিকাশ অ্যাপ (bKash Digital Loan): নগদ লেনদেনের পাশাপাশি এখন লোন সুবিধাও দিচ্ছে।
২. সিটি ব্যাংক: সিটি আলফা অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত লোন পাওয়া যায়।
৩. BRAC Bank এবং IDLC Finance: কাস্টমার প্রোফাইল অনুযায়ী ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক লোন দিচ্ছে।
৪. SAJIDA Foundation, Uddipan, BURO Bangladesh – এই এনজিও সংস্থাগুলো সহজ শর্তে কিস্তিতে ঋণ দিয়ে থাকে।
সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ
-
✅ জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
-
✅ পাসপোর্ট সাইজ ছবি
-
✅ ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা ইনকাম সনদ
-
✅ ফোন নাম্বার ও ঠিকানা
-
✅ ভালো লেনদেন ইতিহাস (bKash/Nagad-এর ক্ষেত্রে)
-
✅ নির্দিষ্ট বয়সসীমা (১৮–৬০ বছর)
-
✅ শর্ত সাপেক্ষে জামিনদার প্রয়োজন হতে পারে
ক্র. | প্রতিষ্ঠান/অ্যাপ | লোন নেওয়ার যোগ্যতা (সংক্ষেপে) | আবেদন প্রক্রিয়া (সংক্ষেপে) | প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি |
---|---|---|---|---|
১ | City Bank (Personal Loan) | ন্যূনতম আয় ১৫,০০০৳, চাকুরিজীবী | শাখা বা অনলাইন আবেদন | NID, ছবি, স্যালারি স্লিপ |
২ | bKash (Smart Loan) | নির্দিষ্ট গ্রাহক, KYC পূর্ণ | অ্যাপে ‘Loan’ অপশন | NID, bKash হিস্টোরি |
৩ | Nagad Digital Loan | নির্দিষ্ট হিসাবধারী গ্রাহক | অ্যাপে সরাসরি আবেদন | ব্যবহারের হিস্ট্রি, KYC |
৪ | BRAC Bank | চাকরি বা ব্যবসা থাকতে হবে | ব্রাঞ্চ/অনলাইন আবেদন | NID, ইনকাম প্রুফ |
৫ | IDLC Finance | স্টেডি ইনকাম সোর্স | ফর্ম পূরণ ও প্রমাণপত্র জমা | ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ছবি |
৬ | SAJIDA Foundation | দরিদ্র ও মাঝারি আয়ের পরিবার | শাখায় সরাসরি যোগাযোগ | ভোটার আইডি, সদস্যপদ |
৭ | ASA NGO | গোষ্ঠীভিত্তিক সদস্য | মাসিক সভায় আবেদন | চেকপোস্ট ভেরিফিকেশন |
৮ | TMSS | দরিদ্র নারী/পুরুষ | স্থানীয় ব্রাঞ্চে আবেদন | ছবি, পরিচয়পত্র |
৯ | Daraz Micro Credit (via City Bank) | Daraz ব্যবহারকারী | Daraz অ্যাপ থেকে আবেদন | এক্টিভ একাউন্ট, ট্রানজেকশন হিস্ট্রি |
১০ | LoanKoro App | Android ব্যবহারকারী, বয়স ১৮+ | অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন ও আবেদন | ফোন এক্সেস, NID |
১১ | SBAC Bank | স্থায়ী চাকরি বা ব্যবসা | নিকটস্থ শাখায় আবেদন | ছবি, আয় প্রমাণ |
১২ | Uddipan NGO | ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা | গোষ্ঠীর মাধ্যমে আবেদন | বায়োডাটা, NID, ছবি |
সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার যোগ্যতা ও শর্তাবলী
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছর
- জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে
- স্থায়ী ঠিকানা
- ইনকাম সোর্স বা চাকরি/ব্যবসার প্রমাণ
- বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্ট একটিভ থাকতে হবে (ডিজিটাল লোনের জন্য)
সহজ কিস্তিতে লোন কিভাবে আবেদন করবেন?
অ্যাপের মাধ্যমে:বিকাশ লোন নিতে হলে প্রথমে বিকাশ অ্যাপটি আপডেট করে ওপেন করুন। এরপর “লোন” মেনুতে গিয়ে প্রযোজ্য শর্তাবলি পড়ে লোনের জন্য আবেদন করুন। আপনার লেনদেনের ইতিহাস যাচাই করে যদি আপনি যোগ্য বিবেচিত হন, তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই নির্ধারিত টাকা আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুত, কোনও জামানত ছাড়াই লোন পাওয়া যায়।
বিকাশ অ্যাপ > সেবাসমূহ > লোন > আবেদন করুন-৫ মিনিটে বিকাশ থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন
ব্যাংক বা এনজিও’র মাধ্যমে:
১. প্রথমে আপনার নিকটস্থ ব্যাংক বা এনজিও শাখায় যোগাযোগ করুন। ২. নির্ধারিত লোন আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করে পূরণ করুন। ৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন। সাধারণত নিচের কাগজপত্র লাগতে পারে:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ইনকাম সার্টিফিকেট বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ বিল/গ্যাস বিল/ইউনিয়ন সার্টিফিকেট) ৪. প্রাথমিক যাচাই ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ৫. আবেদন গৃহীত হলে ব্যাংক বা এনজিও থেকে ফোন/এসএমএস/ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হবে। ৬. চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের পর নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।
কত টাকা পর্যন্ত সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়া যায়?
- ডিজিটাল অ্যাপ লোন (বিকাশ): ৫০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা।
- ব্যাংক লোন: ২০,০০০ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত।
- এনজিও লোন: ৫,০০০ থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।
সহজ কিস্তিতে লোন পরিশোধ পদ্ধতি
- মাসিক কিস্তি বিকাশ/নগদ/ব্যাংক একাউন্ট থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেয়া হয়।
- সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করলে পেনাল্টি বা সুদ বৃদ্ধি হতে পারে।
সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার সুবিধা
- জরুরি সময়ে দ্রুত টাকা পাওয়া যায়।
- কিস্তি ছোট হওয়ায় চাপ কম।
- ব্যাংক ও ডিজিটাল মাধ্যম দুইটিতেই সুবিধা।
সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার সতর্কতা
- প্রতারক অ্যাপ ও ভুয়া সংস্থার ফাঁদে পড়বেন না।
- সব তথ্য যাচাই করে তারপর লোন নিন।
- সময়মতো কিস্তি পরিশোধ না করলে CIB রিপোর্ট খারাপ হতে পারে।
কোন ঋণ সহজে ধার করা যায়?
বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজে যে ঋণ ধার করা যায়, তা হলো ডিজিটাল পার্সোনাল লোন। যেমন: বিকাশ, নগদ, দারাজ মাইক্রোক্রেডিট কিংবা লোনকড়ো অ্যাপের মাধ্যমে কেবলমাত্র মোবাইল অ্যাপ থেকেই কয়েক মিনিটে লোন পাওয়া সম্ভব। এসব লোনে জামিনদার বা কাগজপত্রের ঝামেলা নেই, শুধু আপনার মোবাইল লেনদেনের ইতিহাস বা নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করলেই স্বল্প পরিমাণের লোন সহজেই পাওয়া যায়। তাছাড়া এনজিওগুলোর ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমেও সহজ শর্তে ঋণ নেওয়া সম্ভব।
৫ মিনিটে লোন পাওয়ার উপায়?
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে ৫ মিনিটে লোন পাওয়া আর স্বপ্ন নয়। বিকাশ, নগদ, এমক্যাশ, লোনকড়ো, টপক্যাশ এর মতো মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মাধ্যমে এখন খুব সহজেই ইলেকট্রনিক যাচাইকরণ পদ্ধতিতে তাৎক্ষণিকভাবে লোন পাওয়া যায়। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, অ্যাকটিভ মোবাইল নম্বর, এবং নির্দিষ্ট সময়ের লেনদেন ইতিহাস থাকলেই এই লোনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। শুধু অ্যাপে ঢুকে আবেদন করলেই কিছুক্ষণের মধ্যে টাকা চলে আসে আপনার অ্যাকাউন্টে, কোনো জামিনদার বা ব্যাংকে যাওয়ার ঝামেলা ছাড়াই।
অনলাইনে কি লোন পাওয়া যায়?
জ্বি, বর্তমানে অনলাইনে লোন পাওয়া সম্পূর্ণ সম্ভব এবং এটি এখন অনেক সহজ ও দ্রুত। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও এবং ফিনটেক কোম্পানি যেমন বিকাশ, নগদ, লোনকড়ো, রিনস্বস্তি, এবং টপক্যাশ অনলাইন আবেদন গ্রহণ করে থাকে। আপনি মোবাইল অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা অনলাইন ফর্ম পূরণ করে সহজেই ব্যক্তিগত, শিক্ষা, অথবা ব্যবসার জন্য লোন নিতে পারেন। প্রক্রিয়াটি সাধারণত কেওয়াইসি যাচাই, এনআইডি নম্বর ও মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে সম্পন্ন হয় এবং সফল আবেদনকারীরা কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের একাউন্টে টাকা পেয়ে যান।
সবচেয়ে সহজ লোন কোনটি?
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে সহজে পাওয়া যায় এমন লোন হলো মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসভিত্তিক (MFS) মাইক্রো লোন, যেমন বিকাশ লোন, নগদ ইন্সট্যান্ট লোন, লোনকড়ো ইত্যাদি। এই লোনগুলোতে সাধারণত কোনো জামানত বা কাগজপত্রের ঝামেলা নেই, শুধুমাত্র এনআইডি ও মোবাইল নম্বর যাচাই করেই মুহূর্তে লোন অনুমোদন হয়। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো—এগুলো মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ২৪/৭ সময়ে নেওয়া যায়, এবং কয়েক মিনিটেই টাকা আপনার একাউন্টে পৌঁছে যায়। সহজতা, দ্রুততা ও কম ডকুমেন্টেশন-এর কারণে এসব লোন বর্তমানে অনেক জনপ্রিয়।
প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন: বিকাশ লোনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কত?
উত্তর: বর্তমানে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: কিস্তির সংখ্যা কত হতে পারে?
উত্তর: সাধারণত ৩ থেকে ১২ মাসের কিস্তির অপশন থাকে।
প্রশ্ন: লোনে ইন্টারেস্ট কত?
উত্তর: অ্যাপ লোনে ৭%-১২% এবং ব্যাংকে ৯%-১৬% পর্যন্ত হতে পারে।
উপসংহার:
২০২৫ সালে সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়া আগের চেয়ে আরও সহজ হয়েছে। আপনি চাইলে অ্যাপের মাধ্যমে বা সরাসরি ব্যাংক/এনজিওতে গিয়ে আবেদন করতে পারেন। তবে লোন নেয়ার আগে অবশ্যই শর্তাবলী পড়ে বুঝে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। আপনার প্রয়োজনে যদি এটি সাহায্য করে, তবে এই তথ্য শেয়ার করুন বন্ধুদের সঙ্গে!
আরও পড়ুন-অনলাইনে পূবালী ব্যাংকের হোম লোন পেতে চান?
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔