ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকালে জরিমানা –একজন ড্রাইভারের অনেক ধরনের নীতি নির্ধারণ অনুসরণ করে চলতে হয়। বাংলাদেশে এই নীতি নির্ধারণ গুলোর নির্ধারক হলো বাংলাদেশ ট্রাফিক আইন। একজন ড্রাইভারের গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আইনে গাড়ি চালানোর যে আইন কানুন রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত থাকা উচিত। তা না হলে গাড়ি চালককে পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
একজন ড্রাইভারের গাড়ি চালানোর সময় এসব বিধি-নিষেধ গুলো লক্ষ্য রেখে গাড়ি চালাতে হয় আর তাই একজন সচেতন ও দক্ষ গাড়ি চালকের জন্য ট্রাফিক আইন জানা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।কোন ড্রাইভার যদি গাড়ি চালানোর সময় ট্রাফিক আইন মেনে না চলে তাহলে বাংলাদেশ ট্রাফিক আইন মোতাবেক তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। আর বাংলাদেশে ট্রাফিক আইন অনুসারে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ একজন দক্ষ ড্রাইভার এর ড্রাইভিং করার ক্ষেত্রে।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিয়ে যা বন্ধুরা যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ট্রাফিক লাইসেন্স না থাকায় জরিমানা কত হতে পারে কিংবা কি শাস্তি বিধান রয়েছে সেই সম্পর্কে জানতে সার্চ করে থাকেন তাদের জন্য আজকে আমার এই আর্টিকেলটি লেখা। আমি আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করব বাংলাদেশের ট্রাফিক আইন মোতাবেক ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার জরিমানা কিংবা শাস্তি বিধান সম্পর্কে। আশা করছি শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ে আপনার জরুরী তথ্যগুলো জেনে নিতে পারবেন। শেষ পর্যন্ত পোস্টটি করার জন্য সঙ্গেই থাকুন।
বাংলাদেশের ট্রাফিক আইন
বাংলাদেশ ট্রাফিক আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালানোর শাস্তি সম্পর্কে ধারা ৪ এবং ৫ এ আলোচনা করা হয়েছে যে, যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৪ এবং ৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে উক্ত লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনুধধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫০০০ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দন্ড হলো যে, যদি কোন ব্যক্তি দ্বারা ৬ এর উপ ধারা (৫) এর বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে উক্ত লঙ্ঘন হবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনধিক ১ মাসের কারাদন্ড বা অনধিক ৫ হাজার (৫০০০) টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
একজন গাড়ি চালকের জরিমানার ধরার অন্যতম কারণ
একজন গাড়ি চালককে বাংলাদেশ আইন কর্তৃক জরিমানা ধরার বিশেষ বিশেষ কারণ বিদ্যমান। ট্রাফিক আইনের নির্দেশনা অমান্য করার ফলে একজন চালক জরিমানা কিংবা শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই;
১) ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরযান পরিবহন চালনার ক্ষেত্রে জরিমানা ধরা হবে।
২) রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত মোটরযান চালালে জরিমানা ধরা হবে।
৩) ফিটনেস বিহীন অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণ মোটরযান চালালে জরিমানা ধরা হবে।
৪) গাড়িতে নির্দিষ্ট ওজনের বেশি অথবা অতিরিক্ত ওজন বহন করলে জরিমানা ধরা হবে।
৫) মোটরযান নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনরূপ আকার পরিবর্তন করলে জরিমানা ধরা হবে।
৬) মোটরযানের নির্দিষ্ট গতিসীমা লঙ্ঘন করলে জরিমানা ধরা হবে।
৭) পরিবেশ দূষণকারী ত্রুটিপূর্ণ ইত্যাদি মোটরযান চালনার ক্ষেত্রে জরিমানা ধরা হবে।
৮) সড়ক দুর্ঘটনা আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির চিকিৎসা সংক্রান্ত ক্ষেত্রে জরিমানা ধরা হবে।
৯) গাড়ির নির্ধারিত ড্রাইভার ব্যতীত অন্য কাউকে দিয়ে মোটরযান চালানোর ক্ষেত্রে জরিমানা বা শাস্তির বিধান রয়েছে।
৯) উল্টো পথে মোটরযান চালনা বা রং সাইডএ মটর যান রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে জরিমানা।
১০) মোটরসাইকেলে তিনজন বসলে জরিমানা ধরা হবে।
১১) মটর চান বা পরিবহনের ছাদে যাত্রী বা মালামাল বহন করলে জরিমানা ধরা হবে।
১২) গাড়ি চলন্ত অবস্থায় যাত্রী উঠানামা করলে জরিমানা ধরা হবে।
১৩) ফুটপাত দিয়ে মোটরযান চালনা করলে জরিমানা ধরা হবে।
১৪) মটরজান চালনা অবস্থায় ফোনে কথা বললে জরিমানা ধরা হবে।
১৫) গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী কিংবা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে জরিমানা বা শাস্তির বিধান রয়েছে।
১৬) সংরক্ষিত আসনে অন্য যাত্রী বহন করলে জরিমানা ধরা হবে।
১৭) যাত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করলে জরিমানা বা শাস্তির বিধান রয়েছে।
১৮) রাতের বেলায় বিপরীত দিক হতে আগত মোটরযানের হাই বিম ব্যবহার করলে জরিমানা বা শাস্তির বিধান রয়েছে।
নতুন মোটরযান আইন (সংশোধনী) ২০১৯ অনুযায়ী শাস্তি
১) হেলমেট/সিটবেল্ট ছাড়া কোন ড্রাইভার গাড়ি চালালে ১০০০ টাকা জরিমানা। এবং ৩ মাসের জন্য লাইসেন্স বাতিল করা হইবে।
২) কোন ব্যক্তির লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৫০০০ হাজার টাকা জরিমানা ধরা হইবে।
৩) কোন ব্যক্তি দ্রুতগতিতে গাড়ি চালালে ১০০০ টাকা (হালকা গাড়ির জন্য) ২০০০ টাকা (মাঝারি ও ভারী গাড়ির জন্য) জরিমানা করা হইবে।
৪) বিপদজনক ভাবে গাড়ি চালালে ৫০০০ টাকা জরিমানা ধরা হইবে।
৫) মদ্যপান করা অবস্থায় গাড়ি চালালে ১০০০০ টাকা জরিমানা ধরা হইবে।
৬) জরুরী ভিত্তিক গাড়িগুলোকে পথ না ছাড়ে ১০০০০ টাকা জরিমানা ধরা হইবে।
৭) বীমা সংক্রান্ত কাগজ ছাড়া গাড়ি চালালে ২০০০ টাকা জরিমানা ধরা হইবে।
৮) গাড়িতে ওভারলোডিং করলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা।
৯) দুই চাকার গাড়ি (মোটর বাইক স্কুটি) আরোহী হেলমেট না পরলে জরিমানা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০০ টাকা।
১০) কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করলেন নূন্যতম জরিমানা ২০০০ টাকা।
১১)লাইসেন্স নীতি না মানলে সর্বোচ্চ জরিমানা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। একই সাথে হতে পারে তিন বছরের কারাদণ্ড।
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি ব্যবহার
ড্রাইভিং করার সময় চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি গ্রহণযোগ্য নয়।গাড়ি চালনা করার সময় চালককে তার সাথে লাইসেন্সের অরজিনাল কাগজপত্র বহন করতে হবে।
রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় কি কি সাথে রাখতে হবে
একজন গাড়ি চালককে সড়কে গাড়ি চালনা করার সময় ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। ট্রাফিক আইন মোতাবেক একজন গাড়ি চালকের রাস্তায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে যে যে কাগজ সাথে রাখতে হবে তা হল:
১) চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স।
২) মটরযান নিবন্ধন সনদ (ব্লুবুক)।
৩) হারনাগাদ ট্যাক্স টোকেন।
৪) হালনাগাদ ফিটনেস সনদ (মোটরসাইকেল ব্যতীত সকলের)।
৫) হালনাগাদ রুট পারমিট (বাণিজ্যিক মোটরযানের ক্ষেত্রে)।
ক্ষতিকর ধোয়া নিঃসরণ হলে জরিমান
ধারা ১৫০: সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ধারা ১৫০: এ যেসকল যানবাহন থেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন ধোঁয়া নিঃসরণ হয় সে সকল যানবাহনে জরিমানা ধরা হবে ২০০ টাকা মাত্র।
ধারা ১৫১: এই ধারায় বলা হয়েছে অস্বচ্ছ রঙিন কাল গ্লাস ব্যবহার করলে, ডি থ্রেট পেপার ব্যবহার করলে, ফিটনেস সার্টিফিকেটের সহিত গাড়ির রংয়ের মিল না থাকলে, গাড়ির টায়ার পরিবর্তন করলে, সরকার নির্ধারিত রং ব্যতীত অন্য কোন রং ব্যবহার করলে,বিআরটিএ এর অনুমতি ছাড়া গাড়ির রং পরিবর্তন করলে এবং মালিকানা পরিবর্তন না করলে জরিমানা হবে ১২৫০ টাকা মাত্র।
যানবাহন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলে জরিমানা
ব্যক্তির বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্ঘটনা ঘটলে কোন ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত হলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।
ট্রাফিক আইন অমান্য করা কোন ড্রাইভার এর জন্য কাম্য নয়। বৈধভাবে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স সাথে রাখা এবং ট্রাফিক আইন মান্য করা প্রত্যেক ড্রাইভার এর কর্তব্য। বাংলাদেশের বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন অমান্য করা ইত্যাদি। এই দুর্ঘটনাগুলো দিন দিন বেড়েই চলেছে তাই বাংলাদেশ ট্রাফিক আইন বাস্তবায়নের জন্য আরো কঠোর হওয়া উচিত।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন:হেলমেট বা সেট বেল্ট ছাড়া গাড়ি চালালে জরিমানা কত?
উত্তর: হেলমেট অথবা সিটবেল্ট ছাড়া গাড়ি চালালে জরিমানা ১ হাজার টাকা।
প্রশ্ন:গাড়িতে ওভারলোডিং করলে জরিমানা কত?
উত্তর: গাড়িতে ওভারলোডিং করলে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
প্রশ্ন: ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন গাড়ি চালালে জরিমানা কত?
উত্তর: ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে জরিমানা ৫০০০ টাকা।
শেষ কথা-
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিয়ে বন্ধুরা আজকে আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ড্রাইভিং লাইসেন্স কত এবং ট্রাফিক অন্যান্য আইন গুলো অমান্য করলে একজন ড্রাইভারের কি কি শাস্তি হতে পারে।তাই আপনারা শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ে অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন এসকল বিষয়গুলো সম্পর্কে।
যদি আপনাদের কোন জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারবেন না। ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কিত আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔
আরও পড়ুন-
যানবাহনের মামলা হলে করণীয় কি? কিস্তিতে বাইসাইকেল কিভাবে কিনবেন জানতে ক্লিক করুন মেয়েদের সাইকেলের দাম কত
↘️ আমার আরো ওয়েবসাইট সমূহ👇
- ইংলিশের স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফ্রিল্যান্সারদের স্বপ্ন পূরণের ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় টেকনোলজি সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে- – এখানে ভিজিট করুন।
- ফেসবুকে ব্লগিং, ইউটিউবিং, ফেসবুকিং সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে –এখানে ভিজিট করুন।
- বাংলায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করা সম্পর্কিত ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে – এখানে ভিজিট করুন
↘️ আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇
➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন।
➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন।
➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।
➡️Telegram চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন।