জমির দলিল দিয়ে কোন কোন ব্যাংক লোন দেয়?লোন পাওয়ার নিয়ম ও শর্ত

আধুনিক অর্থনৈতিক জীবনে অনেক সময় বড় বিনিয়োগ বা প্রয়োজনের জন্য ব্যাংক ঋণ নিতে হয়। যদি আপনার কাছে স্থাবর সম্পত্তি (যেমন জমি, ভবন, ফ্ল্যাট) থাকে, তাহলে সেটি বন্ধক বা মর্টগেজ হিসেবে রেখে ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকে। তবে শুধু “দলিলটি ব্যাংকে জমা দাও, টাকা নিয়ে যাও” — এরকম সোজাসাপ্টা নিয়ম নয়। ব্যাংক বা অনান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনেক শর্ত, মূল্যায়ন ও যাচাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।

নিচে আমি কয়েকটি জনপ্রিয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উদাহরণসহ এবং সাধারণ শর্তাভিত্তিক নির্দেশনা দিয়ে বোঝাব — যাতে আপনি বুঝতে পারেন কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ও কি-কি প্রস্তুতি রাখা উচিত।

আরও পড়ুন-সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়ার সহজ উপায়!

জমির দলিল দিয়ে কোন কোন ব্যাংক লোন দেয়

নিচে কয়েকটি সুপরিচিত ব্যাংক ও এনবিএফআই-এর উদাহরণ দেওয়া হলো, যারা প্রোপার্টি বা বন্ধকী লোন দিয়ে থাকে, তাদের শর্তাবলী, সীমাবদ্ধতা ও আবেদন প্রক্রিয়া:

প্রতিষ্ঠান / ব্যাংক প্যাকেজ বা লোন ধরণ শর্তাবলী / যোগ্যতা বিশেষ শর্ত ও সীমাবদ্ধতা
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড (Standard Chartered) Loan Against Property / Commercial Mortgage ব্যবসায়িক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে প্রোপার্টি জামানত হিসেবে নেওয়া হয়। ঋণের সীমা: ± ৭৫% পর্যন্ত (সম্পত্তির মূল্য অনুযায়ী) আবেদনকারীকে সমানভাবে বেসিক ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা রাখতে হবে। সম্পত্তি নগদ মূল্যায়ন করবে। কাগজপত্র সঠিক থাকতে হবে।
ইস্টার্ন ব্যাংক (EBL Home Loan) হোম লোন মাসিক আয় সীমা নির্ধারণ থাকে (যেমন EBL-এ ন্যূনতম আয় BDT ৫০,০০০) প্রোপার্টি ডকুমেন্ট স্পষ্ট থাকতে হবে; নির্মাণ অনুমোদন, ইলেকট্রিক/প্লাম্বিং পরিকল্পনা থাকতে হবে।
সিটি ব্যাংক (City Bank Home Loan) হোম লোন বয়স সীমা (22–65 বছর), অভিজ্ঞতা ও ক্রেডিট রেকর্ড প্রয়োজন প্রক্রিয়াজর এবং মূল্যায়ন খরচ গ্রাহকের ওপর পড়বে।
United Commercial Bank (UCB) হোম লোন পদে আসা লোক, ব্যবসায়ী ও সেলফ-এমপ্লয়েডরা আবেদন করতে পারে নির্ধারিত আয় এবং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, প্রপার্টি টাইটল ক্লিয়ার করতে হবে।
Dutch-Bangla Bank (DBBL) হোম / প্রোপার্টি লোন ন্যূনতম আয়ের শর্ত (যেমন BDT ৩০,০০০) প্রক্রিয়াজর চার্জ, মূল্যায়ন ও দলিল যাচাই শর্ত থাকে।
Pubali Bank Pubali Mortgage Loan করদাতা ব্যক্তি (সেলারি বা ব্যবসায়ী) গ্রাহককে ইকুইটি বহাল রাখতে হবে ও সম্পত্তি টাইটল পরিষ্কার থাকতে হবে।
LankaBangla Finance Loan Against Property বন্ধক দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক প্রোপার্টি রেজিস্টার্ড মর্টগেজ চুক্তি হিসাবে থাকতে হবে, এবং অন্যান্য পুরোদমে ডকুমেন্ট থাকতে হবে।

সাধারণ শর্ত ও প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ

যদিও প্রতিটি ব্যাংক বা অর্থসংস্থা কিছু ভিন্ন শর্ত রাখে, তবুও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিচের বিষয়াবলী সাধারণভাবে প্রযোজ্য:

১. সম্পত্তি ও দলিলের বৈধতা
  • জমি, ভবন বা ফ্ল্যাটের দলিল অবশ্যই বৈধ, রেজিস্ট্রি করা ও টাইটল ক্লিয়ার থাকতে হবে।

  • সম্পত্তি অবশ্যই রেজিস্ট্রেড মর্টগেজ (Registered Mortgage) হতে হবে — অর্থাৎ জামানতের দায়নীতিক রেজিস্ট্রি থাকতে হবে।

  • কমপক্ষে পুরনো ২১ বছরের বায়া (বায়া দলিল) থাকা প্রয়োজন হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে “নো এনকাম্ব্রেন্স সার্টিফিকেট” (No Encumbrance Certificate) বা “দায়মুক্তি সনদ” চাওয়া হয়।

  • দলিল তদারকি ও সার্ভে রিপোর্ট থাকতে হবে — ব্যাংক ইচ্ছা করলে সার্ভেয়ার দিয়ে পরীক্ষা করবে।

২. ঋণ-অধিক্য (Loan-to-Value, LTV)
  • অধিকাংশ ব্যাংক প্রোপার্টির মূল্যায়িত বাজারমূল্যের একটি শতাংশ পর্যন্ত অর্থায়ন করে, যেমন ৫০% থেকে ৭৫% পর্যন্ত।

  • প্রতিপूर्ति হিসেবে ইকুইটি অংশ (equity portion) রাখার শর্ত থাকে — অর্থাৎ আবেদনকারীকে কিছু অংশ নিজে দিতে হবে।

  • NLAP (Net Loan Against Property) ও অন্যান্য কিস্তি শর্ত থাকতে পারে।

৩. আয় ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা
  • আবেদনকারীর স্থায়ী আয় (বেতনপ্রাপ্ত বা ব্যবসার আয়) থাকতে হবে।

  • আবেদনকারীকে আয় প্রমাণ (বেতন স্লিপ, কর রিটার্ন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট) দাখিল করতে হবে।

  • সেলফ-এমপ্লয়েড বা ব্যবসায়ী হলে অতিরিক্ত আয় সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, বা আয়কর রিটার্ন প্রদর্শন করতে হতে পারে।

৪. বয়স ও অভিজ্ঞতা
  • অধিকাংশ ব্যাংকে আবেদনকারীর বয়স সীমা নির্ধারণ থাকে (যেমন ২২–৬৫ বছর)।

  • যদি ব্যবসায়ী হন, তাহলে নির্দিষ্ট বছরের ব্যবসায় অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

  • চাকরির ক্ষেত্রে চাকরিতে নিয়োগের সময়কাল / অভিজ্ঞতা থাকতে হতে পারে।

৫. কাগজপত্র ও ফি
  • ন্যাশনাল আইডি / স্মার্ট কার্ড / পাসপোর্ট কপি

  • দলিল ও টাইটল ডকুমেন্ট (মূল ও কপি)

  • সার্ভে রিপোর্ট / মূল্যায়ন রিপোর্ট

  • রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ফি

  • প্রক্রিয়াজর (processing) চার্জ

  • যদি অন্য গ্যারান্টর বা জামিনদাতা থাকে, তাদের নথিপত্রও লাগবে

  • কিছু ব্যাংকে গ্যারান্টর রাখতে হবে

৬. ঋণমেয়াদ ও কিস্তি শর্ত
  • সাধারণত ৫–২৫ বছর বা ১৫০–১৮০ মাসের কিস্তিতে ঋণ মেয়াদ হয়।

  • কিস্তি পরিশোধ সাপ্তাহিক বা মাসিক হতে পারে — সাধারণত মাসিক।

  • আগে থেকেই পুরো ঋণ পরিশোধ (early settlement) করার সুযোগ থাকতে পারে — শর্তাবলী অনুযায়ী শাস্তিমূলক চার্জ থাকতে পারে।

  • যদি ঋণ দিয়ে প্রোপার্টি নির্মাণ করা হয়, তখন ধাপ ভিত্তিক (tranche-wise) বিতরণ হতে পারে — যেমন, নির্মাণের বিভিন্ন পর্যায়ে কিস্তি দেওয়া হবে।

৭. গ্যারান্টর ও জামিনদাতা
  • কিছু ক্ষেত্রে গ্যারান্টর (ব্যক্তিগত জামিনদাতা) থাকতে হবে — যিনি দায় নিতে পারবে।

  • একই পরিবার বা আত্মীয়দের গ্যারান্টর রাখতে পারে, তবে তাদের পরিচয়পত্র ও আর্থিক সক্ষমতা যাচাই হবে।

৮. আর্থিক ও ক্রেডিট যাচাই
  • আবেদনকারীর ক্রেডিট রেকর্ড / সিবি (CIB: Credit Information Bureau) রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হবে।

  • অন্য কোনো ঋণ বা দায় থাকলে সে তথ্য দিতে হবে।

  • আবেদনকারীর DTI (Debt-to-Income Ratio) বা আর্থিক দায়িত্বশীলতা পরীক্ষা করা হবে।

৯. চলমান রক্ষণাবেক্ষণ ও কর
  • সম্পত্তি কর (ল্যান্ড ট্যাক্স) নিয়মিত পরিশোধ থাকতে হবে।

  • যদি নির্মাণ বা পরিবর্তন হয়, সংশ্লিষ্ট অনুমোদন ও সার্ভেয়ালকে আপডেট রাখতে হবে।

  • জায়গায় আইনগত বাধা বা অধিকার হস্তক্ষেপ না থাকতে হবে।

১০. দায়মুক্ততা ও দ্বৈত বন্ধক নিষেধাজ্ঞা
  • একই দলিল একাধিক ব্যাংকে বন্ধক (double mortgaging) করলে জটিলতা হতে পারে; অনেক ব্যাংক এ ধরনের পদক্ষেপ অনুমোদন দেয় না।

  • দায়মুক্তি (encumbrance-free) দলিল থাকতে হবে — অর্থাৎ, দলিলে অন্য কোনো ঋণ বা দাবি বহন করা না উচিত।

কিছু বিশেষ বিবেচনা ও আইনগত পরিবর্তন

  • বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধান অনেক সময় ঋণ ও নিরাপত্তা (collateral) সংক্রান্ত নীতিমালা দিয়ে থাকে — যেমন, অবকাঠামো নিরাপত্তা, লোন ঋণশিল্প নীতি এবং মর্টগেজ ভিত্তিক ঋণ স্কিম।

  • সিকিউরড ট্রানজেকশন আইন (Secure Transactions Act, ২০২৩)–এর মাধ্যমে এখন কিছু চলমান স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি জামানত হিসেবে গ্রহণ করার আইনগত পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

  • চলমান নতুন আইন অনুযায়ী, আগের তুলনায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চলমান সম্পত্তি (movable assets) জামানত হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মসীমা তৈরি করছে।

  • মূল্যায়ন সংক্রান্ত নীতি ও ব্যাংক কর্তৃক ব্যবহৃত আভাসমূলক বা বাজারমূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া সময়ের সঙ্গে আপডেট হতে পারে।

ধাপে ধাপে আবেদন করার নির্দেশিকা

  1. প্রথমে আপনার এলাকায় বা জেলার কয়েকটি শাখায় ব্যাংকের “হোম / প্রোপার্টি / মর্টগেজ / সম্পত্তি লোন” শাখার তথ্য সংগ্রহ করুন।

  2. ব্যাংকের শর্তাবলী, সর্বনিম্ন আয়, অভিজ্ঞতা ও কিস্তি মডেল পড়ুন।

  3. প্রয়োজনীয় দলিল, সম্প্রদায়ক নথিপত্র ও আয় প্রমাণসমূহ প্রস্তুত করুন।

  4. আবেদনপত্র পূরণ ও দাখিল করুন — মূল ও কপি দলিল জমা দিন।

  5. ব্যাংক সরেজমিন মূল্যায়ন ও সার্ভে পাঠাবে।

  6. ক্রেডিট ও আর্থিক সক্ষমতা যাচাই হবে।

  7. অনুমোদন হলে বন্ধকী দলিল রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ফি প্রদান করতে হবে।

  8. চূড়ান্ত ছাড়পত্রের পর ঋণ (কিস্তি) শুরু হবে।

কোন কোন ব্যাংক মর্টগেজ লোন দেয়

বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের ব্যাংক জমির দলিল বন্ধক রেখে মর্টগেজ লোন প্রদান করছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংক উল্লেখযোগ্য। এসব ব্যাংক সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য এবং তুলনামূলকভাবে কম সুদে ঋণ দেওয়ার সুযোগ রাখে। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংক যেমন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংকসহ আরও অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের মর্টগেজ লোন সুবিধা প্রদান করে থাকে।

এছাড়াও ব্যাংকের পাশাপাশি কিছু নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (NBFI) যেমন লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (DBH) মর্টগেজ লোন দিয়ে থাকে। এরা সাধারণত সহজ কিস্তি, দীর্ঘ মেয়াদ এবং দ্রুত প্রসেসিং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। তাই মর্টগেজ লোনের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজন ও সুবিধা অনুযায়ী সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক ও এনবিএফআই থেকে লোন নিতে পারেন।

জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক লোন

জমি বা স্থাবর সম্পত্তি থাকলে সেটিকে বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ পাওয়া তুলনামূলক সহজ। দলিলটি বৈধ, রেজিস্ট্রিকৃত এবং টাইটেল ক্লিয়ার থাকলে ব্যাংক সেটিকে জামানত হিসেবে গ্রহণ করে। সাধারণত ব্যাংক সম্পত্তির বাজারমূল্যের ৫০% থেকে ৭৫% পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। এর মানে হলো, যদি আপনার জমির মূল্যায়িত বাজারমূল্য হয় ৫০ লাখ টাকা, তবে আপনি ২৫ থেকে ৩৭ লাখ টাকার মধ্যে ঋণ পেতে পারেন।

তবে ব্যাংক শুধু দলিল দেখে লোন দেয় না, বরং গ্রাহকের আয়, বয়স, ক্রেডিট রেকর্ড, গ্যারান্টর ও অন্যান্য শর্ত পূরণ করতে হয়। এছাড়া প্রসেসিং ফি, স্ট্যাম্প ফি, সার্ভে রিপোর্ট এবং দলিল যাচাইয়ের মতো কিছু আনুষঙ্গিক খরচও গ্রাহককে বহন করতে হয়। সব শর্ত পূরণ করলে জমি বন্ধক রেখে লোন পাওয়া একটি নিরাপদ ও কার্যকর উপায় হতে পারে।

কৃষি ব্যাংক মর্টগেজ লোন

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষকদের জন্য বিশেষভাবে মর্টগেজ লোন সুবিধা প্রদান করে থাকে। কৃষকরা তাদের কৃষিজমি বন্ধক রেখে এ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন, যা ব্যবহার করা যায় ফসল উৎপাদন, সেচ ব্যবস্থা, সার ও বীজ কেনা কিংবা খামার পরিচালনার কাজে। কৃষি ব্যাংকের মর্টগেজ লোনের অন্যতম সুবিধা হলো সুদের হার তুলনামূলক কম এবং কিস্তি শর্ত অনেকটাই সহজ।

এছাড়া কৃষি ব্যাংক গ্রামীণ এলাকায় কৃষকদের সহায়তায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুযোগও দেয়, যাতে তারা জমির উন্নয়ন বা খামার সম্প্রসারণ করতে পারে। তবে শর্ত হিসেবে জমির দলিল অবশ্যই বৈধ হতে হবে এবং কোনো প্রকার দায়মুক্ত থাকতে হবে। কৃষক যদি আগের কোনো ঋণ বকেয়া রেখে দেন, তাহলে নতুন লোন অনুমোদন পেতে সমস্যা হতে পারে।

গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন

গ্রামে বসবাসরতদের জন্য বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন এখন আর কঠিন নয়। বাংলাদেশের অনেক সরকারি ব্যাংক যেমন সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক গ্রামে বাড়ি নির্মাণের জন্য জমির দলিল বন্ধক রেখে লোন দেয়। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলিও বিশেষ হোম লোন স্কিম চালু করেছে, যেখানে গ্রামীণ এলাকায় নতুন বাড়ি নির্মাণ বা পুরনো বাড়ি মেরামতের জন্য ঋণ প্রদান করা হয়।

গ্রামে বাড়ি করার জন্য ব্যাংক লোন নিতে হলে প্রথমেই জমির দলিল বৈধ ও পরিষ্কার হতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীর আয়ের উৎস যাচাই করা হবে, যাতে কিস্তি পরিশোধ করতে কোনো সমস্যা না হয়। সাধারণত গ্রামীণ বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণের সীমা শহরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও, কিস্তির মেয়াদ তুলনামূলক দীর্ঘ হয়, যা গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিকভাবে সুবিধাজনক।

সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক

বাংলাদেশে সাধারণত সরকারি ব্যাংকগুলো বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় কম সুদে লোন প্রদান করে থাকে। সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সুদের হার তুলনামূলকভাবে কম এবং সরকারি নীতিমালা অনুসারে গ্রাহকবান্ধব। বিশেষ করে কৃষি ও আবাসন খাতে সরকার প্রণোদনা দেওয়ায় এই ব্যাংকগুলোতে সুদের হার কম রাখা হয়।

তবে সুদের হার নির্ভর করে লোনের ধরন, পরিমাণ এবং মেয়াদের ওপর। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও অনেক সময় বিশেষ অফার বা স্কিমের মাধ্যমে কম সুদে মর্টগেজ লোন পাওয়া যায়, বিশেষ করে হোম লোনের ক্ষেত্রে। তাই সবচেয়ে কম সুদে লোন পাওয়ার জন্য গ্রাহককে বিভিন্ন ব্যাংকের লোন অফার তুলনা করে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: সকল ব্যাংক কি বন্ধকী লোন দেয়?
উত্তর: না, সব ব্যাংক প্রতিটি প্রোপার্টি লোন দেয় না। কিছু ব্যাংক শুধুমাত্র হাউজিং স্কিম, কিছু শুধুমাত্র উচ্চ আয়ের গ্রাহকদের জন্য দেয়।

প্রশ্ন ২: যদি আমার দলিলে কিছু ত্রুটি থাকে, তবে কি হবে?
উত্তর: ব্যাংক সেই দলিল গ্রহণ নাও করতে পারে। দলিল সংশোধন, পুনরায় রেজিস্ট্রি অথবা আইনগত শুদ্ধকরণ প্রয়োজন হতে পারে।

প্রশ্ন ৩: আগে থেকেই ঋণ পরিশোধের (early settlement) কি সুবিধা আছে?
উত্তর: অনেক ব্যাংক এ সুযোগ দেয়, তবে শর্ত অনুযায়ী শাস্তিমূলক চার্জ থাকতে পারে।

প্রশ্ন ৪: যদি আমি পরিবার থেকে গ্যারান্টর রাখি, কি হবে?
উত্তর: গ্যারান্টরের আর্থিক সক্ষমতা, পরিচয়পত্র ও দায়বদ্ধতা যাচাই করা হবে। যদি গ্যারান্টর বাধ্যতার বাইরে হয়, সমস্যা হতে পারে।

উপসংহার

জমির দলিল বা স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ (মর্টগেজ/বন্ধকী লোন) বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী এবং কার্যকর পথ। তবে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে — শর্ত, দলিল বৈধতা, ক্রেডিট রেকর্ড, গ্যারান্টর, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয় জেনে আবেদন করলে জটিলতা কম হবে।

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!

আরও পড়ুন-অনলাইনে পূবালী ব্যাংকের হোম লোন পেতে চান?

👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।