দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দৈনন্দিন যোগাযোগের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে ফেসবুক মেসেঞ্জার। বন্ধু, পরিবার কিংবা অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ, ফাইল শেয়ারিং, ভিডিও কল—সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল এই মেসেঞ্জার অ্যাপ। কিন্তু সম্প্রতি প্রযুক্তি দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এক আলোচিত খবর—বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ফেসবুক মেসেঞ্জারের জনপ্রিয় একটি সংস্করণ!
এই ঘোষণার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই জানতে চাইছেন, ফেসবুক কি সত্যিই মেসেঞ্জার বন্ধ করে দিচ্ছে? ব্যবহারকারীরা তাহলে কীভাবে যোগাযোগ করবেন? এই পরিবর্তনের কারণই বা কী? আজকের এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো পুরো বিষয়টি—বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের আলোকে, সহজ ও আকর্ষণীয়ভাবে।
আরও পড়ুন-Gemini Student Offer এখন বাংলাদেশে! এক বছর ফ্রি AI Pro সুবিধা পাবেন কি?
কী ঘটছে আসলে
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান Meta সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাদের মেসেঞ্জার সেবার একটি নির্দিষ্ট সংস্করণ বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারী ইতোমধ্যেই নোটিফিকেশন পেতে শুরু করেছেন যে, “এই সংস্করণটি খুব শিগগিরই আর কাজ করবে না।”
তবে এর মানে এই নয় যে ফেসবুক মেসেঞ্জার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বরং, কোম্পানিটি তাদের মেসেজিং সিস্টেমকে আরও আধুনিক ও সুরক্ষিত করতে নতুন কাঠামোয় সাজাচ্ছে। সহজভাবে বলা যায়, মেসেঞ্জারের পুরোনো কিছু সিস্টেম ও ফিচার এখন বিদায় নিতে যাচ্ছে, আর তার জায়গা নিচ্ছে উন্নত সংস্করণ ও ওয়েবভিত্তিক পরিষেবা।
কেন এই পরিবর্তন
Meta-র মুখপাত্রদের মতে, বর্তমান সময়ে অধিকাংশ ব্যবহারকারী মোবাইল ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মেসেঞ্জার ব্যবহার করেন। পুরোনো সংস্করণের ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কমে গেছে, ফলে সেই অংশে প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ রাখা অপ্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কোম্পানির লক্ষ্য এখন —
- এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন (End-to-End Encryption) সম্পূর্ণরূপে চালু করা, যাতে বার্তাগুলো আরও সুরক্ষিত থাকে।
- মেসেঞ্জার ও ফেসবুককে একত্র করে আরও সংযুক্ত অভিজ্ঞতা তৈরি করা।
- একাধিক প্ল্যাটফর্মে (ওয়েব, মোবাইল, মেটা-অ্যাপস) মেসেজিংকে একীভূত করা।
এই কারণেই পুরোনো কিছু সংস্করণ ও আলাদা সাপোর্ট ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ব্যবহারকারীদের জন্য এর মানে কী
এই পরিবর্তনের ফলে যারা ঐ নির্দিষ্ট সংস্করণটি ব্যবহার করছেন, তারা একটি নির্দিষ্ট তারিখের পর আর তা ব্যবহার করতে পারবেন না। ব্যবহারকারীদের মেসেজ, ছবি বা ফাইল হারিয়ে যাবে না — কারণ এগুলো Meta-র সার্ভারে নিরাপদে সংরক্ষিত থাকবে।
পরিবর্তনের পর আপনি চাইলে নিম্নলিখিত উপায়ে মেসেঞ্জার ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবেন:
-
ফেসবুকের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি মেসেজ পাঠানো ও গ্রহণ করা যাবে।
-
মোবাইলের মেসেঞ্জার অ্যাপ সম্পূর্ণভাবে চালু থাকবে, এতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
-
নতুন ডিজাইন ও উন্নত ফিচারসহ ওয়েব সংস্করণে আরও সহজ অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।
নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্য
এই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হলো ডেটা সিকিউরিটি বা তথ্যের নিরাপত্তা। Meta জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতের মেসেঞ্জার সংস্করণগুলোতে আরও শক্তিশালী এনক্রিপশন, প্রাইভেসি কন্ট্রোল এবং ইউজার-ফ্রেন্ডলি সেটিংস যুক্ত করতে যাচ্ছে।
ব্যবহারকারীরা চাইলে এখন থেকেই তাদের চ্যাট হিস্ট্রি সেভ করতে পারেন, যাতে পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা না হয়।
কবে থেকে কার্যকর হবে
Meta ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়া চালু করছে। অনেক ব্যবহারকারী ইতোমধ্যে নোটিফিকেশন পেয়েছেন, আবার কেউ কেউ নভেম্বরের শেষ থেকে তা দেখতে পাবেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই পরিবর্তন সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন আপনার করণীয়
- আপডেট চেক করুন — যদি আপনি পুরোনো সংস্করণ ব্যবহার করেন, নতুন সংস্করণে আপডেট করুন।
- চ্যাট ব্যাকআপ রাখুন — গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বা মেসেজ থাকলে ডাউনলোড করে রাখুন।
- ওয়েব বা মোবাইল সংস্করণে লগইন অভ্যস্ত করুন — যাতে পরিবর্তনের পর কোনো সমস্যায় না পড়েন।
শেষ কথা
ফেসবুক মেসেঞ্জার আমাদের যোগাযোগের ধরণই বদলে দিয়েছে। প্রিয়জনের সঙ্গে মুহূর্তের ব্যবধানেই কথা বলা, ছবি পাঠানো, কিংবা অফিসের কাজে বার্তা বিনিময় — সবই এখন এই এক মাধ্যমেই সম্ভব।
তাই একটি সংস্করণ বন্ধ হলেও, মেসেঞ্জার পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না, বরং আরও আধুনিক ও সুরক্ষিত রূপে আমাদের কাছে ফিরে আসছে।
এখন শুধু প্রয়োজন সামান্য সচেতনতা ও প্রস্তুতি। পরিবর্তন মানেই নতুন সুযোগ — আর সেটাই হচ্ছে ডিজিটাল বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তি। 🌐
আরও পড়ুন- দেশে প্রথমবারের মতো ফি-ছাড়া ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা জানুন
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔


