বর্তমান সময়ে টাকার প্রয়োজনীয়তা হঠাৎ করে এসে পড়ে – হতে পারে ব্যবসা, চিকিৎসা, পড়াশোনা কিংবা জরুরি পারিবারিক খরচে। এই পরিস্থিতিতে যখন ব্যাংকে যেতে সময় নেই, তখন বিকাশ অ্যাপেই পাওয়া যাচ্ছে সহজ এবং দ্রুত লোনের সুবিধা। ২০২৫ সালে বিকাশ গ্রাহকদের জন্য ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুযোগ নিয়ে এসেছে, যা এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ ও দ্রুত প্রসেসে পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন-সহজে বিকাশ সেভিংস একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ লোনের বিস্তারিত
বিকাশ লোন একটি ডিজিটাল ঋণ সেবা যা মূলত ব্যক্তিগত আর্থিক প্রয়োজন মেটাতে দ্রুত এবং সহজে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেয়। গ্রাহকরা সরাসরি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। শুরুতে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই লোনে একটি নির্দিষ্ট সুদের হার ও নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে কিস্তি বা এককালীন পরিশোধের সুযোগ পাওয়া যায়।
বিকাশ লোন সার্ভিস
বিকাশ লোন সার্ভিস ২০২৫ সালে আরও সহজ, দ্রুত ও ব্যবহারবান্ধব হয়েছে। এখন গ্রাহকরা মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই অ্যাপ থেকে ৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন, কোনও জটিল কাগজপত্র ছাড়াই। এই সার্ভিস মূলত BRAC Bank এবং অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়।
বিকাশ লোন পরিশোধ
বিকাশ লোন পরিশোধ এখন আরও সহজ ও সুবিধাজনক। আপনি বিকাশ অ্যাপেই “লোন” অপশনে গিয়ে কিস্তির পরিমাণ দেখে সরাসরি পেমেন্ট করতে পারবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করলে বাড়তি চার্জ ছাড়াই আপনি আবারও লোন নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া বিকাশ অ্যাপ নোটিফিকেশনের মাধ্যমেও সময়মতো স্মরণ করিয়ে দেয়।
ℹ️ এই ধরনের আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন।
বিকাশ লোন লিমিট
বিকাশ লোন লিমিট নির্ভর করে আপনার লেনদেনের ইতিহাস, বিকাশ অ্যাকাউন্টের কার্যক্রম এবং ক্রেডিট প্রোফাইলের ওপর। বর্তমানে গ্রাহকরা সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারেন। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে কম পরিমাণ লোন অনুমোদিত হয় এবং সময়মতো পরিশোধ করলে ধীরে ধীরে এই লিমিট বাড়ে।
বিকাশ লোন ইন্টারেস্ট
বিকাশ লোন নেওয়ার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর ইন্টারেস্ট রেট। বর্তমানে বিকাশ লোনের ওপর বার্ষিক সুদের হার প্রায় ৯% থেকে ১২% পর্যন্ত হতে পারে। এই হার মাসিক কিস্তি হিসেবে কেটে নেওয়া হয় এবং সময়মতো লোন পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত চার্জও আরোপ হতে পারে। তাই লোন নেওয়ার আগে সুদের হিসাব ভালোভাবে বুঝে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন-বিকাশে গেম খেলে ২০০০ টাকা পুরস্কার নিন
📲 বিকাশ লোন কারা পাবে?
-
অবশ্যই একজন একটিভ বিকাশ অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হতে হবে।
-
নির্দিষ্ট লেনদেনের ইতিহাস থাকতে হবে (মিনিমাম ৬ মাস ধরে লেনদেন)
-
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং সঠিক জন্মতারিখ অ্যাকাউন্টে যুক্ত থাকতে হবে
-
বিকাশ অ্যাপে KYC প্রক্রিয়া সম্পন্ন থাকতে হবে
-
নগদ ইনকাম বা ট্রানজেকশন রেকর্ড থাকতে হবে
📤 বিকাশ লোন নেওয়ার নিয়ম
-
বিকাশ অ্যাপ ওপেন করুন।
-
সার্ভিস মেনু থেকে “লোন” অপশনটি নির্বাচন করুন।
-
“লোন আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করুন ।
-
আপনার পছন্দসই পরিমাণ (৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা) সিলেক্ট করুন।
-
আবেদন সাবমিট করুন – ২ মিনিটের মধ্যে এসএমএসে জানিয়ে দেয়া হবে আপনি প্রাথমিকভাবে যোগ্য কি না।
-
যদি অনুমোদন পান, তবে টাকা সরাসরি আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
💸 বিকাশ লোনের সার্ভিস চার্জ ও রিটার্ন নিয়ম
বিষয় | বিস্তারিত |
---|---|
সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ | ৫০,০০০ টাকা |
সর্বনিম্ন ঋণ | ৫,০০০ টাকা |
সুদের হার | বছরে ৯% থেকে ১২% পর্যন্ত (EMI ভিত্তিক) |
পরিশোধ পদ্ধতি | মাসিক কিস্তিতে (৩/৬/১২ মাসের মেয়াদ) |
বিলম্ব ফি | সময়মতো পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত চার্জ |
🔒 বিকাশ লোন কতটা নিরাপদ?
বিকাশ বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস। লোন সুবিধাটি মূলত ব্র্যাক ব্যাংক ও অন্যান্য অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে পার্টনারশিপে পরিচালিত হয়। সকল তথ্য এনক্রিপ্টেড থাকে এবং অনুমোদিত লোনই কেবল অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন-বিকাশ ইসলামিক শরিয়াহ ভিত্তিক সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার নিয়ম
💡 গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
-
লোন নেয়ার আগে ভালভাবে শর্তাবলী পড়ে নিন
-
সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করুন, না হলে ভবিষ্যতে লোন নিতে সমস্যা হবে
-
প্রয়োজনে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন: 16247
বিকাশ লোন আবেদন ফরম
বিকাশ লোন নেওয়ার জন্য আলাদা কোনো কাগজে আবেদন ফরম পূরণ করতে হয় না। আপনি চাইলে সরাসরি বিকাশ অ্যাপ থেকেই ডিজিটাল আবেদন ফরম পূরণ করতে পারেন। অ্যাপে “লোন” সেকশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাবমিট করলেই আপনার আবেদন প্রসেস শুরু হবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ঘরে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে করা সম্ভব, যা সময় এবং ঝামেলা দুটোই কমায়।
বিকাশ লোন কিভাবে পাওয়া যাবে
বিকাশ লোন পেতে হলে আপনাকে বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিন থেকে “লোন” অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপর কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করে আবেদন করতে হয়। আপনার একাউন্টের কার্যক্রম, লেনদেনের ইতিহাস ও ক্রেডিট স্কোরের ওপর ভিত্তি করে আপনার লোন অনুমোদিত হবে। যদি আপনি যোগ্য হন, তাহলে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা আপনার বিকাশ একাউন্টে সরাসরি জমা পড়ে যাবে।
বিকাশ লোন কিভাবে নিবো
বিকাশ লোন নিতে হলে প্রথমে বিকাশ অ্যাপটি আপডেট করে ওপেন করুন। এরপর “লোন” মেনুতে গিয়ে প্রযোজ্য শর্তাবলি পড়ে লোনের জন্য আবেদন করুন। আপনার লেনদেনের ইতিহাস যাচাই করে যদি আপনি যোগ্য বিবেচিত হন, তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যেই নির্ধারিত টাকা আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুত, কোনও জামানত ছাড়াই লোন পাওয়া যায়।
বিকাশ লোন সর্বোচ্চ কত
বর্তমানে বিকাশ ‘ডিজিটাল ন্যানো লোন’ এর আওতায় গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারেন। তবে এই সীমা নির্ধারিত হয় গ্রাহকের লেনদেনের ইতিহাস ও প্রোফাইল যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে। শুরুতে সীমিত অঙ্কের লোন অনুমোদন পেলেও নিয়মিত পরিশোধ করলে ধাপে ধাপে লোনের পরিমাণ বাড়তে পারে।
বিকাশ লোন নীতিমালা কি?
বিকাশ লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়। লোনের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই বিকাশের কেওয়াইসি (KYC) সম্পন্ন করতে হবে এবং নির্দিষ্ট লেনদেনের ইতিহাস থাকতে হবে। লোনের সুদ, কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা এবং বিলম্ব ফি সম্পর্কে বিকাশ স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করে। সময়মতো কিস্তি পরিশোধ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত জরিমানা আরোপিত হতে পারে।
আরও পড়ুন-মোবাইল দিয়ে টাকা আয় পেমেন্ট নগদ এবং বিকাশে
বিকাশ লোন দিচ্ছে না কেন
বিকাশ লোন না পাওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। যেমন, অ্যাকাউন্টের লেনদেন ইতিহাস অপর্যাপ্ত হওয়া, KYC সম্পূর্ণ না থাকা, পূর্বে নেওয়া লোন সময়মতো পরিশোধ না করা, অথবা ক্রেডিট স্কোর খারাপ থাকা। এছাড়া কখনো কখনো সিস্টেম আপডেট বা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে লোন সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে। তাই, এই সব বিষয় যাচাই করে নেওয়া জরুরি।
বিকাশ লোনের শর্ত
বিকাশ লোন পেতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত মানতে হয়। প্রথমত, আপনার বিকাশ একাউন্টে KYC সম্পন্ন থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট সময় ধরে নিয়মিত লেনদেনের ইতিহাস থাকতে হবে। তৃতীয়ত, পূর্বের লোন সময়মতো পরিশোধ করা থাকতে হবে। এছাড়া লোনের জন্য বয়সসীমা, সুদের হার ও পরিশোধের সময়সীমা বিকাশ নির্ধারণ করে থাকে। এই শর্ত পূরণ করলে সহজেই লোন নেওয়া সম্ভব।
❓ প্রশ্ন-উত্তর
প্রশ্ন: আমি কি বিকাশ অ্যাপ ছাড়াও লোন নিতে পারবো?
উত্তর: না, বর্তমানে বিকাশ লোনের আবেদন শুধুমাত্র বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমেই সম্ভব।
প্রশ্ন: বিকাশ লোন নিলে কীভাবে পরিশোধ করবো?
উত্তর: বিকাশ অ্যাপেই “Loan Repayment” অপশনে গিয়ে মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে পারবেন।
প্রশ্ন: আমি কি আবার লোন নিতে পারবো?
উত্তর: হ্যাঁ, পূর্বের লোন পরিশোধের পর নতুন করে লোনের আবেদন করা যাবে।
উপসংহার
সিটি ব্যাংক ও বিকাশের যৌথ উদ্যোগে প্রদত্ত ডিজিটাল লোন সেবা বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য এক যুগান্তকারী সুযোগ এনে দিয়েছে। সহজ আবেদন প্রক্রিয়া, দ্রুত তহবিল উত্তোলন এবং স্বচ্ছ শর্তাবলীর কারণে এই লোন এখন আর্থিক সমস্যার সমাধানে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ করে যারা দ্রুত এবং ঝামেলাবিহীন ঋণের সন্ধান করছেন, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ বিকল্প। তবে ঋণ নেওয়ার আগে শর্তাবলী ভালোভাবে বুঝে নেওয়া এবং সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে আর্থিক সংকটে না পড়তে হয়। সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় বিকাশ লোন আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হতে পারে।
আরও পড়ুন-অনলাইনে পূবালী ব্যাংকের হোম লোন পেতে চান?
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔