শবে কদর বা লাইলাতুল কদর ইসলামের এক মহিমান্বিত রাত, যা আল্লাহ তাআলা বিশেষ ফজিলত ও বরকতপূর্ণ করেছেন। এই রাতের উল্লেখ পবিত্র কুরআনে এসেছে এবং হাদিসেও এর বিশদ ব্যাখ্যা রয়েছে। মুসলমানদের জন্য এই রাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম বলে বর্ণিত হয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা শবে কদরের ফজিলত, গুরুত্ব এবং করণীয় আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
শবে কদরের পরিচয়
শবে কদর অর্থ “সম্মানের রাত” বা “মহিমান্বিত রাত”। এটি ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলোর মধ্যে একটি। এই রাতে আল্লাহ তাআলা মানবজাতির ভাগ্য নির্ধারণ করেন এবং দোয়া কবুল করেন। কুরআনের সূরা কদরে বলা হয়েছে:
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
“নিশ্চয়ই আমি একে কদরের রাতে নাযিল করেছি।” (সূরা কদর: ১)
Also Read
শবে কদরের ফজিলত কি?
- শবে কদর হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। এই রাতের ইবাদত করলে প্রায় ৮৩ বছরের ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়।
- মহান আল্লাহ এই রাতে কুরআন নাজিল করেছেন, যা মানব জাতির জন্য আলোকবর্তিকা।
- এই রাতে জিবরাঈল (আ.)-সহ অসংখ্য ফেরেশতা দুনিয়াতে আগমন করেন এবং মুমিনদের জন্য দোয়া করেন।
- হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইখলাসের সাথে শবে কদরের ইবাদত করবে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
- এই রাতে করা সকল নেক আমল ও দোয়া আল্লাহ কবুল করেন।
শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ কবে?
শবে কদর নির্দিষ্ট কোনো তারিখে নির্ধারিত নয়, তবে সাধারণত রমজানের শেষ দশ রাতের বিজোড় রাতগুলোতে এটি অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে, বিশেষত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে।
শবে কদরের বিশেষ আমল
- এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা উচিত।
- কুরআন পড়া ও এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করা উত্তম আমল।
- দোয়া ও ইস্তেগফার:
- বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং রাসূল (সা.)-এর শিখানো দোয়াটি পড়া:
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
“হে আল্লাহ! আপনি পরম ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।” (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
- অভাবীদের সহায়তা করা শবে কদরের অন্যতম সেরা আমল।
- “যে ব্যক্তি শবে কদরে ইমান ও সওয়াবের আশায় ইবাদত করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০১)
লাইলাতুল কদরে করণীয় আমলসমূহ কি?
লাইলাতুল কদর একটি মহিমান্বিত রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করলে আল্লাহ অসীম সওয়াব দান করেন। তাই এ রাতে আমাদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা উচিত—
নফল নামাজ আদায় করা
এই রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া উচিত। দুই, চার, ছয় বা আট রাকাত করে যত বেশি সম্ভব নামাজ পড়া যেতে পারে।
কুরআন তিলাওয়াত করা
লাইলাতুল কদরে কুরআন তিলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। কারণ, কুরআন এই রজনীতে নাজিল হয়েছে।
অধিক পরিমাণে দোয়া করা
হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লাইলাতুল কদরে এই দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে—
اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
উচ্চারণ: Allahumma innaka ‘Afuwwun tuhibbul ‘afwa fa’fu ‘anni
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসো, তাই আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিজি: ৩৫১৩)
তওবা ও ইস্তিগফার করা
এ রাতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের ক্ষমা করেন, তাই সৎভাবে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।
দরুদ শরিফ পাঠ করা
বেশি বেশি দরুদ শরিফ পড়লে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুপারিশ লাভ করা যায়।
আল্লাহর কাছে নিজের ও অন্যদের জন্য দোয়া করা
নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা উচিত।
দান–সদকা করা
সামর্থ্য অনুযায়ী গরিব-দুঃখীদের দান-সদকা করলে আল্লাহ বিশেষ রহমত দান করেন।
জিকির ও তাসবিহ পাঠ করা
এ রাতে নিম্নলিখিত জিকিরগুলো বেশি বেশি করা যেতে পারে—
- সুবহানাল্লাহ (سبحان الله)
- আলহামদুলিল্লাহ (الحمد لله)
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (لا إله إلا الله)
- আল্লাহু আকবার (الله أكبر)
সারারাত ইবাদতে কাটানোর চেষ্টা করা
যদি সম্ভব হয়, তাহলে এ রাতে ইবাদতে রাত কাটানোর চেষ্টা করা উচিত, কারণ এটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা
এ রাত আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম সুযোগ।
লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ রমজানের রাতে বিশেষভাবে ইবাদত করা উচিত, কারণ রাসুল (সা.) বলেছেন, এটি রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে থাকে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই বরকতময় রাতে ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন। 🤲
লাইলাতুল কদর অর্থ ও তাৎপর্য কি?
“লাইলাতুল কদর” একটি আরবি শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ হলো “শ্রেষ্ঠ রাত” বা “মহিমান্বিত রাত”। কুরআনে বলা হয়েছে, এটি এমন এক রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম (সূরা আল-কদর: ৩)। অর্থাৎ, এই এক রাতের ইবাদত ৮৩ বছরের বেশি সময়ের ইবাদতের চেয়ে অধিক সওয়াব লাভের সুযোগ এনে দেয়।
লাইলাতুল কদরের ফজিলত
১. কুরআন নাজিলের রাত – এই রাতে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ করেছেন (সূরা আল-কদর: ১)।
২. হাজার মাসের চেয়ে উত্তম – এক রাতের ইবাদতের সওয়াব হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে বেশি (সূরা আল-কদর: ৩)।
3. ফেরেশতাদের আগমন – এ রাতে অসংখ্য ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং মুমিনদের জন্য শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন (সূরা আল-কদর: ৪-৫)।
4. গুনাহ মাফের সুযোগ – নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় ইবাদত করবে, তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে” (বুখারি, মুসলিম)।
লাইলাতুল কদর কোন রাতে হয়?
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে লাইলাতুল কদর সন্ধান কর” (বুখারি, মুসলিম)। বিশেষত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাত্রিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ বিদ্বানগণ ২৭তম রাতকে লাইলাতুল কদর বলে মতামত দিয়েছেন।
লাইলাতুল কদরের বিশেষ আমল গুলো কি কি?
১. নফল নামাজ আদায় করা
২. কুরআন তিলাওয়াত করা
৩. দোয়া ও ইস্তিগফার করা (বিশেষত: “اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني” – “হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন” – তিরমিজি)
৪. সদকা ও দান–খয়রাত করা
৫. দীর্ঘ সিজদায় থেকে আল্লাহর কাছে চাওয়
লাইলাতুল কদর মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত বরকতময় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। এটি ক্ষমা, রহমত ও নাজাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ। এই রাতকে যথাযথভাবে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটানো উচিত, যাতে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি এবং পরকালের মুক্তি লাভ করতে পারি।
শবে কদর কেন অনির্দিষ্ট রাখা হয়েছে?
শবে কদর (লাইলাতুল কদর) অনির্দিষ্ট রাখার মূল কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো—
উম্মতের পরীক্ষা ও ইবাদতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি
যদি শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ জানা থাকত, তাহলে অনেকে শুধু সেই রাতেই ইবাদত করত এবং বাকি রাতগুলো অবহেলা করত। কিন্তু অনির্দিষ্ট থাকার কারণে রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি রাতেই মানুষ ইবাদতে মনোযোগী হয়।
নিয়তের বিশুদ্ধতা ও আত্মশুদ্ধি
যেহেতু নির্দিষ্ট তারিখ জানা নেই, তাই মানুষ একাধিক রাত ইবাদত করে, যা আত্মশুদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করে এবং খাঁটি নিয়তের সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে।
গাফিলতি থেকে বিরত রাখা
শবে কদর নির্দিষ্ট না থাকায় মুমিনরা বেশি সতর্ক থাকে এবং পুরো রমজানজুড়ে ইবাদত করতে অনুপ্রাণিত হয়। এটি তাদের আল্লাহর স্মরণে রাখে এবং গুনাহ থেকে দূরে থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
নবী (সা.)-এর শিক্ষা অনুসরণ
হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) শবে কদরের নির্দিষ্ট দিন জানতেন, কিন্তু পরে আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি তা ভুলে যান (বুখারি, হাদিস: ২০১৭)। এতে বোঝা যায় যে, এটি আল্লাহর এক বিশেষ হিকমত, যাতে উম্মত অধিক ইবাদতের মাধ্যমে উপকৃত হয়।
গোপন রহমতের শিক্ষা
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর বিশেষ রহমত ও বরকতগুলো অনেক সময় গোপন রাখেন, যেমন—মৃত্যুর সময়, দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত ইত্যাদি। শবে কদরও এর একটি উদাহরণ, যাতে মানুষ ইবাদতে উদ্যমী থাকে।
শবে কদরের নামাজ আদায়ের নিয়ম
শবে কদর ইসলাম ধর্মের একটি মহিমান্বিত রাত, যা পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে পড়ে (বিশেষ করে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাতে)। এই রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ রহমত ও ক্ষমা লাভ করা যায়।
শবে কদরের বিশেষ নামাজ আদায়ের পদ্ধতি:
১. দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়া:
শবে কদরের রাতে দুই রাকাত করে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা উত্তম।
প্রথম রাকাতে:
সুরা ফাতিহা পড়ার পর যেকোনো একটি ছোট সূরা (যেমন সূরা ইখলাস, সূরা কাওসার) পড়তে পারেন।
দ্বিতীয় রাকাতে:
সুরা ফাতিহা পড়ার পর যেকোনো ছোট সূরা পড়তে পারেন।দীর্ঘ ৮, ১০ বা ১২ রাকাত নফল নামাজ:
কেউ চাইলে ৮, ১০ বা ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।
প্রতিটি দুই রাকাত করে পড়তে হবে এবং নামাজে একাগ্রতা ও বিনম্রতা বজায় রাখা উচিত। ১০০ রাকাত নফল নামাজ (বিশেষ ইবাদত):
কেউ চাইলে ১০০ রাকাত নফল নামাজ পড়তে পারেন (প্রতি দুই রাকাতে সালাম ফেরাতে হয়)।
সালাতুত তাসবিহ পড়া:
শবে কদরে সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায় করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
তাহাজ্জুদ নামাজ:
এই রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
২, ৪, ৬, ৮ বা ১২ রাকাত পর্যন্ত পড়া যেতে পারে।
লাইলাতুল কদর কি?
লাইলাতুল কদর (لَيْلَةُ ٱلْقَدْرِ) হলো ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র ও মহিমান্বিত রাত। এটি রমজান মাসের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে বিশেষ করে ২৭তম রাতে অধিক গুরুত্বের সাথে পালন করা হয়।
হাজার মাসের চেয়ে উত্তম:
কুরআনের সূরা আল-কদর (৯৭:৩) অনুযায়ী, “লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।” অর্থাৎ, এই রাতে ইবাদত করলে ৮৩ বছরের বেশি সময় ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।
পবিত্র কুরআন নাজিলের রাত:
এই রাতে মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল–কুরআন নাজিল করেছেন, যা মানবজাতির জন্য হেদায়েতের আলো।
ফেরেশতাদের আগমন:
এই রাতে অসংখ্য ফেরেশতা পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং আল্লাহর বান্দাদের জন্য রহমত ও শান্তি বর্ষণ করেন (সূরা কদর, ৯৭:৪-৫)।
গুনাহ মাফের সুযোগ:
সহিহ হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।“ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
লাইলাতুল কদর কখন হয়?
নির্দিষ্ট করে কোনো দিন উল্লেখ করা হয়নি, তবে হাদিসে বলা হয়েছে, রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে এটি লুকিয়ে আছে। তাই ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে বেশি করে ইবাদত করা উচিত।
লাইলাতুল কদরে করণীয় ইবাদত:
- নফল নামাজ পড়া
- কুরআন তিলাওয়াত করা
- দোয়া ও ইস্তেগফার করা
- সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও দরুদ শরিফ পড়া
- গরিব–দুঃখীদের সাহায্য করা
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই রাতে বেশি বেশি করে এই দোয়াটি পড়ার উপদেশ দিয়েছেন:
اللهم إنك عفو كريم تحب العفو فاعف عني
(উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারিম, তুহিব্বুল আফওয়া ফা‘ফু আন্নি)
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাসো, অতএব আমাকে ক্ষমা করে দাও। (তিরমিজি: ৩৫১৩)
লাইলাতুল কদর কোন রাতে?
লাইলাতুল কদর রমজান মাসের শেষ দশ রাতের কোনো এক বেজোড় রাতে হয়ে থাকে, বিশেষ করে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ বা ২৯তম রাতে। তবে ইসলামী ঐতিহ্য অনুযায়ী, ২৭তম রাতকেই লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাব্য রাত হিসেবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো।“ (বুখারি, মুসলিম)
লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব:
- এটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম (৯৭:৩)
- এই রাতে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে (৯৭:১)
- ফেরেশতারা পৃথিবীতে নেমে আসেন (৯৭:৪)
- এটি শান্তি ও কল্যাণে পরিপূর্ণ রাত (৯৭:৫)
তাই শেষ দশ রাতের প্রতিটি বেজোড় রাতে বেশি বেশি ইবাদত করা উচিত, যাতে লাইলাতুল কদরের বরকত লাভ করা যায়।
প্রশ্ন-উত্তর
শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ কী?
উত্তর: শবে কদরের নির্দিষ্ট তারিখ সম্পর্কে সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি, তবে এটি সাধারণত রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটি।
শবে কদরের রাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল কী?
উত্তর: এই রাতে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও ইস্তেগফার এবং সদকা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শবে কদরের রাতে কোন দোয়াটি বেশি পড়তে হবে?
উত্তর: “اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي” (হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন) দোয়াটি বেশি পড়তে হবে।
উপসংহার
শবে কদর মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। এটি ইবাদত, দোয়া, এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক অনন্য সুযোগ। তাই আমাদের উচিত, এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে জানা এবং যথাযথভাবে ইবাদত করা, যাতে আমরা আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভ করতে পারি।
গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন
👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔