১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

বর্তমান সময়ে বিদেশ ভ্রমণ, চাকরি বা পড়াশোনার জন্য পাসপোর্ট একটি অপরিহার্য নথি। বাংলাদেশ সরকার ই-পাসপোর্ট চালু করার পর থেকে পাসপোর্ট প্রক্রিয়া আরও আধুনিক ও সহজ হয়েছে। বিশেষ করে ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, কারণ দীর্ঘ সময় নতুন করে নবায়নের ঝামেলা পোহাতে হয় না।
তাহলে চলুন জেনে নিই ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে কী কী লাগে এবং কিভাবে আবেদন করবেন।

আরও পড়ুন-অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ই-পাসপোর্ট করার সময় আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এগুলো হলোঃ

  1. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) – অবশ্যই সঠিক তথ্যসহ।

  2. জন্ম নিবন্ধন সনদ – যদি NID না থাকে বা বয়স কম হয়।

  3. পুরোনো পাসপোর্ট (যদি থাকে) – নবায়ন বা রিপ্লেসমেন্টের জন্য।

  4. শিক্ষা সনদ বা পেশাগত পরিচয়পত্র – (কখনও কখনও প্রয়োজন হতে পারে)।

  5. প্রবাসীদের জন্য বৈধ ভিসা বা রেসিডেন্স পারমিট।

  6. ছবি তোলার প্রয়োজন নেই – পাসপোর্ট অফিসেই ছবি ও বায়োমেট্রিক নেওয়া হবে।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের ফি ও চার্জ

বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত ফি অনুযায়ী ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের খরচ ভিন্ন হয় ডেলিভারি টাইমের ওপর ভিত্তি করে।

  • স্ট্যান্ডার্ড ডেলিভারি (২১ কার্যদিবস):

    • ৪৮ পৃষ্ঠা – ৬,৯০০ টাকা

    • ৬৪ পৃষ্ঠা – ৯,২০০ টাকা

  • এক্সপ্রেস ডেলিভারি (১০ কার্যদিবস):

    • ৪৮ পৃষ্ঠা – ৯,২০০ টাকা

    • ৬৪ পৃষ্ঠা – ১২,৬৫০ টাকা

  • সুপার এক্সপ্রেস (২-৩ কার্যদিবস):

    • ৪৮ পৃষ্ঠা – ১২,৬৫০ টাকা

    • ৬৪ পৃষ্ঠা – ১৫,৫০০ টাকা

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করার ধাপসমূহ

ই-পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ

  1. ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন:
    www.epassport.gov.bd

  2. অনলাইন ফরম পূরণ করুন:

    • ব্যক্তিগত তথ্য

    • বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা

    • শিক্ষা, চাকরি ও পরিবারের তথ্য

  3. ফি জমা দিন:
    ব্যাংক, বিকাশ, রকেট অথবা অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়া যায়।

  4. অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন:
    নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে ছবি ও বায়োমেট্রিক দেওয়ার জন্য তারিখ নির্ধারণ করুন।

  5. ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিন:
    নির্দিষ্ট তারিখে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও স্বাক্ষর দিন।

  6. পুলিশ ভেরিফিকেশন:
    আপনার ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে।

  7. পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন:
    নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসএমএস আসবে এবং পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।

কারা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে পারবেন?

  • বাংলাদেশি নাগরিক যারা দেশের ভিতরে বা বাইরে বসবাস করেন।

  • ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে।

  • শিশুদের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছরের মেয়াদি ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের সুবিধা

  1. দীর্ঘমেয়াদে নবায়নের ঝামেলা নেই।

  2. ভিসা প্রসেসে সময় বাঁচে।

  3. আধুনিক সিকিউরিটি ফিচার থাকায় জালিয়াতির ঝুঁকি কম।

  4. আন্তর্জাতিক ভ্রমণে আরও সহজ ও স্বীকৃত।

সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য কি সবাই আবেদন করতে পারে?
👉 না, শুধুমাত্র ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তিরা এই সুবিধা পাবেন।

প্রশ্ন ২: ই-পাসপোর্টে ছবি কি নিজে দিতে হবে?
👉 না, ছবি সরাসরি পাসপোর্ট অফিসেই তোলা হবে।

প্রশ্ন ৩: পাসপোর্ট পাওয়ার সময় কতদিন লাগে?
👉 আপনার নির্বাচিত ডেলিভারি টাইম অনুযায়ী ২ দিন থেকে ২১ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাবেন।

প্রশ্ন ৪: পুরোনো এমআরপি পাসপোর্ট কি ই-পাসপোর্টে কনভার্ট করা যাবে?
👉 হ্যাঁ, পুরোনো এমআরপি বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ই-পাসপোর্টে পরিবর্তন করা যাবে।

উপসংহার

১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এবং ভ্রমণকারীদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। সঠিক কাগজপত্র ও প্রক্রিয়া মেনে চললে খুব সহজেই আপনি নিজের ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন। তাই আজই অনলাইনে আবেদন করুন এবং ভবিষ্যতের যাত্রাকে আরও নিরাপদ করুন।

আরও পড়ুন-অনলাইনে নিজের পাসপোর্ট চেক করার সহজ নিয়ম

ℹ️ আরও কন্টেন্ট নিয়মিত পেতে- ফেসবুক পেজে যুক্ত থাকুন!
ℹ️ ভিডিও আকারে কনটেন্ট নিয়মিত পেতে –ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন!
👉টেক নিউজের সকল খবর সবার আগে পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন!

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

📌 পোস্টটি শেয়ার করুন! 🔥

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি মোঃ সানাউল বারী। পেশায় আমি একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি, আমি গত ১৪ বছর ধরে আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং আমার নিজস্ব ইউটিউব এবং ফেসবুকে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য - লেখায় যদি কোনও ভুল থাকে, তাহলে দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। ধন্যবাদ।