বিকাশ-নগদ-রকেট লেনদেনে হাজারে কাটবে মাত্র ১.৫০ টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল ও সহজ করতে এবার বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হচ্ছে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (NPSB)–এর নতুন সেবা — যেখানে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) ওয়ালেট এখন একে অপরের সঙ্গে সরাসরি লেনদেন করতে পারবে।

এতদিন পর্যন্ত এই এনপিএসবি সিস্টেমটি শুধু ব্যাংক টু ব্যাংক লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা যেত। কিন্তু এখন থেকে ব্যাংক, এমএফএস ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (PSP)—সবই যুক্ত হচ্ছে এক ছাতার নিচে।

আরও পড়ুন-এখন থেকে সরাসরি বিকাশ থেকে নগদে টাকা পাঠানো যাবে

নতুন ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য

➡️ নাম: ইন্টার-অপারেবল বা পারস্পরিক সংযুক্ত সিস্টেম
➡️ পরিচালনা করছে: বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ (PSD)
➡️ চালু হবে: ১ নভেম্বর ২০২৫
➡️ উদ্দেশ্য: নগদ অর্থের ব্যবহার কমানো ও ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধি করা

নতুন চার্জ কাঠামো

নতুন ব্যবস্থায় ব্যাংক, এমএফএস ও পেমেন্ট সার্ভিসের মধ্যে লেনদেনের চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে নিম্নরূপঃ

লেনদেনের ধরন প্রতি ১০০০ টাকায় চার্জ
ব্যাংক ➜ এমএফএস ১.৫০ টাকা
এমএফএস ➜ ব্যাংক ৮.৫০ টাকা
ব্যাংক ➜ ব্যাংক ১.৫০ টাকা
ব্যাংক ➜ পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (PSP) ২.০০ টাকা

🔸 গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রাপক গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না।

এই সেবার মাধ্যমে যা করা যাবে

✅ বিকাশ থেকে নগদে বা রকেটে টাকা পাঠানো যাবে।
✅ নগদ থেকে বিকাশে বা রকেটে টাকা পাঠানো যাবে।
✅ ব্যাংক থেকে এমএফএস ওয়ালেটে টাকা ট্রান্সফার করা যাবে (যেমন: সোনালী ব্যাংক থেকে বিকাশে)।
✅ এমএফএস ওয়ালেট থেকে সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো যাবে।

এর ফলে আর আলাদা অ্যাপ বা ম্যানুয়াল প্রসেসের ঝামেলা থাকবে না। একবার ব্যাংক কার্ড বা অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করলেই এনপিএসবি সিস্টেমে সব লেনদেন সম্পন্ন করা যাবে।

কেন এই পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশে বর্তমানে ২০ কোটির বেশি এমএফএস অ্যাকাউন্ট আছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়সহ বিভিন্ন অ্যাপে। কিন্তু এই লেনদেনগুলো এতদিন এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে সরাসরি সম্ভব ছিল না।

এখন এনপিএসবি যুক্ত হওয়ায়
👉 লেনদেন আরও দ্রুত, সাশ্রয়ী ও নিরাপদ হবে।
👉 ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং লেনদেন একত্রিত হবে।
👉 ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অনলাইন বিক্রেতা ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সহজ হবে পেমেন্ট গ্রহণ।

কীভাবে ব্যবহার করবেন

১️⃣ আপনার ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল অ্যাপে লগইন করুন।
২️⃣ “Interoperable Transfer” বা “NPSB Transfer” অপশনটি নির্বাচন করুন।
৩️⃣ প্রাপক হিসেবে এমএফএস বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বেছে নিন।
৪️⃣ প্রাপক নম্বর, এমাউন্ট ও পিন দিন।
৫️⃣ ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে তাৎক্ষণিক নোটিফিকেশন পাবেন।

নিরাপত্তা ও সীমাবদ্ধতা

🔹 এই সেবা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সীমার মধ্যেই চলবে।
🔹 গ্রাহককে অবশ্যই KYC যাচাইকৃত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে।
🔹 NPSB-এর মাধ্যমে ব্যাংক টু ব্যাংক ট্রান্সফারের আগের নিয়ম অপরিবর্তিত থাকবে।

সম্ভাব্য প্রভাব

এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি গঠনে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। নগদ অর্থের ব্যবহার কমে গেলে
➡️ লেনদেনের স্বচ্ছতা বাড়বে,
➡️ মোবাইল ব্যাংকিং আরও জনপ্রিয় হবে,
➡️ ফিনটেক সেক্টরে নতুন সুযোগ তৈরি হবে,
➡️ সরকারের “ডিজিটাল বাংলাদেশ” লক্ষ্য বাস্তবায়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।

উপসংহার

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ইন্টার-অপারেবল উদ্যোগ দেশের পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে। এখন থেকে ব্যাংক ও মোবাইল ওয়ালেটের মধ্যে আর কোনো প্রাচীর থাকবে না। বিকাশ, নগদ, রকেট — সব একসাথে কাজ করবে একই প্ল্যাটফর্মে।

👉 এতে ব্যবহারকারী শুধু সময় ও খরচই বাঁচাবে না, বরং আরও নিরাপদ ও আধুনিক ডিজিটাল লেনদেনের অভিজ্ঞতা পাবে।

আরও পড়ুন-বিকাশ ইসলামিক শরিয়াহ ভিত্তিক সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।