শবে বরাত ২০২৫ কত তারিখে?

শবে বরাত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের জন্য বিশেষ রহমত ও মাগফিরাতের ঘোষণা দেন। শবে বরাতের তারিখ প্রতি বছর হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে পালিত হয়। ২০২৫ সালে শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে।

শবে বরাত ২০২৫ কত তারিখে

শবে বরাতের অর্থ ‘মুক্তির রাত’। এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন এবং পরবর্তী বছরের জন্য রিজিক, মৃত্যু, সৌভাগ্য ও দুঃখ-দুর্দশার ভাগ্য নির্ধারণ করেন। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “শাবান মাসের ১৪ তারিখে আল্লাহ তাআলা আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া ব্যক্তিরা ক্ষমা পাবে, আল্লাহর কাছে রিজিক প্রার্থনা করা ব্যক্তিরা রিজিক পাবে, এবং যারা মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকবে তারা মাফ পাবে।'”

শবে বরাতে করণীয়

শবে বরাতে মুসলিমদের জন্য বিশেষ কিছু আমল ও ইবাদত রয়েছে:

  1. নফল নামাজ: এই রাতে অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করা সুন্নত। বিশেষ করে মাগরিবের পর থেকে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত নামাজ পড়া যায়।

  2. দোয়া ও ইস্তিগফার: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা ও দোয়া করা উচিত। এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের দোয়া কবুল করেন।

  3. কুরআন তিলাওয়াত: কুরআন তিলাওয়াত করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়।

  4. সদকা ও দান: সামর্থ্য অনুযায়ী দান-সদকা করা উচিত।

শবে বরাতের রোজা

শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা সুন্নত। এই রোজা রাখলে অতীত বছরের পাপ মাফ হয় এবং পরবর্তী বছরের পাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

শবে বরাতের প্রস্তুতি

শবে বরাতের আগের দিন কিছু প্রস্তুতি নেওয়া যায়:

  • ঘর পরিষ্কার করা: ঘর পরিষ্কার করে শবে বরাতের রাতকে স্বাগত জানানো যায়।

  • পরিবারের সঙ্গে আলোচনা: পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শবে বরাতের তাৎপর্য ও আমল নিয়ে আলোচনা করা যায়।

  • সামর্থ্য অনুযায়ী দান: সামর্থ্য অনুযায়ী দান-সদকা করার পরিকল্পনা করা যায়।

শবে বরাতের ফজিলত

শবে বরাত ইসলামের একটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ রাত, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও দয়া লাভের এক অনন্য সুযোগ। এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন এবং পরবর্তী বছরের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে, যা এর গুরুত্ব এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে।

  1. আল্লাহর মাগফিরাত (ক্ষমা): শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা আসমানে নেমে আসেন এবং ঘোষণা করেন: “যে ব্যক্তি মাফ চায়, আমি তাকে মাফ করে দেব।” (সহীহ মুসলিম) এই রাতে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের পাপ মাফ করেন, যারা সত্যিকারের ক্ষমা প্রার্থনা করে।

  2. দোয়া কবুল হওয়া: শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের দোয়া কবুল করেন। রাসূল (সা.) বলেন, “এই রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ করুণাময় হন এবং তিনি দোয়া কবুল করেন।” (তিরমিজি)

  3. পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছর নির্ধারণ: শবে বরাতের রাতে আল্লাহ তাআলা পরবর্তী বছরের রিজিক, মৃত্যু, সৌভাগ্য ও দুঃখ-দুর্দশা নির্ধারণ করেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, “শাবান মাসের ১৫ তারিখে আল্লাহ তাআলা আসমানে নেমে এসে বান্দাদের রিজিক ও মৃত্যু নির্ধারণ করেন।” (বুখারি)

  4. বিশেষ আমল ও ইবাদতের সুযোগ: শবে বরাতের রাতে মুসলিমরা নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার ও সদকা করে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের চেষ্টা করেন। এই রাতে বিশেষ ইবাদত ও দোয়া করলে তার মুল্য অনেক বেশি।

  5. রোজা রাখা সুন্নত: শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা সুন্নত। এই রোজা রাখলে অতীতের পাপ মাফ হয়ে যায় এবং পরবর্তী বছরের পাপ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। রাসূল (সা.) বলেছেন, “শাবান মাসের ১৫ তারিখে রোজা রাখলে অতীতের পাপ মাফ হয়ে যায়।” (আবু দাউদ)

  6. রাতের বিশেষ মুহূর্ত: শবে বরাতের রাতের শেষাংশে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে এসে বিশেষ দয়া ও করুণার সাথে বান্দাদের মাগফিরাত ও রহমত প্রদান করেন। মুসলিমরা এই সময়ে দোয়া ও ইবাদত করতে পারে, যা খুবই পুণ্যজনক।

শবে বরাতের রাত মুসলিমদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে আল্লাহর মাগফিরাত, রহমত, ও দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই রাতে ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া, ও তওবা করে বান্দারা আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে। তাই শবে বরাতের রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা ও বিশেষ ইবাদত করা উচিত, যেন আমরা এই রাতের বরকত ও ফজিলত লাভ করতে পারি।

শব-ই-মেরাজ ২০২৫ কবে?

শব-ই-মেরাজ ২০২৫ সালের ৭ মার্চ দিবাগত রাতে পালিত হবে। এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলোর একটি, যা মহানবী (সা.)’র মেরাজ বা আকাশে আরোহন এবং আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ হওয়ার রাত হিসেবে পরিচিত। এই রাতে মুসলিমরা আল্লাহর কাছে দোয়া এবং ইবাদত করেন।

সবেবরাত কবে?

শবে বরাত ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দিবাগত রাতে পালিত হবে। এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত, যেখানে মুসলিমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, দোয়া ও ইবাদত করে থাকেন।

শবে মেরাজ কত তারিখে 2025

শব-ই-মেরাজ ২০২৫ সালে ৭ মার্চ দিবাগত রাতে পালিত হবে। এটি সেই রাত, যখন মহানবী (সা.) আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য আকাশে মেরাজে আরোহন করেছিলেন। এই রাতে মুসলিমরা বিশেষ ইবাদত, দোয়া ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন।

আরও আপনার জন্যকবর জিয়ারত করার সঠিক

শাবান মাসের কত তারিখে শবে বরাত

শাবান মাসের ১৪ তারিখ রাতে শবে বরাত পালন করা হয়। এটি হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত। শবে বরাত মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ রাত, যখন আল্লাহ তাআলা বান্দাদের মাফ করেন এবং পরবর্তী বছরের রিজিক ও মৃত্যুর সময় নির্ধারণ করেন।

শবে বরাতের রোজা কয়টি ২০২৫

শবে বরাতের পরদিন (১৫ শাবান) রোজা রাখা সুন্নত, এবং এটি একটি বিশেষ রোজা হিসেবে পরিচিত।

২০২৫ সালে শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত হবে, তাই শবে বরাতের পরের দিন, অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারি রোজা রাখা সুন্নত হবে।

এটি মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ দিন, যেখানে অতীতের পাপ মাফ হওয়ার আশায় রোজা রাখা হয়।

প্রশ্ন-উত্তর 

প্রশ্ন ১: শবে বরাতের তারিখ কবে?

উত্তর: ২০২৫ সালে শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দিবাগত রাতে পালিত হবে।

প্রশ্ন ২: শবে বরাতে কী আমল করা উচিত?

উত্তর: শবে বরাতে নফল নামাজ, দোয়া, ইস্তিগফার, কুরআন তিলাওয়াত এবং দান-সদকা করা উচিত।

প্রশ্ন ৩: শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা কি সুন্নত?

উত্তর: হ্যাঁ, শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা সুন্নত।

প্রশ্ন ৪: শবে বরাতে দোয়া কবুল হয় কিনা?

উত্তর: হ্যাঁ, শবে বরাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের দোয়া কবুল করেন।

প্রশ্ন ৫: শবে বরাতে বিশেষ কোনো দোয়া আছে কি?

উত্তর: হ্যাঁ, শবে বরাতে বিশেষ কোনো দোয়া হাদিসে উল্লেখিত নয়, তবে সাধারণ দোয়া ও ইস্তিগফার করা যায়।

উপসংহার

শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ একটি রাত, যা আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের সুযোগ এনে দেয়। এই রাতে ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া ও দান-সদকার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায়। শবে বরাতের পরের দিন রোজা রাখা সুন্নত, যা অতীত ও ভবিষ্যতের পাপ মাফের কারণ হয়। সুতরাং, শবে বরাতের রাতকে ইবাদত-বন্দেগীতে কাটিয়ে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের চেষ্টা করা উচিত।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আমি মো:সানাউল বারী।পেশায় আমি একজন চাকুরীজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকুরীর পাশাপাশি গত ১৪ বছর থেকে এখন পর্যন্ত নিজের ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি এবং নিজের ইউটিউব এবং ফেসবুকে কনটেন্ট তৈরি করি। বিশেষ দ্রষ্টব্য -লেখার মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ।