মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করার উপায়

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা –সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক বিকাশ নগদ রকেট শিওর ক্যাশকে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ সরকারি ভাতা বা অনুদান এই মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা গুলোর মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির আওতায় সরকারি অনুদান বা ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরকারি সুবিধাভোগীদের প্রদান করা হচ্ছে।

উক্ত মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা গুলো র ১৩৮৪৫ জন সরকারি সুবিধাভোগী বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধী জনগণের কাছে সরাসরি এই গুলো পৌঁছে দেবে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পূর্ণ হলে দেশে সরাসরি সরকারি ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ভাতার টাকা প্রদান করা হবে। এর ফলে ভাতা গ্রহণকারীদের কে ব্যাংকে গিয়ে কষ্ট করে আর ভাতা গ্রহণ করতে হবে না।

পূর্বে সরকারি ভাতা তুলতে ব্যাংকে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভাতার টাকা তুলতে হতো কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিকটবর্তী এজেন্টের কাছ থেকে সরকারি ভাতা তোলা যায়।সরকারি ভাতা বা প্রতিবন্ধী ভাতা কিভাবে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে তোলা হয় আজকে সেই বিষয়ে আলোচনা করব। এই বিষয়ে জানতে হলে অবশ্যই শেষ পর্যন্ত আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের পড়তে হবে।

মোবাইল ব্যাংকিং কি

মোবাইল ব্যাংকিং হলো মোবাইল বা স্মার্টফোন দ্বারা বা ট্যাবলেটের মাধ্যমে গ্রাহক যে সকল আর্থিক লেনদেনের সাথে জড়িত কার্যক্রম গুলো পরিচালনা করে তাকে বোঝায়। ধরন আপনি ঘরে বসে ব্যালেন্স চেক করতে চান বিল পেমেন্ট করতে চান কিংবা টাকা ট্রান্সফার করতে চান এই কাজগুলো আপনি ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন।

ঘরে বসে নিজের মোবাইল থেকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টাকা লেনদেন করার মাধ্যম হলো মোবাইল ব্যাংকিং। অর্থাৎ কোন মোবাইল অথবা ট্যাবলেট থেকে যখন কোন মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারকারী গ্রাহক ইন্টারনেটের সাহায্যে অর্থের লেনদেন করবে তখন সেই মাধ্যমকেই বলা হয় মোবাইল ব্যাংকিং।মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা হচ্ছে এমন একটি পরিষেবা যা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত গ্রাহকদের স্মার্টফোন অথবা ফিচার ফোন বা ট্যাবলেট এর মত মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে দুর নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করে।

অর্থাৎ একজন গ্রাহক মোবাইল এর মাধ্যমে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। মোবাইল ব্যাংকিং আর্থিক লেনদেনকে এতটাই সহজ করে দিয়েছে যে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে ব্যাংকিং এর বিভিন্ন রকম কাজ করার জন্য এক গ্রাহককে ব্যাংকে যেতে হয় না তিনি ঘরে বসে তার স্মার্টফোনের মাধ্যমে তা করতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা বেশি থাকায় দিন দিন এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মোবাইল ব্যাংকিং এ নতুন নতুন কার্যক্রম যোগ হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবা ২৪ ঘন্টা যাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

প্রতিবন্ধী ভাতা কি

শারীরিক ও মানসিকভাবে যারা অস্বাভাবিক তাদের জন্য সরকার একটি প্রশংসনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে যাকে বলা হয় প্রতিবন্ধী ভাতা। প্রতিবন্ধী ভাতার মূল অর্থ হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের কাছে কিছু অনুদান পৌঁছে দেওয়া। এই অনুদানের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীরা সামান্য কিছু হলেও উপকৃত হতে পারে। বাংলাদেশ সরকার শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতায়ে নয় বয়স্ক ভাতা বিধবা ভাতা আরো অনেক ধরনের সমাজ সেবামূলক কার্যক্রম চালু রেখেছে। সরকারের এই উদ্যোগ মূলত সমাজের সচল অবস্থা বজায় রাখার জন্য। সমাজের অসহায় মানুষগুলোর থেকে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সাধন করার জন্য।

একটি প্রতিবন্ধীর পরিবার একটি অসহায় পরিবার। সরকারি অনুদানে যাতে এই পরিবারের কিছুটা হলেও সাহায্য হয় সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সরকার এই কার্যক্রম বজায় রেখেছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা

পূর্বে প্রতিবন্ধী ভাতা- বয়স্ক ভাতা- কিংবা বিধবা ভাতা অর্থাৎ সরকারি অনুদানের টাকা তুলতে অনেক সময় ধরে নির্দিষ্ট কোন স্থানে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা সংগ্রহ করতে হতো যার ছিল গ্রাহকের জন্য কষ্টদায়ক। কিন্তু বর্তমানে সরকারি সব ধরনের ভাতা মোবাইলে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করার ব্যবস্থা করা হয়। বিকাশ নগদ রকেট শিওর ক্যাশ এর মাধ্যমে বর্তমানে সরকারি ভাতা প্রদান করা হয়।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরকারি ভাতার টাকা তুলতে অবশ্যই ভাতা গ্রহণকারী ব্যক্তির মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট থাকতে হবে।যেহেতু নগদ বিকাশ রকেট শিওর ক্যাশ এর মাধ্যমে ভাতার টাকা প্রদান করা হয় সেহেতু এই মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট গুলোর যেকোনোটি ভাতা গ্রহণকারীর থাকা দরকার। সরকারি ভাতা যখন অফিশিয়ালি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দিয়ে দেওয়া হবে তখন ভাতা গ্রহণকারীর মোবাইল একাউন্টে টাকাযুক্ত হবে।

নিকটবর্তী কোন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট এর কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে গিয়ে সে টাকা তুলতে পারবে।

প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা মোবাইলে দেখার নিয়ম

প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে দেখতে হলে বিকাশ নগদ শিওর ক্যাশ অথবা রকেট একাউন্ট থাকতে হবে।

নগদের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা

ধাপ-১:*১৬৭#নগদের এই কোডটি ডায়াল করে মাই নগদ অপশনটি সিলেক্ট করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ-২: এবার ব্যালান্স ইনকোয়ারি অপশন টি ক্লিক করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ধাপ-৩: আপনার অ্যাকাউন্ট এর পিন কোডটি লিখে সেন্ড বাটনের ক্লিক করলে আপনার ভাতার টাকা দেখতে পারবেন।

বিকাশের মাধ্যমে ভাতার টাকা

নগদের মতোই বিকাশের মাধ্যমে একই নিয়মে আপনি ভাতার টাকা দেখতে পারবেন। তবুও আপনাদের সুবিধার্থে প্রসেসটি তুলে ধরা হলো-

ধাপ-১: *২৪৭# বিকাশের কোডটি ডায়াল করে সেন্ড বাটন এ ক্লিক করুন।

ধাপ-২: এরপর আপনার সামনে কয়েকটি অপশনের ইন্টারফেস আসবে। সেখান থেকে আপনি মাই বিকাশ অপশনটি সিলেক্ট করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ-৩: এই পর্যায়ে আপনার সামনে আরও একটি ইন্টারফেস আসবে সেখান থেকে  চেক ব্যালেন্স অপশনে ক্লিক করে সেন্ড বাটনে যান।

ধিপ-৪: এই পর্যায়ে আপনার পিন কোডটি দিন আপনি আপনার ব্যালেন্স টি দেখতে পাবেন।

রকেটের মাধ্যমে ভাতার টাকা

ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট অথবা রকেটের মাধ্যমে ভাতার টাকার চেক করতে যা করতে হবে-

ধাপ-১: *৩২২# রকেটের কোডটি ডায়াল করুন।

ধাপ-২:রকেটের কোডটি ডায়াল করার পর আপনার সামনে একটি ইন্টারফেস আসবে সেখানে আপনি মাই অ্যাকাউন্ট অপশন টি লিখে সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।

ধাস-৩: এই পর্যায়ে আপনি আপনার ৪ ডিজিটের পিন কোডটি বসান এবং সেন্ড বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ-৪:আপনি আপনার পাসওয়ার্ডটি দেওয়ার পর সেন্ড বাটনে ক্লিক করলে আপনার ভাতার টাকা দেখতে পাবেন।

গুগল নিউজে SS IT BARI সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের লক্ষ্য উদ্দেশ্য

প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গুলো হলো-

১) বাংলাদেশের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করে তোলা।

২) প্রতিবন্ধীদের ওপর থেকে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনা।

৩) বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের পরিবারকে সহযোগিতা করা।

৪) প্রতিবন্ধীদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা।

৫) অবহেলিত প্রতিবন্ধীদের রক্ষা করা।

প্রতিবন্ধীরা সমাজে সবসময়ই থাকে অবহেলিত। তাদের পরিবারকে সবসময় অবহেলার শিকার হতে হয়। তাই এই প্রতিবন্ধী এবং তাদের পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতা বা সরকারি অনুদানের পাশাপাশি আমাদের সমাজে সচ্ছল ব্যক্তিবর্গের উচিত এসব প্রতিবন্ধী এবং তাদের পরিবারের পাশে থেকে সরকারকে একটি সুষ্ঠু দেশ গঠনে সহায়তা করা।

এছাড়াও এসব পরিবারের ওপর থেকে সামাজিক কুদৃষ্টির পরিবর্তন সাধন করা। সমাজ শুধু সরকারের নয় মূলত সমাজ আমাদের তাই এই সমাজের রূপের পরিবর্তন সাধন করা আমাদের প্রতিটি নাগরিকেরই কর্তব্য।

সচরাচর জিজ্ঞাসা

বাংলাদেশে কতজন প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপ্ত রয়েছে?

উত্তর: বর্তমানে বাংলাদেশে ২০৪৪০ জন প্রতিবন্ধী সরকারি ভাতা ভোগী রয়েছে।

বাংলাদেশের কয়টি বিভাগে এই কর্মসূচি চালু রয়েছে?

উত্তর: বাংলাদেশের আটটি বিভাগের আট ইউনিয়নের মধ্য প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি চালু রয়েছে।

প্রতিবন্ধী ভাতা কোন কোন মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দেওয়া হয়?

উত্তর: প্রতিবন্ধী ভাতা বা যে কোন সরকারি ভাতা বিকাশ, নগদ, রকেট, শিওর ক্যাশ এর মাধ্যমে ভাতা ভোগীদের প্রদান করা হয়।

শেষ কথা

বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলটি  মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা তোলা হয় সেই সম্পর্কে লেখা। আশা করছি আজকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এই বিষয়ে বুঝতে পেরেছেন। যদি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের সামান্য উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে আমাদের ওয়েবসাইটটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।আজকের মত বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

👉🙏লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

✅আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 🤔

আপনার জন্য-

মোবাইল ব্যাংকিং কয়টি ও কি কি

মোবাইল ব্যাংকিং বলতে কি বুঝ ও মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা

উপায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কি সুবিধা পাবেন?

উপায় মোবাইল ব্যাংকিং কোড কত

উপায় অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ পদ্ধতি

নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম

উপায় ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি খরচ কত

আমাদের আরো সেবা সমূহ :-

↘️আমার ভিডিওগুলো পাবেন যে সকল মাধ্যমে 👇

➡️YouTube চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Facebook পেজ ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️Instagram চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️WhatsApp চ্যানেল ফলো করে রাখুন – এখানে ক্লিক করুন

➡️Treads চ্যানেল ফলো করে রাখুন –এখানে ক্লিক করুন

➡️TikTok চ্যানেল ফলো করে রাখুন-এখানে ক্লিক করুন

SS IT BARI-ভালোবাসার টেক ব্লগ টিম