বাংলাদেশে প্রাইজবন্ড কত ধরনের ও কত টাকার হয়

বাংলাদেশে অনেকেই এখনো প্রাইজবন্ড সম্পর্কে সীমিত ধারণা রাখেন। অনেকে জানেন না—প্রাইজবন্ডের কতগুলো ধরণ আছে, কত টাকার প্রাইজবন্ড ইস্যু করা হয়, এবং কোনটা এখনও চলমান।
আজকের এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত জানবো বাংলাদেশে প্রাইজবন্ডের ধরন, মূল্যমান, এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে — যা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরও দেখুন-প্রাইজবন্ড কি ও কিভাবে টাকা পাবেন | প্রাইজবন্ড গাইড A-Z

প্রাইজবন্ড কি?

প্রাইজবন্ড হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা এক ধরনের সরকারি সঞ্চয় বন্ড, যেখানে বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট মূল্যে বন্ড কিনে লটারির মাধ্যমে পুরস্কার জেতার সুযোগ পান।
এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো — মূল টাকা কখনো হারায় না, চাইলে যেকোনো সময় ফেরত নেওয়া যায়।

প্রাইজবন্ডের ধরন ও মূল্যমান

বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একাধিক ধরনের প্রাইজবন্ড ইস্যু করা হয়েছে। নিচে সেগুলোর বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হলো 👇

প্রাইজবন্ডের নাম মূল্যমান (টাকা) ইস্যু কর্তৃপক্ষ বর্তমান অবস্থা
সাধারণ প্রাইজবন্ড ১০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ✅ চালু
সঞ্চয় প্রাইজবন্ড ৫০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ❌ বন্ধ
সঞ্চয় প্রাইজবন্ড ২০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ❌ বন্ধ
সঞ্চয় প্রাইজবন্ড ৫০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ❌ বন্ধ
সঞ্চয় প্রাইজবন্ড ১,০০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ❌ বন্ধ
সঞ্চয় প্রাইজবন্ড ১০,০০০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ❌ বন্ধ

বর্তমানে কোন প্রাইজবন্ড চালু?

বর্তমানে (২০২৫ সালে) শুধুমাত্র ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড বাংলাদেশে চালু আছে।
এটি হলো “বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাইজবন্ড (Prize Bond Denomination Tk. 100)” — যা এখন পর্যন্ত একমাত্র সক্রিয় প্রাইজবন্ড সিরিজ।

🔹 এটি সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শাখা থেকে পাওয়া যায়।
🔹 প্রতি ৩ মাস অন্তর এর ড্র অনুষ্ঠিত হয়
🔹 পুরস্কারের টাকা সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত জেতা যায়।

অতীতে চালু থাকা প্রাইজবন্ডসমূহ

বাংলাদেশ ব্যাংক অতীতে বিভিন্ন সময়ে ৫০, ২০০, ৫০০, ১,০০০ এবং ১০,০০০ টাকার প্রাইজবন্ড ইস্যু করেছিল।
কিন্তু ধীরে ধীরে এই বন্ডগুলোর প্রচলন বন্ধ হয়ে গেছে, কারণ এগুলোর প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ কম ছিল এবং মূলত ১০০ টাকার বন্ডকেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের উপযোগী হিসেবে রাখা হয়েছে।

১০০ টাকার প্রাইজবন্ডের পুরস্কার কাঠামো (২০২৫ অনুযায়ী)

পুরস্কারের ধরণ পুরস্কারের পরিমাণ
১ম পুরস্কার ৬,০০,০০০ টাকা
২য় পুরস্কার ৩,২৫,০০০ টাকা
৩য় পুরস্কার ১,০০,০০০ টাকা
৪র্থ পুরস্কার ৫০,০০০ টাকা
৫ম পুরস্কার ১০,০০০ টাকা
৬ষ্ঠ পুরস্কার ১,০০০ টাকা

🔸 প্রতি ৩ মাস অন্তর ড্র অনুষ্ঠিত হয় (জানুয়ারি, এপ্রিল, জুলাই, অক্টোবর)।
🔸 ড্রয়ের ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
🔸 পুরস্কার দাবি করতে পারবেন ৬ মাসের মধ্যে।

কোথায় প্রাইজবন্ড কেনা যায়?

১০০ টাকার প্রাইজবন্ড আপনি নিচের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কিনতে পারেনঃ

  1. বাংলাদেশ ব্যাংক

  2. সোনালী ব্যাংক

  3. অগ্রণী ব্যাংক

  4. রূপালী ব্যাংক

  5. জনতা ব্যাংক

  6. নির্দিষ্ট কিছু অনুমোদিত ব্যাংক শাখা

👉 এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত এজেন্টদের কাছেও বন্ড বিক্রি করা হয়।

প্রাইজবন্ড কেনার টিপস

🔹 একসাথে একাধিক প্রাইজবন্ড কিনুন — এতে জেতার সম্ভাবনা বাড়বে।
🔹 সিরিয়াল অনুযায়ী বিভিন্ন নম্বরের বন্ড রাখুন।
🔹 ড্রয়ের তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ফলাফল মিলিয়ে দেখুন।
🔹 বন্ড নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করুন।

শেষ কথা

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাইজবন্ডের একমাত্র সক্রিয় ধরণ হলো ১০০ টাকার প্রাইজবন্ড, যা বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত একটি নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগ ব্যবস্থা।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ী — সবাই চাইলে এই বন্ড কিনে ভবিষ্যতে ভাগ্য পরীক্ষা করতে পারেন।
মাত্র ১০০ টাকায় আপনি হয়তো লাখপতি হতে পারেন! 💰

আরও পড়ুন-সঞ্চয়পত্র নাকি এফডিআর-বর্তমান বাংলাদেশে কোথায় বিনিয়োগ করবেন?

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।