বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য সম্প্রতি রবি ওয়াইফাই একটি নতুন সার্ভিস চালু করেছে। প্রচারণায় বলা হচ্ছে এটি সহজে ইনস্টল করা যায়, সাশ্রয়ী এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করে। তবে বাস্তবে এর অভিজ্ঞতা কেমন? এই ব্লগে আমি আমার নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি—প্রমাণসহ।
আরও পড়ুন-বর্তমানে কোন কোন এলাকায় Robi WiFi চালু হয়েছে
রবি ওয়াইফাই সার্ভিস নেওয়ার প্রক্রিয়া
প্রায় ২৫ দিন আগে আমি রবি ওয়াইফাই সেবার একটি বিজ্ঞাপন দেখি এবং অনলাইনে একটি অর্ডার প্লেস করি। সার্ভিসটির জন্য মোট খরচ হয় ৩০০০ টাকা।
-
ফোন কনফার্মেশনের পর এজেন্ট এসে ডিভাইস ইনস্টল করে দেন।
-
পেমেন্ট করি বিকাশের মাধ্যমে।
ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু ও সমস্যার মুখোমুখি হওয়া
ডিভাইস ইনস্টল করার কয়েক ঘণ্টা পরই বড় সমস্যা দেখা দেয়—
-
ইন্টারনেট গতি একেবারেই দুর্বল।
-
হেল্পলাইনে ফোন করলে শুরুতে কেউ রিসিভ করে না।
-
বারবার কল করলে মিনিট কেটে যাচ্ছে, অথচ সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।
কয়েকদিন পর এক প্রতিনিধি আমাকে জানালেন, সমস্যাটি সমাধান করা হবে। কিন্তু বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গ্রাহক সাপোর্টের অভিজ্ঞতা
-
হেল্পলাইন: ১০–১২ বার ফোন করেছি, বেশিরভাগ সময় ফোন রিসিভ করেনি।
-
মিনিট খরচ: এভাবে আমার প্রায় ১১০০ টাকা শুধু কল চার্জেই চলে গেছে।
-
ফেসবুক পেজে যোগাযোগ: তারা জানালো এখানে সাপোর্ট দেওয়া হয় না।
-
রবি অফিসিয়াল সিম হেল্পলাইন: তারাও সাহায্য করতে পারেনি, বরং হেল্প সেন্টারে যোগাযোগ করতে বলেছে।
আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি
আমি একজন অনলাইন কর্মী। ইন্টারনেট না থাকার কারণে গত ২০–২৫ দিনে আমার প্রায় ২০–২৫ হাজার টাকার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
-
মাসিক ১০০০ টাকার প্ল্যানও তারা কেটে নিয়েছে।
-
অথচ আমি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারিনি।
প্রমাণাদি
আমার কাছে যেসব প্রমাণ রয়েছে:
-
বিকাশ পেমেন্ট রিসিট।
-
হেল্পলাইনের কল হিস্ট্রি।
-
ফেসবুক চ্যাটের স্ক্রিনশট।
-
এখনো ডিভাইসটি আমার কাছে রয়েছে।
দেখুন এগুলি সব কিছু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এর বাহিরে আরো অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে এখনো হচ্ছি। তাই এখানে আমি আর স্ক্রিনশট গুলি শেয়ার করছি না আপনাদের ব্যক্তিগতভাবে যদি প্রয়োজন হয় আমার WhatsApp নাম্বারে যোগাযোগ করবেন তাহলেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ভোক্তা অধিকার ও আইনগত পদক্ষেপ
আমি নিকটস্থ থানায় গিয়েছিলাম, তারা জটিল কিছু প্রক্রিয়া বলে দেয় যা সম্ভব হয়নি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও 333 নাম্বারে ফোন দিয়েছি, কিন্তু কার্যকর সমাধান পাইনি।
সবশেষে আমি সাইবার পুলিশ সেন্টার সিআইডি-তে লিখিত অভিযোগ করেছি।
কেন এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি
আমি চাই অন্য গ্রাহকরা যেন সচেতন থাকে। শুধু প্রচারণা দেখে সিদ্ধান্ত না নিয়ে আগে সেবার মান যাচাই করুন।
বাংলাদেশে অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তাদের পুরোনো ব্রডব্যান্ড ছেড়ে রবি ওয়াইফাই নিচ্ছেন এবং তারাও সমস্যায় পড়ছেন।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: রবি ওয়াইফাই কি সত্যিই ভালো ইন্টারনেট স্পিড দেয়?
উত্তর: বিজ্ঞাপনে বলা হলেও বাস্তবে স্পিড দুর্বল ও অসংগতিপূর্ণ।
প্রশ্ন: সমস্যা হলে কি দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়?
উত্তর: না, হেল্পলাইন বারবার কল করলে মিনিট কেটে যায় কিন্তু সমস্যা সমাধান হয় না।
প্রশ্ন: প্রমাণসহ অভিযোগ কোথায় করা যায়?
উত্তর: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সাইবার পুলিশ সেন্টার (CID) এবং প্রয়োজনে থানায় জিডি করতে হবে।
উপসংহার
রবি ওয়াইফাই হয়তো নতুন সার্ভিস হিসেবে ভালো কিছু দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাজারে এসেছে, কিন্তু বাস্তবে এটি গ্রাহক সাপোর্টহীন ও সমস্যায় ভরা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলবো, এই মুহূর্তে এটি ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ।
আপনিও যদি একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, তবে প্রমাণসহ অভিযোগ করুন সাইবার পুলিশ সেন্টার বা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে।
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
আরও পড়ুন-তারবিহীন Robi WiFi ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট: ডিভাইসের দাম ও মাসিক প্ল্যান
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔