বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল সিমকার্ড নিবন্ধন করা যাবে।
এই নীতিমালা কার্যকর করা হচ্ছে অপব্যবহার রোধ ও নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য।
বর্তমানে দেশে চারটি প্রধান অপারেটর — গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক — গ্রাহকদের জন্য সিম নিবন্ধন সেবা দিচ্ছে। তবে অনেক গ্রাহক অজান্তেই একাধিক সিম নিজেদের নামে নিবন্ধন করে ফেলেছেন, যা ভবিষ্যতে আইনি ও নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন-গ্রামীণফোন নিয়ে এলো কিস্তিতে স্মার্টফোন+ইন্টারনেট + মিনিট একসাথে
৩০ অক্টোবর ২০২৫: অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্টারের শেষ তারিখ
BTRC জানিয়েছে, যারা নিজেদের এনআইডিতে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধন করেছেন, তারা ৩০ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে অতিরিক্ত সিমসমূহ ডি-রেজিস্টার (নিবন্ধন বাতিল) বা মালিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন।
নির্ধারিত সময়ের পর যদি কেউ অতিরিক্ত সিম সক্রিয় রাখেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেসব সিম বন্ধ করে দেবে।
নিজের নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানবেন যেভাবে
আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন, আপনার NID দিয়ে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে।
এর জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন 👇
1️⃣ আপনার মোবাইল ফোনে যান
2️⃣ ডায়াল করুন *16001#
3️⃣ তারপর দিন আপনার NID-এর শেষ ৪ ডিজিট
4️⃣ 📩 কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি SMS-এ জানতে পারবেন, কোন কোন অপারেটরে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে।
এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং সকল অপারেটরের জন্য প্রযোজ্য।
সিম ডি-রেজিস্টার বা মালিকানা পরিবর্তন করবেন যেভাবে
যদি আপনার নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত থাকে, তাহলে অতিরিক্ত সিমগুলো ডি-রেজিস্টার বা মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে। এজন্যঃ
✅ সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার বা সার্ভিস পয়েন্টে যান।
✅ সঙ্গে নিন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি ও ফটোকপি।
✅ যেসব সিম বাতিল করতে চান, সেগুলোর নম্বর দিন।
✅ প্রয়োজন হলে নতুন মালিকের নাম ও এনআইডি দিয়ে মালিকানা পরিবর্তন করুন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
BTRC-এর এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো—
🔹 অপরাধে সিমের অপব্যবহার রোধ
🔹 অবৈধ নিবন্ধন ঠেকানো
🔹 গ্রাহক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা
🔹 এবং জাতীয় ডাটাবেসে সঠিক তথ্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।
⚠️ সতর্কবার্তা
যারা সময়মতো অতিরিক্ত সিম বাতিল করবেন না, তাদের ঐ সিম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এছাড়া পরবর্তীতে যদি কোনো অপরাধমূলক কাজে সেই সিম ব্যবহৃত হয়, তাহলে সিমের মালিককেই দায়ী করা হবে।
📢 গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এক নজরে
বিষয় | বিস্তারিত |
---|---|
সর্বোচ্চ সিম সংখ্যা | ১০টি |
সময়সীমা | ৩০ অক্টোবর ২০২৫ |
চেক করার কোড | *16001# |
প্রয়োজনীয় তথ্য | NID-এর শেষ ৪ ডিজিট |
করণীয় | অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্টার বা মালিকানা পরিবর্তন |
কর্তৃপক্ষ | বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC) |
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১: আমি যদি ১২টি সিম ব্যবহার করি, তাহলে কি দুইটি সিম বন্ধ হয়ে যাবে?
উত্তর: হ্যাঁ, আপনাকে ৩০ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে অতিরিক্ত দুইটি সিম ডি-রেজিস্টার করতে হবে, না হলে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন ২: এক পরিবারের সদস্যরা কি একই NID-এ সিম রাখতে পারেন?
উত্তর: না, প্রত্যেকের নিজস্ব NID অনুযায়ী সিম নিবন্ধন করতে হবে।
প্রশ্ন ৩: আমি বিদেশে আছি, আমার অতিরিক্ত সিম ডি-রেজিস্টার কিভাবে করবো?
উত্তর: আপনার অপারেটরের অনলাইন সার্ভিস বা অনুমোদিত প্রতিনিধি (power of attorney) এর মাধ্যমে সিম বাতিল করতে পারেন।
প্রশ্ন ৪: *16001# কোডটি কি সব অপারেটরের জন্য একই?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক – সব অপারেটরের জন্যই প্রযোজ্য।
উপসংহার
BTRC-এর এই উদ্যোগ বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার একটি বড় পদক্ষেপ।
তাই এখনই দেখে নিন আপনার নামে কতটি সিম নিবন্ধিত আছে এবং যদি ১০টির বেশি হয়, তাহলে দ্রুত অতিরিক্ত সিমগুলো ডি-রেজিস্টার বা মালিকানা পরিবর্তন করুন।
এই নিয়ম মানলে আপনি যেমন নিরাপদ থাকবেন, তেমনি দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক সিস্টেমও আরও সুশৃঙ্খল হবে।
আরও পড়ুন-প্রাইম ব্যাংকের জিরো ক্রেডিট কার্ড -কোন ফি নেই, সব প্রিমিয়াম সুবিধা
ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔